ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্নীতির আঁতুরঘর বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ৬ অক্টোবর ২০১৮

দুর্নীতির আঁতুরঘর বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ ‘রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ’ স্লোগানটি বড় অক্ষরে লেখা রয়েছে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকে। কারাগার কর্তৃপক্ষও দাবি করছেন, বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রতিটি বন্দীকে রাখা হয় নিবিড় পর্যবেক্ষণে। কঠোর অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে দেখানো হয় স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার পথ। তবে মুখে এ কথা বললেও বাস্তবতার চিত্র ভিন্ন। কারাগারের বন্দী ও স্বজনদের প্রতিনিয়তই এখানে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, পুরো কারাগারজুড়েই চলছে টাকার খেলা আর জমজমাট মাদক ব্যবসা। যার যত টাকা ও প্রভাবশালী, কারাগারের ভিতরে তার ততই দাপট। মাদকের রমরমা বাণিজ্যও হয় জেলখানার ভেতরে। টাকাওয়ালারা ঘরের ন্যায় জেলখানাতেও বসবাস করেন আরাম আয়েশে। আর যাদের টাকা নেই তাদের কারা কর্তৃপক্ষের কতিপয় ব্যক্তির নির্যাতনের শিকার হতে হয়। তবে কারাগারের বাইরে এসব ঘটনা সহসা প্রকাশ করেন না কেউ। কারণ বেশিরভাগ হাজতিই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, মাদক সংশ্লিষ্ট অথবা অপরাধী হওয়ায় তাদের বারবার যেতে হয় কারাগারে। সূত্রমতে, একজন হাজতি কারা গেট থেকে প্রবেশের পর থেকেই শুরু হয় কারা কর্তৃপক্ষের কতিপয় কর্মকর্তার অর্থ আদায়ের সূচনা। এরপর জামিনে বের হওয়া পর্যন্ত হাজতিদের নিয়ে চলে তাদের অর্থ বাণিজ্য। যার ফলে কারা কর্তৃপক্ষ সব সময়ই সংবাদকর্মীদের এড়িয়ে চলেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করেন। হাজতিদের কারাগারে প্রবেশের আগে তাদের নাম, বাবার নাম ও ঠিকানা একটি খাতায় লিপিবদ্ধ করেন কারাগারের কতিপয় কর্মকর্তা। ওই খাতার নাম হলো ‘পিসি বই’। হাজতি মুখে তার পরিচয় সঠিক বললেও লেখার সময় অনেকটাই ইচ্ছে করে পিসি বইতে ভুল তথ্য লেখা হয়ে থাকে। একজন হাজতির নাম যদি হয় ‘মিজানুর রহমান’ কারা কর্তৃপক্ষ তার নাম লিখবে ‘মিজানুর বহমান’। আদালত থেকে তার জামিন মঞ্জুর হলেও ‘র’ ও ‘ব’ এর বেড়াজালে আটকে দেয়া হয় ওই হাজতিকে। গেটের দায়িত্বে থাকা কারারক্ষীকে পাঁচশ’ থেকে এক হাজার টাকা দিলেই ‘ব’ আবার ‘র’ হয়ে যায়। কেউ টাকা দিতে না পারলে জামিন আদেশের পরও তাকে কমপক্ষে একদিন অতিরিক্ত জেলহাজতে থাকতে হয়। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে এসব কথা জানিয়েছেন হয়রানির শিকার কয়েক হাজতি। তারা (হাজতি) আরও জানান, আমদানিতে একদিন রাখার পর হাজতিদের অপরাধ অনুযায়ী বিভিন্ন ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। সেখানেও টাকা। অনেক অপরাধী এক জায়গায় বসবাস করায় প্রায়ই হাজতিতের মধ্যে মারামারি বাধে। মারামারি করার অপরাধে তাদের কেস টেবিলে (কারাগারের বিশেষ বিচার ব্যবস্থা) হাজির করা হয়। তবে কারাগারের কতিপয় অসাধু সুবেদার, জমাদার ও সিআইডিদের টাকা দিলে পার পেয়ে যায় প্রকৃত অপরাধী। এর প্রেক্ষিতে উল্টো শাস্তি পেতে হয় নিরাপরাধীকে। ফলে কারাগারে ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে অপরাধ প্রবণতা। সূত্রে আরও জানা গেছে, একটু ভালভাবে গোসল করার জন্যও টাকা গুনতে হয় কারাগারের বন্দীদের। প্রতিবার গোসল করার জন্য যারা ৫০ থেকে ৬০ টাকা দিতে পারছেন শুধু তারাই পাম্পে বা বিভিন্ন সেলের সামনে গোসল করার সুযোগ পাচ্ছেন। কারাগারের অভ্যন্তরে নগদ টাকা বহন করা বড় ধরনের অপরাধ। তাই বাইরে থেকে কেউ টাকা দিতে চাইলে ব্যাংক হিসেবের ন্যায় পিসি বইতে টাকা জমা হয়। কারো টাকার প্রয়োজন হলে পিসি বইয়ের মাধ্যমে ক্যান্টিন থেকে লেনদেন করা হয়ে থাকে। আর এখানেই হলো আসল দুর্নীতি। কেউ ১০০ টাকা চাইলে তাকে দেয়া হয় ৯০ টাকা। বাকি ১০ টাকা কমিশন বাবদ কেটে রাখা হয়। যদিও টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে জেলার বলেছেন, এ ১০ টাকা পিসি বই তৈরি করার জন্য নেয়া হয়। এমন নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকার পিসি বই তৈরি করার জন্য কোন টাকা বরাদ্দ না দেয়ায় তারা এই টাকাটা নিয়ে থাকেন। বন্দীদের সঙ্গে সাক্ষাত করতে আসা স্বজনরা সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন দেখা করার ঘরে। তবে টাকা থাকলে সেখানেও রয়েছে স্বস্তি। হাজতি বড় ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে আসা আব্দুর রহমান জানান, আমার ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে গেলে সেখানে সিরিয়ালের অজুহাতে প্রায় তিন ঘণ্টা বসে থেকেও দেখা করতে পারিনি। যখন এক কারা সদস্যকে তিনশ’ টাকা দিলাম সে সঙ্গে সঙ্গেই দেখা করিয়ে দিল। তিনি আরও বলেন, এমন দৃশ্য যে কেউ সেখানে দাঁড়িয়ে থাকলেই প্রতিনিয়ত দেখতে পারবেন। অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, এ টাকাটা সংগ্রহ করেন জনৈক এক কারারক্ষী। সরেজমিনে দেখা গেছে, স্পেশালভাবে কারাগারে থাকা স্বজনের সঙ্গে দেখা করার জন্য কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে গেলেই ওই কারারক্ষীর হাতে পাঁচশ’ টাকা গুজে দিলেই ভিতরে ঢুকিয়ে দেয়া হয় দেখা করার জন্য। সূত্রমতে, কারাগারের সবচেয়ে বেশি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে মেডিক্যালে। কারাবিধি অনুযায়ী যে রোগী আগে যাবেন তিনি মেডিক্যালে সিট পাবেন কিন্তু সেখানে চলে এর উল্টো। টাকার বিনিময়ে সুস্থদের সিট পাইয়ে দেয়া হয়। আর প্রকৃত অসুস্থরা থাকেন মেঝেতে। তবে কারা পরিদর্শকদল পরিদর্শনে গেলে অসুস্থদের বেডে রাখা হয় কিন্তু তারা চলে গেলে পূর্বের নিয়ম চালু হয়। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, মেডিক্যালে ১৫ দিন থাকার জন্য ১৫শ’ টাকা এবং এক মাস থাকার জন্য ২৫শ’ টাকা দিতে হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক হাজতি জানিয়েছেন, যে কেউ দিব্যি সুস্থ হয়েও অসুস্থতার সার্টিফিকেট নিয়ে শেবাচিম হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হন। সেখানে বসে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা, খাওয়া-দাওয়া এবং মোবাইল ফোনে কথা বলার অপার সুযোগ পাচ্ছেন। কতিপয় কারা চিকিৎসকের সঙ্গে আঁতাত করে সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করে দেয় দালালরা। ওই সার্টিফিকেটের জন্য প্রতিজন বন্দীকে দিতে হয় এক থেকে দুই হাজার টাকা। এ বিষয়ে জেলারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে কারা মেডিক্যালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ভাল বলতে পারবেন। পরে কারা মেডিক্যালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডাঃ খুরশিদ আলমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তা বন্ধ থাকায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অভিযোগ রয়েছে, প্রতি মাসে শুধু