ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তিন প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের ৫১৫ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ৭ অক্টোবর ২০১৮

তিন প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের ৫১৫ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ আহরণের উন্নয়ন, বন ব্যবস্থাপনা এবং গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন এই তিনটি প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক ৫১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ অনুমোদন করেছে। যা টাকায় মূল্যে ৪ হাজার কোটি টাকারও ওপরে। শনিবার বিশ্বব্যাংকের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিশ^ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয় মিয়ানমারে সহিংসতায় পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারে আশ্রয়দানকারী স্থানীয় কমিউনিটিসহ গ্রামীণ জনগণের দারিদ্র্য হ্রাস এবং নতুন জীবিকায়নের সুযোগ সৃষ্টির সহায়ক হিসেবে এই অর্থ ব্যয় করা হবে। বাংলাদেশ, ভুটান এবং নেপালে বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি কিমিয়াও ফান বলেন, এই তিনটি প্রকল্প গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর বিশেষ করে দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে আসা লোকদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করবে, একই সঙ্গে দেশের জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তাদের সক্ষমতার উন্নয়ন ঘটবে। জানা গেছে, এ তিনটি খাতের মধ্যে সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ আহরণের উন্নয়ন প্রকল্পে দেয়া হবে ২৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে বাড়তি বরাদ্দ হিসেবে দেয়া হচ্ছে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সাসটেইনেবল ফরেস্ট এন্ড লাইভলিহুড প্রকল্পে ১৭৫ মিলিয়ন ডলার দেবে। এর মাধ্যমে স্থানীয় জনগণকে (কমিউনিটি) সম্পৃক্ত করে সমন্বিত বন ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হবে। উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনীসহ প্রায় ৭৯ হাজার হেক্টর বনে গাছ লাগানো হবে। যা জলবায়ুু পরিবর্তন স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ন্যাচারাল রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট স্পেসালিস্ট এবং প্রকল্পের টাস্ক টিম লিডার মাধবী পিল্লাই বলেন, ‘উপকূলীয়, পার্বত্য এবং দেশের মধ্যাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে ৪০ হাজার পরিবার এতে লাভবান হবেন। এছাড়াও কক্সবাজারে প্রায় এক মিলিয়ন রোহিঙ্গা আশ্রয় নেবে। প্রকল্পটি বিশেষভাবে স্থানীয় সম্প্রদায়গুলোকে তার আয়ের কার্যক্রমের সাহায্য করবে। একটি টেকসই উপায়ে জ্বালানির জন্য কাঠের প্রাপ্যতা উন্নত করবে এবং মানব-বন্যহাতির সংঘাতকে হ্রাস করবে। বিশ^ব্যাংক জানিয়েছে, ২৪০ মিলিয়ন ডলারের টেকসই উপকূলীয় এবং সামুদ্রিক মৎস্য প্রকল্প মৎস্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে, মৎস্যচাষ সম্প্রসারণে এবং জলাশয়ের জৈবিক সুরক্ষা এবং উৎপাদনশীলতা জোরদার করতে সহায়তা করবে। ১০টি উপকূলীয় জেলায় এই প্রকল্পটি ফিশিং কমিউনিটির সঙ্গে কমিউনিটি সহ-ব্যবস্থাপনা সমিতি স্থাপন করবে, যা তাদের সম্পূরক ও বিকল্প জীবিকা গ্রহণ করতে সক্ষম করবে। এটি বিকল্প জীবিকা সহায়তা, দক্ষতা উন্নয়ন এবং পুষ্টি সচেতনতার মাধ্যমে মহিলা কর্মীদের ক্ষমতায়ন করবে বলেও জানানো হয়। প্রকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাংক সিনিয়র পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এবং টাস্ক টিম নেতা মিলন ডাউলজিরভ বলেন, দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য মৎস্যজীবী অত্যাবশ্যক এবং সেক্টর ১৮ মিলিয়নের বেশি লোক নিয়োজিত। তৈরি পোশাকের পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানি আয় সেক্টর মৎস্য। এই প্রকল্প মৎস্য ব্যবস্থাপনা সিস্টেম, অবকাঠামো এবং অন্যান্য মূল্য চেইন বিনিয়োগ উন্নত করতে সাহায্য করবে। এর ফলে মাছের ভাল উৎপাদন হবে বলেও জানান তিনি। বিশ^ব্যাংক জানায়, প্রকল্পটি বর্তমান মাছ ধরার আইডি কার্ড সিস্টেম প্রসারিত করতে সহায়তা করবে। এটি মাছ ধরার জন্য নিবন্ধন এবং লাইসেন্সিং উন্নত করবে। দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রামীণ পরিবহন উন্নয়ন প্রকল্পে ১০০ মিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত অর্থায়ন গত বছরের ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যা থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ২৬টি জেলায় গ্রামীণ সড়ক পুনর্বাসনে সহায়তা করবে। চলমান প্রকল্পটি ৫,০০০ কিলোমিটারেরও বেশি গ্রামের রাস্তাগুলোতে উন্নতি ও মেরামত করেছে যা লাখ লাখ মানুষকে বাজার, হাসপাতাল এবং স্কুলগুলোতে চলাচলে সহায়তা করেছে। এই প্রকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ট্রান্সপোর্ট বিশেষজ্ঞ এবং টাস্ক টিম লিডার ডুং আনহ হোয়াং বলেন, গ্রামীণ সড়কগুলোতে সড়কের নিরাপত্তা, ট্রাফিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অর্থায়ন চলবে।
×