ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এক মাসের মধ্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন ॥ মওদুদ

প্রকাশিত: ০৫:০২, ৬ অক্টোবর ২০১৮

  এক মাসের মধ্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন ॥ মওদুদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আন্দোলন কর্মসূচীর মাধ্যমে আগামী একমাসের মধ্যে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন ঘটবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হবে যে, সরকার সংলাপে বসে আমাদের দাবি মানতে বাধ্য হবে। শুক্রবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘চেতনার বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠন আয়োজিত ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন : কোন্ পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। সরকারকে উদ্দেশ করে মওদুদ বলেন, সংবিধানের দোহাই দেন, কিন্তু সংবিধানে তো নির্বাচনকালীন সরকারের কোন কথা বলা নেই। পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব ও প্রশাসনসহ সবকিছু আপনাদের অধীনে থাকবে, আর নাম দেবেন নির্বানকালীন সরকার, এটা প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়। সংবিধান জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতীক। তাই সংবিধান কোন বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। সময় থাকতে বিএনপির দাবি মেনে নিন। ঐক্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরকারের অবসান ঘটানো হবে উল্লেখ করে মওদুদ বলেন, এ জন্য দেশের সব মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে ঐক্য প্রক্রিয়া আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার শেষ সময়ে এসে মনে করে তাদের ক্ষমতা চিরস্থায়ী। কিন্তু তা ভুল। কারণ জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। ঐক্যের আন্দোলনে সরকার বাধ্য হবে এক মিনিটের ব্যবধানে সংলাপে বসতে, বাধ্য হবে আমাদের দাবি মেনে নিতে। যথাসময়ে উপযুক্ত কর্মসূচী দেয়া হবে। মওদুদ বলেন, দেশে নির্বাচন করার সুন্দর পরিবেশ আছে বলে প্রধানমন্ত্রী যে দাবি করেছেন তা সত্য নয় বরং নির্বাচনের কোন পরিবেশই নেই দেশে। তাহলে জনগণ কিসের ভিত্তিতে নির্বাচনে অংশ নেবে। নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত জেনে সরকার এককভাবে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছে। তবে বিএনপিকে বাইরে রেখে নির্বাচন করবেন, সেটা আর এ দেশের মাটিতে হবে না। মওদুদ বলেন, সরকার জানেন একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হলে দেশের মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে। এ জন্য নির্বাচনে জিততে এখন ইভিএম আমদানি করেছে। যে দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে হ্যাকিং করে সাড়ে আট শ’ কোটি টাকা নিয়ে যেতে পারে সে দেশে ইভিএম তো সাধারণ একটা মেশিন। ভোট পুনঃগণনা করার কথা সংবিধানে বলা আছে। কিন্তু ইভিএমে দ্বিতীয়বার গণনার কোন সুযোগ নেই। মওদুদ বলেন, আপনারা দেখেছেন হাতিরঝিল থানায় আমিসহ আমাদের শীর্ষ পর্যায়ের সব নেতার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। যা ঘটেনি তা সাজিয়ে মামলা দেয়া হয়েছে। এ আমলে আমরা অনেক কিছু দেখেছি। যার বর্ণনা দিতে গেলে অনেক সময় লাগবে। কিন্তু তাদের লোকেরা একের পর এক ব্যাংক লুট, কয়লা খনি লুটসহ অসংখ্য লুটপাটের মতো অপরাধ করলেও আজ পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে দেখিনি। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি শামীমা রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ফরহাদ হালিম ডোনার, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারুল আজিম প্রমুখ। বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে এক মাস ৪ দিনে ৪ হাজার ১৩৫ মামলা- রিজভী ॥ বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত ১ মাস ৪ দিনে ৪ হাজার ১৩৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী। এসব মামলায় জ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ২৫ হাজার ৬০৪ জনকে এবং ৪ হাজার ৬৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে তিনি জানান। শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। রিজভী বলেন, ২১ আগস্ট বোমা হামলা মামলায় বিচারিক কার্যক্রম চলাকালীন অবস্থায় চার্জশীট ফিরিয়ে এনে সম্পূরক চার্জশীট তৈরি করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম জড়ানো হয়েছে মনের ঝাল মেটাতে। এ জন্য আইনী প্রক্রিয়াকে হাতের মুঠোয় নিয়ে কুটিল চক্রান্তের মাধ্যমে তারেক রহমানকে ভিকটিম করা হয়েছে। রিজভী বলেন, জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রধান কা-ারী খালেদা জিয়া মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দী তাই কয়েক মাস পরে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা। অধিকার হারা জনগণ একটি জোরালো আন্দোলনের জন্য অগ্নিগর্ভ হয়ে আছে। এমনিতে সারাদেশে ঝাঁকে ঝাঁকে গায়েবি মামলায় এক অস্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে। তার ওপর দেশজুড়ে বাসাবাড়িতে চলছে বিএনপি নেতাকর্মীদের খোঁজার ধুম। পাইকারি হারে গ্রেফতারের শিকার হচ্ছে নেতাকর্মীরা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পটু প্রমুখ।
×