মেডিক্যাল থেকে আয় হয় তিন থেকে চার লাখ টাকা। চিকিৎসকও এর একটি অংশ পেয়ে থাকেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। সূত্রমতে, কারাগারের অভ্যন্তরে অবাধেই মিলছে ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য। কারাগারে বিক্রি হওয়া মাদকের বাইরেও রয়েছে ঘুমের ট্যাবলেটের ব্যবস্থা। কারা অভ্যন্তরে কতিপয় কারারক্ষীরা এসব মাদকদ্রব্য সরবরাহ করছেন বলেও নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো জানিয়েছে। তবে কারাগার থেকে মাদক উদ্ধারের ঘটনাও ঘটেছে ইতোপূর্বে কয়েকবার। বিশেষ করে কতিপয় সিআইডি ও মেডিক্যাল চিফ রাইটারের মাধ্যমে মাদক সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে। কারণ সিআইডি সদস্যদের গেটে তল্লাশি করা হয় না। তাই কোন প্রকার বাধা ছাড়াই কারা অভ্যন্তরে মাদক প্রবেশ করান কতিপয় অসাধু সদস্যরা। তবে মাদকের বিষয়টি জেলার সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। সদ্যকারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া একাধিক আসামি বলেন, একটি হত্যা মামলায় ফাঁসির দ-াদেশপ্রাপ্ত গৌরনদীর নন্দনপট্টি গ্রামের নান্নু মৃধার কারাগারের বেড থেকে অতিসম্প্রতি প্রায় ২০০ পিস ইয়াবা ও একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। সূত্রমতে, কারাগারে বসে নান্নু মৃধা ইয়াবার রমরমা ব্যবসা করে আসছিল। একজন কারাবন্দীর কাছ থেকে এক পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারের পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর বিক্রেতা নান্নু মৃধার নাম প্রকাশ পায়। পরবর্তীতে তার (নান্নু মৃধা) বেড তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ২০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারসহ একটি উন্নতমানের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। সূত্রমতে, কারাগারের অভ্যন্তরে ব্যক্তিগত মোবাইলও অবৈধভাবে ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে। কারাগারে এই মোবাইলের সাংকেতিক নাম ‘ময়না পাখি’। মোবাইলের মালিক নিজেও ব্যবহার করেন এবং ভাড়াও দেন। ফলে ভিতরের সব খবরা-খবর এক নিমেষেই বাহিরে চলে যায়। অভিযোগ রয়েছে, যেসব সন্ত্রাসী কারাগারে দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে, তারা বাইরের অপরাধ জগতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখছে মোবাইলের মাধ্যমে। যার ফলে যে কোন অপরাধ কর্মকা-সহ মাদক ব্যবসা নির্বিঘেœ পরিচালনা করতে সক্ষম হয় তারা কারাগারে বসেই। জানা গেছে, কারাগারের সব দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে খোঁজ খবর রাখার জন্য ডিআইজি প্রিজনের পক্ষ থেকে একজন সিআইডি সদস্য রয়েছেন বরিশাল কারাগারে। তবে ডিআইজির কাছে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের বড় বড় দুর্নীতি ও অনিয়মের কথা গোপন রাখা হয়। ফলে কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আঁতাত করে এখান থেকে প্রতিমাসে মোটা অংকের টাকা পাচ্ছেন দায়িত্বরত কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা। যে সব কয়েদি কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে থাকেন তারাই রাজত্ব করেন কারাগারজুড়ে। আর যারা কারা কর্তৃপক্ষের মন জোগাতে ব্যর্থ হন, তাদের সইতে হয় নির্যাতন। আর তাদের কাজ করতে হয় ফুলের বাগান, সুইপার চালি, তাঁত চালি বা রান্না ঘরে। একাধিক বন্দীরা জানান, খাবারের তালিকায় মাছের যে সাইজ উল্লেখ থাকে তা কখনই