ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে ফেরি চলাচল তৃতীয় দিনের মতো বন্ধ

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ৭ অক্টোবর ২০১৮

শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে ফেরি চলাচল তৃতীয় দিনের মতো বন্ধ

স্টাপ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ নাব্য সঙ্কটে শনিবার টানা ৩য় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে দেশের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে ফেরি চলাচল। গেল দুই মাস ধরে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই নৌরুট ফেরি চলাচল সচল থাকলেও গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে তা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়ে জনতা। শিমুলিয়া ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় আটকা পড়েছে শতাধিক ট্রাক। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নতুন করে আর কোন যানকে ঘাটে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। এতে ঢাকা থেকে গাড়িতে এসে লঞ্চ বা স্পিডবোটে পদ্মা পাড়ি দিয়ে ওপারে গিয়ে আবার অন্য যানবাহনে চড়ে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছে লোকজন। এতে লঞ্চ ও স্পিডবোটে পড়েছে বাড়তি চাপ। লোকজন ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে। বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ শাহ বরকত উল্লাহ শনিবার জানান, বিকেল ৩টার দিকে ফেরি সার্ভিস পরীক্ষামূলকভাবে সচল করার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। লৌহজং টার্নিং পয়েন্ট থেকে ড্রেজারের পাইপ সরিয়ে নেয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত পাইপ সরানো হয়নি। বেশ কিছুদিন ধরে এই রুটে সীমিত আকারে ফেরি চললেও বৃহস্পতিবার চ্যানেলে পানির গভীরতা আরও কমে যাওয়ায় এবং ড্রেজিংয়ের পাইপের কারণে ফেরি চ্যানেলে প্রবেশ করতে না পারায় ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। এই রুটের ১৮ ফেরিই এখন অলস সময় কাটাচ্ছে। বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং বিভাগের অতিরিক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাইদুর রহমান জানান, লৌহজং টার্নিং পয়েন্ট ও বাইপাস চ্যানেলে ৮টি ড্রেজার দিয়ে পলি অপসারণ কাজ চলমান রয়েছে। গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরু হওয়া ড্রেজিং কার্যক্রমে এ পর্যন্ত পলি অপসারণ করা হয়েছে সাড়ে ১৭ লাখ ঘনমিটার। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সর্বমোট ৩২ লাখ ঘনমিটার পলি অপসারণ করা হলে নাব্য সঙ্কট নিরসন হবে। তিনি আরও বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর পদ্মায় মাত্রাতিরিক্ত পলি জমেছে। তাই বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিংয়ে পলি অপসারণ করেও নাব্য সঙ্কট দূর করা যাচ্ছে না। পরবর্তীতে গত শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) থেকে বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং কার্যক্রমকে সহযোগিতা করতে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে সিনোহাইড্রোর ড্রেজার দিয়ে ড্রেজিং করা হয়। অত্যাধুনিক এই ড্রেজার দিয়ে শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ড্রেজিং চলে। পরে তারা পাইপগুলো সরিয়ে নেয় । শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে নাব্য সঙ্কটে দীর্ঘদিন ফেরি চলাচলে বির্পযয় দেখা দিয়েছে। নাব্য সঙ্কট নিরসনে ক্রমাগত ড্রেজিং করেও কোন লাভ হয়নি। কখনও ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরি চলাচল ছিল বন্ধ, আবার চালু হলেও ফেরি চলেছে সীমিত আকারে। রো রোসহ বড় ফেরিগুলো ছিল বন্ধ, আর ছোট ফেরিগুলো ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অর্ধেক যানবাহন নিয়ে নৌরুট পাড়ি দিয়েছে। এতে একদিকে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আর অপরদিকে যাত্রী দুর্ভোগ ওঠে চরমে। বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে পণ্যবাহী ট্রাক চালক ও শ্রমিকরা। দিনের পর দিন না খেয়ে না ঘুমিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। এছাড়া নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে না পারায় পরিবহন সেক্টরের সংশ্লিষ্টরাও আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। এতে দেশের অর্থনীতিতেও বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
×