ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আলোচনা সভায় মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার

সাইবার জগত নিরাপদ করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৭ অক্টোবর ২০১৮

সাইবার জগত নিরাপদ করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দেশ ও ব্যক্তির নিরাপত্তার জন্যই করা হয়েছে। সরকারের অন্য কোন উদ্দেশ্য নেই। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। সাংবাদিক ইউনিয়নগুলো মানববন্ধন থেকে শুরু করে নানা কর্মসূচী পালন করছে। কিন্তু একবারও ভাবছেন না যে, সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে তার প্রতিকার কিভাবে হবে। আইনই যদি না থাকে তাহলে কিসের ভিত্তিতে এসব বন্ধ করা যাবে। আমরা সাইবার জগতকে নিরাপদ করার জন্যই আইনটি করেছি। সাংবাদিকরা আগেই কেন ভয় পাচ্ছেন। পুলিশের হাতে যে ক্ষমতা দেয়া আছে তা কি সাংবাদিকদের জন্য? এটা সবার জন্য একইভাবে প্রয়োগ হবে। এখন দেখতে হবে আইনটি কিভাবে প্রয়োগ হয়। যদি আইনটির অপপ্রয়োগ হয় তখন আইন নিয়ে সমালোচনা করতে পারেন। তার আগে ডিজিটাল আইন নিয়ে সমালোচনা উঠতে পারে না। কারণ আইনটির খসড়া থেকে শুরু করে পাস হওয়ার আগ পর্যন্ত কয়েক সাংবাদিক প্রতিনিধি ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। শনিবার রাজধানীর ফার্মগেটে হোটেল লা ভিঞ্চিতে টিআরএনবি আয়োজিত ‘ব্যক্তিগত গোপনীয়তা এবং তথ্যের নিরাপত্তা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এসব কথা বলেন। আলোচনা সভায় টিআরএনবির সভাপতি জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক, বিটিআরসির ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফা কামাল, ব্যারিস্টার আসরাফুল হাদি, রবির হেড অব কর্পোরেট এ্যান্ড রেগুলেটারি শাহেদ আলম, বাংলালিংকের চীফ কর্পোরেট তাইমুর রহমান, ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ফারহান আহমেদ প্রমুখ। গোলটেবিল আলোচনায় টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের (টিআরএনবি) সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার দে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তার প্রবন্ধে বলা হয়েছে, তথ্য গোপন বলতে আর কিছু নেই। আমরা কি পড়ছি, কি খাচ্ছি, কি দেখছি কোন কিছুই গোপন থাকছে না। আমরা প্রতিদিন যে তথ্য তৈরি করছি তাও গোপন থাকে না। যে কারণে এই তথ্যগুলোই সম্পদ হয়ে উঠছে। এসব তথ্য বিক্রির মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীকেই বিক্রি করা হচ্ছে। ফেসবুকের ইউজার এগ্রিমেন্টে ১৬ ধারায় পঁচিশটির বেশি লিঙ্ক রয়েছে। গ্রাহকরা কখনও এসব লিঙ্ক পড়েও দেখে না। বা পড়লেও বুঝতে পারে না। ফলে সহজেই গ্রাহকদের তথ্য নিয়ে ব্যবসা করার সুযোগ পাচ্ছে তারা। অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের তথ্য নিয়ে ব্যবসা করছে। বাংলাদেশের অনেক কোম্পানিও এখন ব্যক্তিগত পর্যায়ের তথ্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছে। ‘ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি ইনডেক্স (এনসিএসআই) বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত একটি সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ক সংস্থা। এই সংস্থা বিশ্বের ১১১ দেশের মধ্যে সাইবার নিরাপত্তার ক্রমে আমাদের অবস্থান ৭৭। গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ বেড়েছে। সাইবার নিরাপত্তার দিক থেকে ভারতের অবস্থান ৩৯, পাকিস্তানের ৭২, শ্রীলঙ্কার ৭৯, আফগানিস্তানের ৯৫, নেপালের ৯৮ ও ভুটানের ১০২। বাংলাদেশে দুই দশক ধরে ইন্টারনেট ব্যবহার হচ্ছে। এ দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ক্রমাগত উন্নতির দিকে যাচ্ছে। গোলটেবিল আলোচনায় মন্ত্রী বলেন, উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তুলনা করলে বাংলাদেশ সাইবার সিকিউরিটির দিক থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছে। কারণ আমাদের ইন্টারনেট ব্যবহারের ইতিহাসটা বেশি দিনের না। আমরা চেষ্টা করেছি মানুষকে ইন্টারনেট জগতে প্রবেশ করাতে এবং এই জগতকে নিরাপদ রাখতে। ইউরোপে ৩ থেকে ৪শ’ বছর পেছনে থাকা দেশ বলা হয়। কিন্তু আমাদের সরকারের দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে দেশ তথ্যপ্রযুক্তির দিক থেকে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। বিশ্বের অনেক দেশ এখন আমাদের কাছে শিখছে। আমরা তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে এত দ্রুত এগিয়ে যেতে পারব তা কল্পনাও করা যায়নি। আমরা মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট পাঠিয়েছি। দেশে বিপুল ব্যান্ডউইথ রযেছে। দুটি সাবমেরিন ক্যাবলের মালিক হয়েছি। বেসরকারী পর্যায়ে আরও কয়েকটি ক্যাবল রয়েছে আমাদের। সারাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারের সংখ্যা বেড়েছে। বর্তমানে দেশে সাড়ে ৯ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। এ হার দিন দিন বাড়ছে। এখন আমাদের ইন্টারনেটকে নিরাপদ করতে হবে। নিরাপদ করার জন্য সরকার কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
×