ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

দুর্গোৎসবের নৃত্যনাট্য ‘অভয়া মঙ্গলা মা আনন্দময়ী’

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১০ অক্টোবর ২০১৮

দুর্গোৎসবের নৃত্যনাট্য ‘অভয়া মঙ্গলা মা আনন্দময়ী’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দুর্গতিনাশিনীর আগমনী বারতায় ছড়িয়েছে উৎসবের রেশ। সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা এই বাংলায় আসছেন দেবী দুর্গা। বঙ্গদেশে বইছে তাঁর প্রাণের স্পন্দন। শরতের আকাশে জাগরিত হচ্ছে জ্যোতির্ময়ী। অভয়া মঙ্গলরূপী দেবী বরণে শহরজুড়ে চলছে নানা আয়োজন। সেই সুবাদে সোমবার শরত সন্ধ্যায় নৃত্যের ছন্দে স্বাগত জানানো হলে দেবী দুর্গাকে। জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলো ‘অভয়া মঙ্গলা মা আনন্দময়ী’ শীর্ষক নৃত্যনাট্য। দুর্গোৎসব উদ্যাপনের অংশ হিসেবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতি। পরিবেশনা শুরুর আগে ছিল আলোচনা পর্ব। এতে প্রধান অতিথি বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডেইলি এশিয়ান এজের সম্পাদকীয় পর্ষদের চেয়ারম্যান শোয়েব চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি ড. এ কে আজাদ চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুবীর কুশারী। গওহর রিজভী বলেন, বারো মাসের তেরো পার্বণের আবহমান বাংলার অন্যতম শারদীয় উৎসব। এই সময়ে যখনই পূজা আসে তখনই আমাদের বাংলার আকাশে এক অনাবিল আনন্দের আবহ ছড়িয়ে পড়ে। সেই আবহে মেতে ওঠে পুরো বাংলাদেশ। শারদ আয়োজনেও সেই আবহ বিরজামান। বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক অত্যন্ত বন্ধুসুলভ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সম্প্রতি আসামে যেসব নাগরিকের নাগরিকত্ব বাতিল করেছে সেখানকার সরকার, তা নিয়ে চিন্তার কোন কারণ নেই। কারণ বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বসুলভ সম্পর্ক এখন এতটাই ভাল যে, সে সম্পর্ক ভেঙ্গে নতুন কোন সঙ্কট তৈরি হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। আলোচনা শেষে ছিল ঘণ্টাব্যাপীর বর্ণিল নত্যনাট্য পরিবেশনা। গাওয়া হওয়া বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সঙ্গীত এবং মৈত্রী সমিতির ভাবনা সঙ্গীত। মুদ্রার অভিব্যক্তির অনবদ্য প্রকাশে দেবী দুর্গার রূপটি মেলে ধরেন শামীম আরা নীপা। নীলাম্বর চরিত্রের রূপায়ন করেন শিবলী মোহাম্মদ। কলিঙ্গরাজরূপে মঞ্চে আসেন আবুল হাসান ভূঁইয়া। এছাড়া নৃত্যনাট্যে শিব, পদ্মাবতী, হুলোরা, কালী ও মায়ার চরিত্রে প্রকাশিত হন আইরিন পারভীন, শাম্মী ইয়াসমিন, ফারজানা ইয়াসমিন ও আয়শা সিদ্দিকা এলি। পরিকল্পনার পাশাপাশি নৃত্যনাট্যটি পরিচালনা করেন শামীম আরা নীপা। গঙ্গা-যমুনা উৎসবে ‘ঠিকানা’ নাটকের উদ্বোধনী মঞ্চায়ন ॥ মুক্তিযুদ্ধনির্ভর আরেকটি নতুন নাটক যুক্ত হলো ঢাকার মঞ্চে। ঠিকানা নামের প্রযোজনাটি মঞ্চে এনেছে লোক নাট্যদল (বনানী)। শিল্পকলা একাডেমিতে চলমান গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসবের পঞ্চম দিন মঙ্গলবার নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়। উৎপল দত্তের রচনায় নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন ড. প্রণবানন্দ চক্রবর্ত্তী। পশ্চিমবঙ্গের প্রবাদপ্রতিম নাট্যব্যক্তিত্ব উৎপল দত্ত ‘ঠিকানা’ নাটকটি রচনা করেন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২ আগস্ট নাটকটি কলকাতায় মঞ্চস্থ হয়। মূলত, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় রচিত এ নাটকটি বাঙালীর আত্মত্যাগের একটি মূল্যবান উপাখ্যান। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয় নাটকটি। কাহিনীর শুরুতেই উঠে আসে ২৫ মার্চ কালরাতের ভয়াবহতা। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানজুড়েই চলে এ ভয়াবহতা। সেই ভয়াবহতা ছুঁয়েছিল ছোট্ট শহরেও। সেখানেও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছিল পাকিস্তানি সৈন্যরা। অন্যদিকে একটি ছোট্ট রেস্টুরেন্টে চালান একসময়ের কারখানা শ্রমিক বৃদ্ধ রশিদা নানী। তিনি রেস্টুরেন্ট ব্যবসার আড়ালে মূলত মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যার জন্য ডিনামাইট আসে মির্জাপুরের ঠিকানায়। লোক মারফত সে ঠিকানা রশিদার কাছে আসে সাংকেতিকভাবে। রেস্টুরেন্টে বসে চা খাচ্ছিলেন শিল্পী শাহাবুদ্দিন ও তার বন্ধু মনস্তত্ত্ববিদ ডাক্তার আনিসুজ্জামান, যাত্রাশিল্পী যামিনি সেন ও তার বন্ধু ব্যাংকের কেরানী হাশমৎ আলী। হঠাৎ করে চা খাওয়ার জন্য সেখানে আসে টহলরত একদল সৈন্য। প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে নিখোঁজ হন ঐ সৈন্যদলের প্রধান লে. বোখারি। রেস্টুরেন্টের চারজন খদ্দের ও রশিদা খাতুনকে লে. বোখারিকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়। চলে জেরা আর টর্চার। ঘোষণা করা হয় বোখারির হত্যাকারী আত্মসমর্পণ না করলে রশিদা খাতুনসহ চারজন খদ্দেরকে ফায়ারিং স্কোয়াডে গুলি করে হত্যা করা হবে। এভাবেই এগিয়ে যায় নাটকটির কাহিনী। ঠিকানা নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সামসাদ বেগম, সোহেল মাসুদ, মিনহাজুল হুদা দীপ, আরিফ আহম্মেদ, ইউজিন গোমেজ, তনয় মজুমদার, আবদুল্লাহ আল হারুন, ড. প্রণবানন্দ চক্রবর্ত্তী, যামিনী সেন, হাফিজুর রহমান প্রমুখ। জেমকন সাহিত্য পুরস্কারের জন্য ৫ গ্রন্থ মনোনীত ॥ ২০১৮ সালের জেমকন সাহিত্য পুরস্কারেরর জন্য মনোনীত হয়েছে পাঁচটি গ্রন্থ। প্রাথমিকভাবে বিচারকদের বাছাইকৃত বইগুলোকে সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করেছে এর উদ্যোক্তারা। সংক্ষিপ্ত তালিকায় নির্বাচিত বইগুলো হলোÑ ইমদাদুল হক মিলনের ‘নয়মাস’, শাহাদুজ্জামানের ‘একজন কমলালেবু’, মহীবুল আজিজের ‘তপন শীল ও তার বিয়ে প্রকল্প’, প্রশান্ত মৃধার ‘ডুগডুগির আসর’ এবং রবিউল ইসলামের ‘তথাগত কোথায় থাকেন’।
×