ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্লাস্টিক বর্জ্য পুড়িয়ে জ্বালানি তেল উৎপাদন করছেন কাঠমিস্ত্রি শাহাবুল

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ৬ অক্টোবর ২০১৮

 প্লাস্টিক বর্জ্য পুড়িয়ে জ্বালানি তেল উৎপাদন করছেন কাঠমিস্ত্রি  শাহাবুল

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ হিলিতে প্লাস্টিক বর্জ্য পুড়িয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ডিজেল ও পেট্রোল উৎপাদন করা হচ্ছে। স্থানীয় এক যুবক বর্জ্য থেকে এই তেল ও গ্যাস উৎপাদনের কাজটি করছেন। উৎপাদিত পেট্রোল দিয়ে মোটরবাইক এবং ডিজেল দিয়ে পাওয়ার ট্রিলার চালিয়ে ইতোমধ্যে সফলতা পেয়েছেন তিনি। এদিকে প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্য থেকে তেল উৎপাদনের খবর স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে শত শত মানুষ প্লাস্টিক থেকে জ্বালানি তেল উৎপাদনযজ্ঞ দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন। সরকারীভাবে সহযোগিতা পেলে কমমূল্যে ডিজেল ও পেট্রোল উৎপাদন এবং সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্ভব হবে বলে জানান তেল উৎপাদনের উদ্যোক্তা শাহাবুল ইসলাম। তিনি হিলির সীমান্তবর্তী গ্রাম মংলা পাড়ের মৃত নীল মিয়ার ছেলে। পেশায় কাঠমিস্ত্রি শাহাবুল ইসলাম বলেন, ‘অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়লেও চিন্তা করতাম কোন যন্ত্র আবিষ্কার করলে মানুষের উপকার হবে। একদিন দোকানে বসে আগুনে প্লাস্টিক বোতল পুড়ে যাওয়া দেখছিলাম। এ সময় দেখতে পাই গলানো বোতল থেকে তেল জাতীয় কিছু একটা পদার্থ বের হচ্ছে। এরপর আমি চিন্তা করলাম এই পর্দাথগুলোকে কিভাবে পৃথক করা যায়। সেই ভাবনা থেকে প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ করে একটি ড্রাম তৈরি করি। তাপ সহনশীল সেই ড্রামে প্লাস্টিকের ফেলে দেয়া বোতল ও পলিথিনের কাগজ ঢুকিয়ে ড্রামের মুখটি বন্ধ করে দেই। এর পর ড্রামের নিচে আগুন দিয়ে প্লাস্টিকগুলো গলানো হয়। আর গলানো প্লাস্টিক থেকে বের হওয়া বাষ্পকে কিছু কেমিক্যাল ব্যবহার করে প্রথমে ডিজেলে রূপান্তর করা হয়। পরে সেই ডিজেলকে আরও রিফাইন করে পেট্রোল তৈরি হয়।’ শাহাবুল জানান, বর্তমানে এক লিটার ডিজেল তৈরিতে খরচ হচ্ছে ১৫ টাকা। আর পেট্রোল তৈরিতে খরচ হচ্ছে ২০ টাকা। তিনি দাবি করেন, সহায়তা পেলে এই প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন ঘটিয়ে প্লাস্টিক বর্জ্যরে সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং তা থেকে তেল উৎপাদনের মাধ্যমে জ্বালানির চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। স্থানীয়রা জানান, বিভিন্ন প্লাস্টিক বর্জ্য ও পলিথিন জমিতে গিয়ে মাটির উর্বরতা কমিয়ে দেয়ার পাশাপাশি ফসল ও পরিবেশের দূষণ করছে। শাহাবুল সম্প্রতি ফেলে দেয়া এসব বর্জ্য থেকে পেট্রোল ও ডিজেল তেল উৎপাদন করে বিরাট উপকার করেছে। এটা স্থানীয়দের জন্য গর্বের বিষয়। সরকারীভাবে তাকে সহযোগিতা করা হলে দেশের তেল ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ থেকেও বাঁচা যাবে।
×