ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তন

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ৯ অক্টোবর ২০১৮

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তন

স্বাধীনতা সংগ্রাম শেষ হয়েছে, কিন্তু দেশ গড়ার সংগ্রাম এখনও শেষ হয়নি। ক্ষুধা ও নিরক্ষরমুক্ত দেশ গড়া না হওয়া পর্যন্ত এই সংগ্রাম অব্যাহত রাখার কথা বলেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়তে নবীন গ্র্যাজুয়েটদের নেতৃত্ব দিতে হবে। সেই লক্ষ্যে দেশের চাহিদা ও বিশ্বের জনশক্তি বাজার বিবেচনায় শিক্ষাক্রম ঢেলে সাজানোর কথাও বলেছেন তিনি। অপ্রয়োজনীয় ও কম গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোকে যুগোপযোগী করে ঢেলে সাজানোর কথা বলেছেন। শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি। উল্লেখ্য, এবারের সমাবর্তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক ২১ হাজার ১১১ জন গ্র্যাজুয়েট অংশ নেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারী সাত কলেজের গ্র্যাজুয়েটরা প্রথমবারের মতো সমাবর্তনে অংশ নেন। নিজ নিজ ক্ষেত্রে কৃতিত্বের জন্য ৯৬ জন কৃতী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে স্বর্ণপদক, ৮১ জনকে পিএইচডি ও ২৭ জনকে এমফিল ডিগ্রী প্রদান করা হয়। আজকের শিক্ষার্থীরাই জাতির ভবিষ্যত। আগামীতে তারাই দেশ পরিচালনায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। তাদের সঠিক নেতৃত্বে দেশ হবে উন্নত ও সমৃদ্ধ। তার জন্য প্রত্যেকের জীবনে চলার পথে আদর্শ থাকতে হবে। সে আদর্শ হবে ন্যায় ও সত্যের পক্ষে। কখনও সত্যের সঙ্গে মিথ্যার, ন্যায়ের সঙ্গে অন্যায়ের আপোস না করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। এই প্রসঙ্গে তিনি ষাটের দশকের ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে বর্তমান ছাত্র রাজনীতির তুলনা করে বলেন, ষাটের দশকের ছাত্র রাজনীতি ছিল সম্পূর্ণ আদর্শভিত্তিক। সেখানে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থ মুখ্য ছিল না। সেই আদর্শের জায়গা নিশ্চিত হওয়া দরকার। দরকার ছাত্র রাজনীতিসহ সকল রাজনীতি কলুষমুক্ত হওয়া। উঠে এসেছে ডাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গও। দীর্ঘ তিন যুগ এই প্রতিষ্ঠানটিতে নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধিত্ব না থাকার কুফলগুলোও উঠে আসে অনুষ্ঠানে। সমাবর্তন বলতে আমরা সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তিকে বুঝে থাকি। এর মধ্যে আনন্দ বেদনার স্মৃতি সম্পৃক্ত। নবীন গ্র্যাজুয়েটদের জন্য এই দিনটি সবচেয়ে স্মরণীয় দিন। সেই চির চেনা পোশাক কালো গাউন আর কালো হ্যাট পরে আনন্দ-উল্লাস আর চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে সনদ গ্রহণ সত্যিই এক আনন্দঘন মুহূর্ত। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জীবনে দিনটি আনন্দ ও সম্মানের। এখন সবাই কর্মজীবনের প্রবেশের অপেক্ষায়। শুধু নিজের জীবনকে নয়, দেশগড়ায়ও আত্মনিয়োগ করাবেন নিজেকে। গ্র্যাজুয়েটদের আজকের কৃতিত্বের মূলে আছে পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সর্বোপরি তাদের শিক্ষকরা। তাদের এই বিষয়টি মনে রাখতে হবে। গরিব দেশ, তাই তাদের দায়িত্ব অনেক। এই ঋণের কথা কখনও ভুলে যাওয়া ঠিক হবে না। সবাই দেশ ও জাতি গঠনে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করবেন এই প্রত্যাশা করছি।
×