বিশেষ প্রতিনিধি ॥ একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়কে ঘিরে পুরান ঢাকার কারাগারের মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালত ঘিরে থাকছে তিন স্তরের নিñিদ্র নিরাপত্তা। পাশাপাশি রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে পুলিশ, র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের রাখা হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায়। প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিজিবি ও র্যাবের হেলিকপ্টার। দীর্ঘ ১৪ বছর পর বুধবার একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণা করতে যাচ্ছেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন। আদালতের প্রবেশ পথে চলবে তল্লাশি, বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন এলাকা চিহ্নিত করে সেখানে পুলিশ সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবে। শহরজুড়ে থাকবে গোয়েন্দা নজরদারি। মুখে নাশকতা, নৈরাজ্য বা নিরাপত্তা বিঘিœত হওয়ার আশঙ্কা নেই বলা হলেও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায় ঘিরে রাজধানীসহ সারাদেশের নিরাপত্তা জোরদার করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রায়কে ঘিরে যাতে কোন ধরনের নাশকতা না ঘটে সে জন্য প্রত্যেক জেলা ও মহানগর পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের সতর্ক অবস্থায় মাঠে রাখা হয়েছে। তবে রায়ের দিন জঙ্গী কিংবা সন্ত্রাসী হামলার কোন শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণার আগের দিন মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে গাড়িতে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। এছাড়া ঢাকাসহ সারাদেশে সতর্ক অবস্থায় মাঠে আছে র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সদস্যরা। রায় ঘোষণার দিন আসামি ও ঢাকাবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থে আদালতের চারপাশের সড়কে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের বিশেষ আদালতের আশে পাশে বসানো চেকপোস্টের তল্লাশি মোকাবেলা করেই সংশ্লিষ্ট আদালতের আইনজীবী, আসামি, পাসধারীদের যেতে হবে আদালতের ভেতরে।
গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, যেসব আসামির বিরুদ্ধে রায় দেয়া হবে ওইসব পরিবারের সদস্যরা বা তাদের অনুসারীরা কোথাও কিছু ঘটায় কিনা সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এই রায়কে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর কিছু ঘটতে পারে সম্ভাব্য এমন কিছু এলাকা চিহ্নিত করে সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এই মামলার সঙ্গে বিএনপির সিনিয়র পর্যায়ের নেতারা জড়িত সে কারণে নয়াপল্টনসহ বিএনপি অধ্যুষিত কয়েকটি এলাকায় বিশেষ নজরদারি থাকবে। রায়ের পর কেউ যাতে সড়কে নেমে না যান চলাচলে বিঘ্ন না ঘটাতে পারে, নাশকতা করতে না পারে সেজন্য গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়কে থাকবে অতিরিক্ত পুলিশ। নাশকতা হতে পারে এমন সম্ভাব্য স্পটগুলোতে আগে থেকেই পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা রায়কে ঘিরে যে কোন ধরনের নাশকতা ঠেকাতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরই মধ্যে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। ব্যবস্থা করা হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তার।
সব মিলে এদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় পাঁচ হাজার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে। আবার যেহেতু বিএনপির কয়েকজন নেতা আসামি তাই দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় নয়াপল্টনসহ বিএনপি অধ্যুষিত কয়েকটি এলাকায় বিশেষ নজরদারি থাকবে। রায়ের পর কেউ যাতে সড়কে নেমে যান চলাচলে বিঘœ না ঘটাতে পারে, নাশকতা করতে না পারে সেজন্য গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়কে থাকবে অতিরিক্ত পুলিশ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, দেশের জনগণ এ মামলার রায়ের জন্য অধীর আগ্রহে রয়েছেন। এ রায়ের মাধ্যমে জাতি একটি কলঙ্ক থেকে মুক্ত হবে। ওই নৃশংস গ্রেনেড হামলার বিচার মানুষ দেখতে চায়। তাই ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলার রায়কে কেন্দ্র করে দেশে কোন বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা নেই।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, এই রায়কে ঘিরে কোন ধরনের হুমকি নেই। তার পরও তারা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন। ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে বসানো এই আদালতের আশপাশে বসানো হবে তল্লাশি চৌকি। রাজধানী জুড়ে থাকবে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা। সাদা পোশাকেও দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ সদস্যরা। মামলার রায়কে কেন্দ্র করে শঙ্কিত হবার কোন কারণ নেই। এই রায়কে কেন্দ্র করে কোন স্বার্থান্বেষী মহল সহিংসতার চেষ্টা করলে তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে। নিরাপত্তা বিঘিœত হওয়ার কোন সুযোগ নেই। এটা আদালতের একটা স্বাভাবিক কার্যক্রমের অংশ।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: