ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আওয়ামী লীগ আজ সতর্ক অবস্থানে থাকবে

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ১০ অক্টোবর ২০১৮

আওয়ামী লীগ আজ সতর্ক অবস্থানে থাকবে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশেই আজ বুধবার সতর্ক অবস্থানে থাকবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। ভয়াল-বীভৎস ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কোন ধরনের নাশকতা বা সহিংসতার চেষ্টা করা হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি দলীয়ভাবেও যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজপথে অবস্থান নেবে দলটির নেতাকর্মীরা। রাজধানী ঢাকা মহানগরীর প্রতিটি ওয়ার্ড, থানা, পাড়া-মহল্লায় নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থান থাকবে। আদালতের রায় ঘোষণার পর পরিস্থিতি বুঝে পাল্টা প্রতিরোধের প্রস্তুতিও রয়েছে দলটির। তবে নিজেদের পক্ষ থেকে কোন ধরনের উস্কানিতে পা না দিতেও নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে দলটির একাধিক সিনিয়র নেতা জানান, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত জোট যদি কোন ধরনের সহিংসতা কিংবা নাশকতামূলক কর্মকা-ের অপচেষ্টা করা হয় তার বিরুদ্ধে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। আজ থেকে আগামী তিনদিন ঢাকায় দলের নেতাকর্মীরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকবে। রায়কে কেন্দ্র করে কাউকে দেশকে অস্থিতিশীল করার কোনই সুযোগ দেবে না আওয়ামী লীগ। এ প্রসঙ্গে মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায়কে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে। রায় নিয়ে বিএনপি সহিংসতা, নাশকতার চেষ্টা করলে ছাড় দেয়া হবে না। বিএনপি এটাকে নিয়ে যদি কোন সমস্যা তৈরি করতে চায়, যদি সহিংস নাশকতা করতে চায়, সেটাকে কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না। আমরা জানি এই মামলার রায় নিয়ে তারা এখন থেকে বড় ধরনের নাশকতা ও সহিংসতার পরিকল্পনা নিচ্ছে। বিএনপির প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, তারা ভুলে গেছে এটা ২০১৪ সাল নয়, এখন ২০১৮ সাল। যে কোন অপচেষ্টা হলে জনগণ প্রতিরোধ করবে, আমাদের লাগবে না। সহিংসতার উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতিতে যা করার দরকার হয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাই করবে। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, বহুল আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণার বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গেই দেখা হচ্ছে। রায়কে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত জোট কোন ধরনের অশুভ চিন্তা নিয়ে মাঠে নামলে রাজনৈতিকভাবে তাৎক্ষণিকভাবে মোকাবেলার প্রস্তুতিও দলের রয়েছে। ঢাকাসহ সারাদেশের তৃণমূলের নেতাদের রায়কে কেন্দ্র করে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে। তবে কেন্দ্র থেকে আনুষ্ঠানিক কোন নির্দেশনা দেয়া হয়নি। দেশের তিন শ’ আসনের দলের মন্ত্রী-এমপির ও নেতারা স্ব স্ব উদ্যোগেই আজ থেকে আগামী তিনদিন রাজপথে সতর্ক অবস্থানে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের উত্তর ও দক্ষিণ শাখার নেতারা জানান, একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই বঙ্গবন্ধু এভিনিউর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং গুলশানের কার্যালয়ে মহানগর নেতারা নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে অবস্থান নেবে। থানা ও ওয়ার্ডের নেতারাও যার যার অবস্থানে সতর্কাবস্থায় থাকবে। পরে অবস্থা বুঝে তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। দীর্ঘ ১৪ বছর ৪৮ দিন পর দেশবাসীর অপেক্ষার পালা আজ বুধবার শেষ হচ্ছে। এই রায়কে ঘিরে কোন ধরনের নৈরাজ্য-নাশকতা যেন সৃষ্টি না হয় সেজন্য সরকার থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে। তাদের পাশাপাশি সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও। সে কারণে আজ বুধবার ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাজপথে সতর্ক অবস্থান নেবে সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সকাল থেকে ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু এভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা অবস্থান নিয়ে সবকিছু মনিটরিং এবং প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দিতে পারেন বলেও জানা গেছে। ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রায়কে কেন্দ্র করে যুবলীগের ২৪টি সাংগঠনিক থানা, ৭৫টি ওয়ার্ড ও ৪৫০টি ইউনিটের নেতাকর্মীরা আজ ভোর থেকেই রাজপথে সক্রিয় থাকবে। রায় ঘোষণা থেকে রাত পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোটের গতিবিধি লক্ষ্য রেখে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবে সংগঠনটি। ভোর থেকেই নেতাকর্মীরা পাড়া-মহল্লা, বাসস্ট্যান্ড, গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও মোড়ে মোড়ে সতর্ক অবস্থান নেবেন যুবলীগের নেতাকর্মীরা। গুলিস্থানে খোলা হবে মনিটরিং সেল। এই সেলের মূল দায়িত্বে থাকবেন যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী স¤্রাট। নেতারা জানান, বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা যেখানেই নাশকতা-সন্ত্রাস করার চেষ্টা করবে সেখানেই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী স¤্রাট বলেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ২৪টি সাংগঠনিক থানা এবং ৭৫টি ওয়ার্ড কমিটি রয়েছে। প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের অধীনে ৬টি করে ইউনিট কমিটি। বুধবার বর্বরোচিত ঘৃণিত একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের দিন ভোর থেকেই যুবলীগের প্রতিটি নেতাকর্মী রাজপথে সক্রিয় সতর্ক পাহারায় থাকবে। রায় ঘোষণার পর বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা যদি নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করে তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলব। কোন অপরাধী গোষ্ঠী বা সন্ত্রাসীকে নৈরাজ্য করার সৃষ্টির সুযোগ দেব না। ভোর থেকেই নেতাকর্মীরা রাজপথে, পাড়া-মহল্লায় সক্রিয় থাকবে। ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে একটি মনিটরিং সেল গঠন করা হবে। যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ মনিটরিং করবেন। রায় পরবর্তী অবস্থান বুঝে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেবেন তারা।
×