ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

খালাস পেলেন মায়া ॥ মুন সিনেমা হল মালিক টাকা পাচ্ছেন

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ৯ অক্টোবর ২০১৮

খালাস পেলেন মায়া ॥ মুন সিনেমা হল মালিক টাকা পাচ্ছেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় ১৩ বছরের সাজার রায় থেকে খালাস পেয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। ওই সাজার রায়ের বিরুদ্ধে মায়ার করা আপীলের ওপর পুনঃশুনানি নিয়ে সোমবার রায় দেয় হাইকোর্ট। আদালত মায়ার আপীল মঞ্জুর করায় তিনি খালাস পেয়েছেন। এদিকে গত সেপ্টেম্বর মাসে সারা দেশে বিএনপির জ্যেষ্ঠ আইনজীবীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কাল্পনিক ৪ হাজার মামলা এবং ৩ লাখের বেশি লোককে আসামি করার বিষয়ে তদন্ত চেয়ে রিটের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আজ আদেশ দেবে হাইকোর্ট। অন্যদিকে পুরান ঢাকার আলোচিত মুন সিনেমা হলের মালিককে ৯৯ কোটি টাকা পরিশোধের যে নির্দেশ দিয়েছিল আপীল বিভাগ, তা পরিশোধে সম্মত হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এই অর্থ পরিশোধের জন্য ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে আদালত। সোমবার আপীল বিভাগ ও হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চগুলো এ আদেশ প্রদান করেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় ১৩ বছরের সাজার রায় থেকে খালাস পেয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। সোমবার হাইকোর্টে আপীলের ওপর পুনঃশুনানি শেষে এ রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। আদালতে মায়ার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার ও আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিনউদ্দীন মানিক। ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক জানান, আদালত ত্রাণমন্ত্রীর আপীল মঞ্জুর করেছে, ফলে তিনি ১৩ বছরের দ- থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। এর আগে ২০১০ সালের ২৭ অক্টোবর মায়াকে দুর্নীতির এ মামলা থেকে খালাস দিয়েছিল হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা লিভ টু আপীলের শুনানি নিয়ে ২০১৫ সালের ১৪ জুন তা বাতিল করে আপীল বিভাগ। পাশাপাশি সাজার বিরুদ্ধে মায়ার করা আপীলটিও ফের শুনানি করে নিষ্পত্তির (পুনর্বিচার) জন্য হাইকোর্ট বিভাগে পাঠানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৪ আগস্ট আপীলের পুনঃশুনানি নিয়ে রায়ের দিন ধার্য করে হাইকোর্ট। মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৭ সালের ১৩ জুন জরুরী অবস্থার সময় মায়ার বিরুদ্ধে রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় দুর্নীতির মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক নুরুল আলম। মামলায় তার বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধভাবে ২৯ লাখ টাকার সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ আনা হয়। ওই মামলায় ২০০৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার একটি বিশেষ জজ আদালত দুটি ধারায় মায়াকে মোট ১৩ বছরের কারাদ-সহ পাঁচ কোটি টাকা জরিমানা করেন। এর বিরুদ্ধে আপীল করলে ২০১০ সালের ২৭ অক্টোবর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ মায়াকে ওই মামলা থেকে খালাস দেয়। পরে হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপীল বিভাগে দুদক লিভ টু আপীল আবেদন দায়ের করে। এরপর ২০১৫ সালের ১৪ জুন হাইকোর্টের দেয়া খালাসের রায় বাতিল করে পুনঃশুনানির নির্দেশ দেয় আপীল বিভাগ। কাল্পনিক মামলার আদেশ আজ ॥ গত সেপ্টেম্বর মাসে সারা দেশে বিএনপির জ্যেষ্ঠ আইনজীবীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে করা ‘কাল্পনিক’ ৪ হাজার মামলা এবং ৩ লাখেরও বেশি লোককে আসামি করার বিষয়ে তদন্ত চেয়ে রিটের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার আদেশ দেবে হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মোঃ আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আদশের জন্য এ দিন ধার্য করে। আদালত জানায়, ‘এই কাল্পনিক বা গায়েবি মামলা দায়ের করায় শের ইমেজ ক্ষুণœ হচ্ছে। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও এ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম । মুন সিনেমা হলের মালিককে ৯৯ কোটি টাকা দেবে সরকার ॥ পুরান ঢাকার আলোচিত মুন সিনেমা হলের মালিককে ৯৯ কোটি টাকা পরিশোধের যে নির্দেশ দিয়েছিল আপীল বিভাগ, তা পরিশোধে সম্মত হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এই অর্থ পরিশোধের জন্য ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে আদালত। সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপীল বেঞ্চকে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বিষয়টি জানান। এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, এ মামলা শুনতে শুনতে আমরা ক্লান্ত । আর কতদিন এভাবে ঘোরাবেন। এ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে টাকা পেলেই এ অর্থ নিয়ে তা ইটালিয়ান মার্বেলকে দেবে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১ জুলাই রাজধানীর মুন সিনেমা হলের মালিককে দ্রুত ৯৯ কোটি টাকা পরিশোধে নির্দেশ দেয় আপীল বিভাগ। ইটালিয়ান মার্বেল ওয়ার্ক লিমিটেডকে ওই অর্থ পরিশোধ করতে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট ও এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের প্রতি এ নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়া গত ১৮ জানুয়ারি মুন সিনেমা হলের মালিককে তিন কিস্তিতে ৯৯ কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেয় তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মোঃ আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বাধীন আপীল বিভাগ।
×