ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রামপালসহ সুন্দরবন বিনাশী সকল তৎপরতা বন্ধের দাবি

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ৭ অক্টোবর ২০১৮

রামপালসহ সুন্দরবন বিনাশী সকল তৎপরতা বন্ধের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে রামপাল বিদ্যুত প্রকল্পসহ সুন্দরবনবিনাশী সকল বাণিজ্যিক তৎপরতা বন্ধের দাবি জানিয়েছে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুত-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। শনিবার জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলন থেকে সকল রাজনৈতিক দলের কাছে সুন্দরবন রক্ষায় রামপালসহ বিভিন্ন বিষাক্ত প্রকল্প বন্ধের দাবিকে তাদের নির্বাচনী অঙ্গীকারে অন্তর্ভুক্ত করারও আহ্বান জানানো হয়েছে। বলা হয়, শুধু রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র নয়, এই কেন্দ্রের কারণে প্রলুব্ধ হয়ে দেশের বনগ্রাসী ভূমিগ্রাসী কতিপয় গোষ্ঠী তিন শতাধিক বাণিজ্যিক প্রকল্প নিয়ে সুন্দরবন ঘিরে ফেলেছে। গত কয়েক বছরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র, উন্মুক্ত কয়লা খনি, এলএনজি এবং এলপিজির লবিস্ট কোম্পানির স্বার্থে কাজ করে যাওয়া ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর দৌরাত্ম আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। মন্ত্রণালয় এখন তাদেরই দখলে। সুন্দরবন ধ্বংসকারী রামপাল কয়লাভিত্তিক প্রকল্প তাই এখনও বাতিল হয়নি, উপরন্তু কোন প্রকার পরিবেশ সমীক্ষা না করে দেশের বিদ্যমান পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে উপকূল রক্ষাকারী বন বিনাশ করে মহেশখালী, বরগুনা ও পটুয়াখালীতেও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্রের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। সুন্দরবনের ঘাড়ের ওপর বসানো হচ্ছে এলএনজি প্লান্ট। পুরানাপল্টনস্থ মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠন করেন সংগঠনের সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। বক্তব্য রাখেন আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও সংগঠক রুহিন হোসেন প্রিন্স। এ সময় টিপু বিশ্বাস, বজলুর রশীদ ফিরোজ, নজরুল ইসলাম, বহ্নি শিখা জামালী, প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা, জাহাঙ্গীর আলম ফজলু, শামসুজ্জোহা, নাসিরউদ্দিন নসু, মহিন উদ্দিন চৌধুরী লিটন, শহীদুল ইসলাম সবুজ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে রূপপুর প্রকল্পের ব্যয়, পরিবেশ সমীক্ষা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নিয়ে সরকারের শে^তপত্র প্রকাশের দাবি জানানো হয়। বলা হয় দুটো দায়মুক্তি আইন বাংলাদেশের জ্বালানি ও বিদ্যুত খাতে রাহুর মতো চেপে আছে। এর একটি ২০১০ সালে প্রথমে ৪ বছরের জন্য বহাল করা হয়, এরপর তার মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়েছে। এই আইন অনুযায়ী জ্বালানি ও বিদ্যুত খাতে গৃহীত সকল প্রকল্প দরপত্র ছাড়া, বিদ্যমান আইনী বাধ্যবাধকতার বাইরে গিয়ে বাস্তবায়ন করার এখতিয়ার নেয়া হয়েছে। এ সম্পর্কে বাংলাদেশের কোন নাগরিক আদালতের দারস্থ হতে পারবে না। এই দুর্নীতি অনিয়মের কারণেই একের পর এক অসম্ভব ব্যয়বহুল ক্ষতিকর প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে ফুলবাড়ীতে জাতীয় কমিটির নেতৃবৃন্দের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানানো হয়। বলা হয় সরকার দেশী-বিদেশী লুটেরাদের স্বার্থে জাতীয় সম্পদ ধ্বংসের কর্মকা- অব্যাহত রেখেছে। এসব দাবিতে অক্টোবর নভেম্বর মাসে জনসংযোগ, প্রচার ও বিভিন্ন অঞ্চলে সভা এবং আগামী ১০ নবেম্বর, নূর হোসেন দিবসে, বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে ‘সুন্দরবনের জন্য বৈশ্বিক সংহতি’ (Global Solidarity for Sundarban) পালনের কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়।
×