দেয়া হয় না। তালিকায় ইলিশ, রুই, কাতলসহ বিভিন্ন মাছ খাওয়ানোর কথা থাকলেও প্রায় প্রতিদিনই দেয়া হয় পুকুরে চাষ করা পাঙ্গাস মাছ। আর যে মাংস খাওয়ানো হয় তাও পরিমাণে খুব কম। তবে টাকার বিনিময়ে ক্যান্টিন থেকে চড়া মূল্যে মাছ ও মাংস কিনে খেতে পারেন বন্দীরা। তাই যাদের সামর্থ্য আছে তারাই কারাগারে বসে ভাল-মন্দ কিনে খেতে পারেন। সদ্য জেল থেকে বের হওয়া কয়েকজন হাজতি জানান, জেলখানার খাবারের মান খুবই নিম্নমানের। বন্দীদের সংখ্যা বেশি দেখিয়ে অতিরিক্ত খাবার বরাদ্দ নেয় কারা কর্তৃপক্ষ। পরে তা বাইরে বিক্রি করে দেয়া হয়। কারাগার সূত্রে জানা গেছে, কারাগারের প্রধান গেট থেকেই ভিতরে প্রবেশ করে এসব নিম্নমানের খাবার। খাবার ভিতরে প্রবেশ করানোর সময় নিম্নমানের অভিযোগ তুলে তা অনেক সময় গেটে আটকে দেন গেট ইনচার্জ। এ নিয়ে চলে খাবার সরবরাহকারী ও গেট ইনচার্জের দেনদরবার। পরবর্তীতে রহস্যজনক কারনে ওই খাবারই ভালমানের হিসেবে কারাগারের ভিতরে প্রবেশ করানো হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নামের ভুলসংশোধনী, আমদানি, ওয়ার্ড, গোসল, খাবার, ক্যান্টিন, হাজতিদের টাকার কমিশন, দেখার ঘর, মেডিক্যাল সবমিলিয়ে প্রতি মাসে কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা উপার্জন হয় অবৈধভাবে। অভিযোগ রয়েছে- জেলার, ডেপুটি জেলার থেকে শুরু করে হাসপাতালের চিকিৎসক, সুবেদার, কারারক্ষীরা এ টাকার ভাগ পাচ্ছেন। বর্তমানে জেল সুপারের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোঃ নুরুজ্জামান। তাই তিনি বেশি খোঁজ খবর না নেয়ায় কারাগারের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির আঁতুর ঘরে পরিণত হয়েছে। কারাগারের ভেতর ও বাইরের সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জেলার মোঃ ইউনুস জামান বলেন, বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে যে জনবল রয়েছে তা ৬৩৩ বন্দীর জন্য কিন্তু কারাগারে প্রায় দ্বিগুণ বন্দী রয়েছেন। তাই এখানকার নিরাপত্তা জোরদার করতে আরও কারারক্ষী প্রয়োজন। এ বিষয়ে জানতে জেল সুপারের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোঃ নুরুজ্জামানের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করা হলেও তিনি তা রিসিভ না করায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কারা ডিআইজি (প্রিজন) মোঃ ছগির মিয়া বলেন, কারাগারে যদি কোন দুর্নীতি ঘটে তাহলে সকল অনিয়ম, দুর্নীতির বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য, ১৮২৯ সালে ২০.৩ একর জমির ওপর বরিশালে কারাগার নির্মাণ করা হয়। পরে ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই এটিকে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তবে জেলা কারাগার থেকে কেন্দ্রীয় কারাগারে উন্নীত করা হলেও সুযোগ-সুবিধা বাড়েনি একাংশও। মাত্র ৬৩৩ জন ধারণ ক্ষমতার বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে বর্তমানে বন্দী রয়েছেন ১২৬০ জন। এদের মধ্যে ফাঁসির আসামি ৭২ জন। যার মধ্যে দুইজন নারী। সিনিয়র জেল সুপার, জেলার, ডেপুটি জেলার ও চিকিৎসকসহ বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে মোট ৩৩৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। এখানে পুরুষ কারারক্ষীর সংখ্যা ২৫১ জন। এর মধ্যে পদ শূন্য রয়েছে ১১টি। মহিলা কারারক্ষী হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছেন ১১ জন। এছাড়া এখানে চারটি ডেপুটি জেলারের পদ থাকলেও দুটিই শূন্য।
×