ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বদলে যাচ্ছে গফরগাঁও

হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ৯ অক্টোবর ২০১৮

হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ

শেখ আব্দুল আওয়াল, গফরগাঁও, ময়মনসিংহ ॥ সরকারের পৌনে ৫ বছরে প্রায় হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকা-ে পাল্টে যাচ্ছে গফরগাঁও উপজেলা। চরাঞ্চল ও বিলসহ দুর্গম এলাকাগুলোতে তৈরি হয়েছে পাকা সড়ক। নদী, খাল, বিলের ওপর নির্মিত হয়েছে সেতু, ব্রিজ, কালভার্ট। গ্রামের পর গ্রাম বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক, খাদ্যশস্য উৎপাদন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়নে অর্জিত হয়েছে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। ময়মনসিংহ-১০, গফরগাঁও আসনের সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেলের প্রচেষ্টায় এসব উন্নয়ন কর্মকা- এগিয়ে যাচ্ছে। চারদিকে ব্রহ্মপুত্র নদ পরিবেষ্টিত উপজেলার চরাঞ্চলসহ সর্বত্রই পৌঁছে গেছে বিদ্যুত। সন্ধ্যার পরই আলোকিত হয়ে গ্রামের প্রতিটি ঘর-দুয়ার। গত ৫ বছরে পিডিবি ১৩.৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১১২ কিলোমিটার নতুন লাইন নির্মাণ ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০৭ কিলোমিটার বিদ্যুত লাইন আপগ্রেডেশন করেছে। ১১৫টি নতুন ট্রান্সফরমার স্থাপন ১৫৫টি ট্রান্সফরমার আপগ্রেডেশন করেছে। ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে গফরগাঁও সদরে ও মাইজবাড়ি গ্রামে নতুন দুটি বিদ্যুত উপকেন্দ্র স্থাপন করেছে। পল্লীবিদ্যুত সমিতি প্রায় তিনশ কিলোমিটার নতুন লাইন স্থাপন করেছে। পল্লীবিদ্যুত সমিতি ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার মশাখালী গ্রামে একটি নতুন বিদ্যুত উপকেন্দ্র স্থাপন করেছে। পিডিবি ও পল্লীবিদ্যুতের অধীনে গফরগাঁও উপজেলায় গত ৫ বছরে নতুন করে প্রায় ৫২ হাজার গ্রাহক বিদ্যুত সুবিধার আওতায় এসেছে। এলজিইডির আওতায় ১০ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৫ কিলোমিটা দীর্ঘ চর কামারিয়া-নাককাটা চর নতুন সড়ক নির্মিত হয়েছে। ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ১১.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ গয়েশপুর-কান্দিপাড়া সড়ক, ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ গয়েশপুর-গফরগাঁও সড়ক নির্মিত হয়েছে। মলমল-দীঘলবাঘ-কাচারী-ভাংতি সড়ক ও মশাখালী-বাইলন্যা সড়কে ৫ কোটি, ৩ কোটি ও ৪ কোটি টাকা বয়ে যথাক্রমে ৯৬ মিটার, ৫৪ মিটার ও ৬৬ মিটার দৈর্ঘ্যরে তিনটি ব্রিজ নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ গফরগাঁও-টোক সড়কে শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর ৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৮২ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু নির্মাণ করচে। ৪ কোট ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে পৌর ভবন ও ৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে সদরে ৫০০ আসনের অডিটরিয়াম কাম মাল্টিপারপাস হলরুমের নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। গণপূর্ত বিভাগ ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে পাগলা থানা ভবন নির্মাণ করেছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্র্যালয়ের উদ্যোগে ৪ হাজার দুস্থ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বিনামূল্যে সোলার প্যানেল বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় গ্রামীণ সড়কে ৪৩টি ব্রিজ/কালভার্ট নির্মাণ ও ১৬০ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক সংস্কার করেছে। উপজেলা কৃষি অফিস খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে ৫ বছরে ১২ হাজার কৃষককে বিনামূল্যে সার, বীজ, কীটনাশক দিয়ে প্রণোদনা দিয়েছে। ভর্তুকি মূল্যে কৃষকদের পাওয়ার টিলার, মাড়াইকল, কমবাইন্ড হারভেস্টারসহ কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ করেছে। ২৫টি আইপিএম স্কুল স্থাপন করেছে। বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় ১০ হাজার কৃষককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর গত ৫ বছরে অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার ৬২টি মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজের একাডেমিক ভবন নির্মাণ করেছে। ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও গ্রাম পর্যায়ে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও কমিউিনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে জনগণের দুয়ারে পৌঁছে যাচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। লংগাইর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল আমিন বিপ্লব বলেন, গফরগাঁওয়ের মানুষের মাঝে শান্তি ও স্বস্তি রয়েছে। স্থানীয় এমপি ফাহমী গোলন্দাজের নেতৃত্বে, এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সকল রকম সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। পৌর মেয়র ইকবাল হোসেন সুমন বলেন, চোখে পড়ার মতো সরকারের এ উন্নয়নের জয়গান এলাকাবাসীর মুখে মুখে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আমরাফ উদ্দিন বাদল বলেন, বর্তমান সরকার গ্রাম ও শহরের ব্যবধান কমিতে আনতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আর বর্তমান সরকারের ৫ বছরে গফরগাঁওয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, বিদ্যুত খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে শহুরে মানুষের সুবিধা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। স্থানীয় এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ফাহমী গোলন্দাজ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ নজর থাকায় উপজেলায় গত ৫ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে, তা অতীতে কখনই হয়নি। উন্নয়ন ও শান্তির স্বার্থে গফরগাঁওবাসীর শতভাগ আস্থা আছে বর্তমান সরকারের প্রতি।
×