ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

জয়নুল গ্যালারিতে কৃতী চারু শিক্ষার্থীদের চিত্রকর্ম

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ৮ অক্টোবর ২০১৮

 জয়নুল গ্যালারিতে  কৃতী চারু শিক্ষার্থীদের চিত্রকর্ম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বৈদ্যুতিক তারের ওপর ঝুলছে তিনটি পাখি। বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছে বিহঙ্গত্রয়ী। আর সড়কে তারের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটির শরীর থেকে ঝরছে রক্ত। নগর নিষ্ঠুরতার এমন দৃশ্যকল্পের সঙ্গে শহুরে জীবনের বিচিত্র বিষয়নির্ভর ছবিগুলো ঠাঁই নিয়েছে প্রদর্শনালয়জুড়ে। আছে আবহমান বাংলার সংস্কৃতিকে ছুঁয়ে যাওয়া ছবি কিংবা নর-নারীর প্রতিকৃতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে এসব ছবি নিয়ে চলছে প্রদর্শনী। অনুষদের বিভিন্ন শাখার কৃতি চারুশিক্ষার্থীদের চিত্রকর্ম নিয়ে বার্জার পেইন্টসের আয়োজনে সাজানো হয়েছে এই শিল্পসম্ভার। রবিবার সকালে এ প্রদর্শনীর সূচনা হয়। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতায় প্রদান করা হয় বার্জার এ্যাওয়ার্ড ফর স্টুডেন্টস অব ফ্যাকাল্টি অব ফাইন আর্ট, ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে অনুষদের বিএফএ চতুর্থ বর্ষ সম্মান পরীক্ষায় বিভিন্ন বিভাগের সর্বোচ্চ সিজিপিএ প্রাপ্তদের হাতে তুলে দেয়া হয় পুরস্কার। সেসব পুরস্কারপ্রাপ্তের চিত্রকর্ম নিয়ে শুরু হয় চার দিনের বিশেষ প্রদর্শনী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রখ্যাত শিল্পী রফিকুন নবী ও মনিরুল ইসলাম ও বার্জার পেইন্টস্ বালাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালী চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন, বার্জার পেইন্টস্রে জ্যেষ্ঠ মহাব্যবস্থাপক মহসিন হাবিব চৌধুরীসহ অনুষদের আটটি বিভাগের প্রধানগণ। অঙ্কন ও চিত্রাঙ্কন বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন তরিকুল ইসলাম, গ্রাফিক ডিজাইনে রাসেল রানা, ছাপচিত্রে দীপংকর সাহা, প্রাচ্যকলায় উৎপল কুমার, সিরামিক্সে সৌরভ দাস, ভাস্কর্যে সুষ্মিতা মুখার্জী মিষ্টি এবং কারুশিল্পে রেজাউল করিম রিজন। বিচারক কমিটির রায়ে ছাপচিত্র বিভাগের দীপংকর সাহাকে বার্জার স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার নির্বাচন করা হয়েছে। প্রদর্শনীতে চারু ও কারুকলার বিভিন্ন মাধ্যমের ৪০টিরও অধিক শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ধাতব ও কাঠের ভাস্কর্য, পোড়ামাটির শিল্পকর্ম, কাঠখোদাই শিল্পকর্ম, পেইন্টিং, পেন্সিল স্কেচসহ বিভিন্ন মাধ্যমের শিল্পকর্ম। ১০ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে এ প্রদর্শনী। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে। হরবোলার আবৃত্তিসন্ধ্যা ‘প্রাকযুগে পুরোভাগে’ ॥ পথচলার দুই দশক পূর্ণ করেছে আবৃত্তি সংগঠন হরবোলা। সাফল্যের এ উদ্্যাপনে সংগঠনের পক্ষ থেকে হরবোলার এক কুড়ি শিরোনামের বছরব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে রবিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত, নৃত্য ও আবৃত্তি মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় আবৃত্তি প্রযোজনা ‘প্রাকযুগে পুরোভাগে’। কাজী মাহতাব সুমনের নির্দেশনায় মহাভারতের আখ্যানভিত্তিক প্রযোজনাটির রূপায়ণ করেছে আবৃত্তি সংসদ, কুমিল্লা। মহাভারতের চারটি পরস্পর সংলগ্ন বিপরীতধর্মী চরিত্র কচ-দেবযানী-কর্ণ-কুন্তীর আবর্তে বহুমুখী জিজ্ঞাসা ছিল এ প্রযোজনায়। গঙ্গা-যমুনা উৎসবে মঞ্চস্থ দুই নাটক ॥ নাট্য মঞ্চায়নের সঙ্গে নৃত্য-গীত-আবৃত্তিসহ বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় জমে উঠেছে গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব। শিল্পকলা একাডেমিজুড়ে প্রাণের সঞ্চার করেছে গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব পর্ষদ আয়োজিত এ উৎসব। ১১ দিনব্যাপী উৎসবের তৃতীয় দিন ছিল রবিবার। এদিন সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার দুই মিলনায়তনে মঞ্চায়ন হয় দুটি নাটক। জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চায়ন হয় প্রাচ্যনাট প্রযোজিত নাটক ‘এ ম্যান ফর অল সিজন’। নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় আরণ্যক নাট্যদলের প্রযোজনা ‘দি জুবিলি হোটেল’। রবার্ট বোল্টের রচনা থেকে এ ম্যান ফর অল সিজন নাটকের অনুবাদ করেছেন শাহেদ ইকবাল। নির্দেশনায় ছিলেন আজাদ আবুল কালাম। অন্যদিকে রচনার পাশাপাশি দি জুবিলি হোটেল নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন মান্নান হীরা। ষোড়শ শতকের ইংল্যান্ডের ঐতিহাসিক পটভূমিকে উপজীব্য করে এগিয়েছে এ ম্যান ফর অল সিজন নাটকের কাহিনী। মধ্যযুগের শেষদিকে শুধু ইংল্যান্ড নয় সমগ্র ইউরোপে তখন পরিবর্তনের জোয়ার সূচিত হচ্ছিল। ফলশ্রুতিতে ধর্ম, রাজনীতি এবং অর্থনীতির মধ্যকার বিরোধ অনিবার্য হয়ে ওঠে। ইংল্যান্ডের রাজা অষ্টম হেনরি এবং পোপের মধ্যে বিরোধের সূচনা ঘটে। যার অনিবার্য পরিণতি হয় ‘দি ইংলিশ রিফর্মেশন’। প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন, আজাদ আবুল কালাম, মোঃ সাখাওয়াত হোসেন রেজভী প্রমুখ। সমাজের প্রাসঙ্গিক কিছু বিষয় সামনে রেখে এক ব্যস্ত শহরের জুবিলি হোটেলকে ঘিরে অনেক চরিত্রের গল্প নিয়ে বিন্যস্ত হয়েছে দি জুবিলি হোটেল নাটকের কাহিনী। প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন তমালিকা কর্মকার, আরিফ হোসেন আপেল, মান্নান হীরা, সাজ্জাদ সাজু, রুবলী চৌধুরী, মনির জামান, অপু মেহেদী, ইশতিয়াক হোসেন, রিয়া, রানু, রিমা, আমানুল হক হেলাল, পার্থ চ্যাটার্জী, কৌশিক সাহা, মাহাফুজ মুন্না, নিকিতা নন্দিনী প্রমুখ। গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসবের অংশ হিসেবে বিকেলে জাতীয় নাট্যশালা প্রাঙ্গণের মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এতে অংশ নেয় শিশু সংগঠন সপ্তকলির আসর। পথনাটক পরিবেশন করে নাটনন্দন। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে কণ্ঠশীলন ও প্রকাশ সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংগঠন। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে পঞ্চভাস্কর ও সুরতাল সঙ্গীত একাডেমি। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে স্বপ্ন বিকাশ কলাকেন্দ্র। একক কণ্ঠে আবৃত্তি পরিবেশন করেন মাসকুর-এ-সাত্তার কল্লোল, মিজানুর রহমান সজল ও নাজমুল আহসান। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিমুল সাহা ও টুম্পা সমাদ্দার। আজ সোমবার এ উৎসবের চতুর্থ দিন। বিকেলে মুক্তমঞ্চে থাকবে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
×