ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এবার ধেয়ে আসছে ‘তিতলি’

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১০ অক্টোবর ২০১৮

এবার ধেয়ে আসছে ‘তিতলি’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এবার আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেল এর নাম দিয়েছে ‘তিতলি’। যার অর্থ প্রজাপতি। এটি আগামী বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে দেশের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে। তবে এর গতিপথ এখনও খুলনা সমুদ্র বন্দর, উড়িষা এবং অন্ধপ্রদেশের দিকে রয়েছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। দেশের সমুদ্র বন্দরসমূহকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামছুউদ্দীন আহমেদ বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’ ভারতের উড়িষা ও বাংলাদেশে খুলনার দিকেই ধেয়ে আসছে। এটা ১০ অক্টোবর পরিয়ে ১১ অক্টোবর মধ্যরাতের দিকে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে আসতে পারে। তবে এটি শক্তির মাত্রা কেমন হবে সে বিষয়ে এখনই কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর তৎসংলগ্ন পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থারত গভীর নিম্নচাপটি পশ্চিম দিকে সামান্য অগ্রসর হয়ে এবং ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’তে পরিণত হয়েছে। এটি মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৯৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৯১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে, মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৮৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৮৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর ও উত্তর পশ্চিমে অগ্রসর হতে পারে। আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে ৪৫ কিলোমিটারের বাতাসের একটানা গতিবেগ সর্বোচ্চ ৬২ কিলোমিটার। যা দমকা হওয়া অথবা ঝড়োহাওয়া আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকট সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। ফলে দেশের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা এবং পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। তারা জানায়, এই অবস্থায় উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারওকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। এদিকে চট্টগ্রাম অফিস জানিয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মঙ্গলবার ভোর থেকেই চট্টগ্রামে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সারাদিন আকাশ ছিল মেঘলা, সূর্যের দেখা মেলেনি। শরতের শেষদিকে আকস্মিক এই বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরীর নিচু এলাকাগুলোতে পানি জমে যায়। জনজীবনে কিছুটা দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। শহরের হালিশহর, আগ্রাবাদ সিডিএ, মুরাদপুর, কার্পাসগোলা, বাদুড়তলা, শুলকবহরসহ নিচু এলাকাগুলোতে সাময়িক জলজটের সৃষ্টি হয়। দুপুরের দিকে বৃষ্টি কমে এলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়। ভোর থেকে বৃষ্টিপাতের কারণে স্বাভাবিক জনজীবনে ভোগান্তির সৃষ্টি করে। স্কুল, কলেজের অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারেনি। অফিসযাত্রীদেরও কর্মস্থলে যাওয়ার পথে দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত চট্টগ্রামে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৮৬ মিলিমিটার।
×