ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আজ ফাইনালে প্রতিপক্ষ নেপাল

শিরোপা জিততে আত্মবিশ্বাসী মৌসুমীরা

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ৭ অক্টোবর ২০১৮

শিরোপা জিততে আত্মবিশ্বাসী মৌসুমীরা

রুমেল খান ॥ একদিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পর্বতমালা হিমালয়ের দেশ নেপাল। অন্যদিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব-দ্বীপ দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত আর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের দেশ বাংলাদেশ। নেপাল নামটি দুটি শব্দ ‘নে এবং পাল’ থেকে এসেছে, যাদের অর্থ যথাক্রমে পবিত্র এবং গুহা। বাংলাদেশের ‘বাংলা’ নামটি সুলতানী আমলের বাঙ্গালা শব্দ থেকে উদ্ভূত। অনেকের মতে বং অথবা বাং নামক একটি দ্রাবিড়ীয়-ভাষী উপজাতি বা গোষ্ঠী থেকে উদ্ভূত হয়েছে। পাঠক হয়তো বিভ্রান্ত হচ্ছেন, নেপাল-বাংলাদেশ নিয়ে এত জ্ঞানগর্ভ লেকচার দেবার কী হলো? আসলে এই ভূমিকা অবতারণার কারণ হচ্ছে ফুটবল। চর্মগোলকের এই খেলাটিতে আজ সন্ধ্যা ৭টায় মুখোমুখি হবে দেশ দু’টির অনুর্ধ-১৮ দলের নারী ফুটবলাররা। উপলক্ষ হচ্ছে সাফ অনুর্ধ-১৮ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতা (এবারই প্রথম অনুষ্ঠিত হচ্ছে আসরটি)। ভুটানের চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি। এর আগে বিকেল সাড়ে তিনটায় একই মাঠে তৃতীয় স্থান অধিকারের জন্য লড়াই করবে ভুটান-ভারত। ফাইনালিস্ট দু’দলের রোড টু ফাইনাল হচ্ছে এরকমÑ বাংলাদেশ ‘বি’ গ্রুপে পাকিস্তানকে ১৭-০ এবং নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিতে ওঠে। সেমিতে তারা স্বাগতিক ভুটানকে ৪-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে। একই গ্রুপের দল নেপাল গ্রুপপর্বের অন্য ম্যাচে পাকিস্তানকে ১২-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে নাম লেখায় শেষ চারে। উল্লেখ্য, ভুটানের মাটিতে এর আগে বাংলাদেশ দল দু’বার শিরোপা জিতেছে। দু’বারই পুরুষ দল। একবার ২০০২ সালে আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্টে (বাফুফে একাদশ নামে)। আরেকটি ২০১৪ সালে কিংস কাপে শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব। ক’দিন আগেই (গত ১৮ আগস্ট) মেয়েদের অনুর্ধ-১৫ জাতীয় দলও সেখান থেকে অল্পের জন্য সাফ অনুর্ধ-১৫ আসরের শিরোপা জিততে পারেনি। ফাইনালে ১-০ গোলে হেরে যায় ভারতের কাছে। এবার কি তাদের সেই ব্যর্থতা-অপূর্ণতা ভুলিয়ে দিতে পারবে অনুর্ধ-১৮ দল শিরোপা জিতে? বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে আজ পর্যন্ত নেপালের কাছে হারেনি বাংলাদেশ। তবে সিনিয়র পর্যায়ে একবার হেরেছে। তাও সেটা সেই ২০১০ সালে ০-৩ গোলে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে। খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল কক্সবাজারে। মোবাইল ফোনে জনকণ্ঠের সঙ্গে একান্ত আলাপনে বাংলাদেশের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন জানিয়েছেন, শিরোপা জেতার জন্য তার দল সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। মহিলা ফুটবলে কোচ হিসেবে এ পর্যন্ত ছ’বার সাফল্যের মুখ দেখেছেন ছোটন। এর আগে তার অধীনে মহিলা দল জেতে ২০১৫ সালে এএফসি অনুর্ধ-১৪ বালিকা আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপ (সাউথ এ্যান্ড সেন্ট্রাল), ২০১৬ সালে এএফসি অনুর্ধ-১৪ বালিকা আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপ (সাউথ এ্যান্ড সেন্ট্রাল), ২০১৬ সালে এএফসি অনুর্ধ-১৬ মহিলা আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইপর্ব (সাউথ এ্যান্ড সেন্ট্রাল), ২০১৭ সালে সাফ অনুর্ধ-১৫ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপ, ২০১৮ সালে জকি ক্লাব গার্লস ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ ইনভাইটেশনাল ফুটবল টুর্নামেন্টে এবং ২০১৮ সালে এএফসি অনুর্ধ-১৬ মহিলা আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইপর্বে (গ্রুপ ‘এফ’)। ভুটানের বিরুদ্ধে সেমির ম্যাচে স্বপ্নাকে (৮ গোল করে এখন পর্যন্ত শীর্ষ গোলদাতা) ইচ্ছে করেই খেলাননি ছোটন। এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ও চোট থেকে সেরে উঠলেও ফাইনালের জন্য রিফ্রেশ রাখব বলে সেমিতে খেলাইনি। আশাকরি সে ফাইনালে খেলবে।’ আজকের ফাইনালে স্বপ্না তো খেলবেই, সেই সঙ্গে অন্য যে কোন একটি পজিশনে পরিবর্তন আসতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন ছোটন। মেয়েরা সবাই সুস্থ ও ফিট আছে, সবার মনোবলও আছে বেশ ভাল... এমনটাই জানান ছোটন।
×