ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কবি শঙ্খ ঘোষ

প্রকাশিত: ০৭:৩৭, ৫ অক্টোবর ২০১৮

কবি শঙ্খ ঘোষ

শঙ্খ ঘোষের সঙ্গে কথা হয় ২৬ সেপ্টেম্বর তার বাসায়। সাদা পাঞ্জাবি ও ধুতি পরা কবিকে দেখে ভাবলাম এক শ্বেতশুভ্র সাধককে একেবারে কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হলো। নিবিষ্ট সাধনার এক জ্ঞানাচার্যকে অতি সাধারণ মানুষের অবয়বে দেখে বিস্মিত হলাম। কথা বলার সময় এখানেও মনে হলো গলার স্বর একটু ক্ষীণÑ কিন্তু উচ্চারণ একেবারে স্পষ্ট। সাধারণের মধ্যে যে অসাধারণত্ব ক্রমেই সেটা স্পষ্ট হতে লাগল। আমাকেও সহজ আর স্বাভাবিক হতে বেশি সময় নিতে হয়নি। এরপর দীর্ঘ জীবনের অভিজ্ঞতায় স্মরণ চেতনায় যা স্পষ্ট হয়ে আছে বলতে লাগলেন পর্যায়ক্রমিকভাবে। আমিও বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর চেয়ে তার কাছ থেকে জানতে চেষ্টা করি। নিজেই বলে যাচ্ছিলেনÑ ১৯৩২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলার মামার বাড়িতে জন্ম নেন এই কৃতীপুরুষ। পিতা মণীন্দ্র কুমার ঘোষ আর মাতা অমলা বালা ঘোষ। তবে বংশানুক্রমিকভাবে পৈত্রিক বাড়ি বাংলাদেশের বরিশাল জেলার বানারিপাড়া গ্রামে। পড়াশুনা শুরু করেন পাকশীর চন্দ্রপ্রভা বিদ্যাপীঠে। বাবার ছিল বদলির চাকরি। সে কারণে অবিভক্ত বাংলার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতে হয়। ’৪৭-এর দেশ বিভাগের সময় অসমের গোয়াহাটিতে ছিলেন। প্রসঙ্গক্রমে এসে গেল সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্পে জড়ানো দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ’৪৭-এর দেশ বিভাগ। ১৫ বছরের উদীয়মান কিশোর কোনভাবেই এই অনাকাক্সিক্ষত কর্তনকে মানতে পারেননি। সে স্মৃতি জানামাত্রিকে এখনও তাড়া করে। গোয়াহাটি থেকে ম্যাট্রিক পাস করে চলে আসেন কলকাতায়। ভর্তি হলেন প্রেসিডেন্সি কলেজে। অবিভক্ত বাংলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসে যে মহাবিদ্যালয়টি আজও স্বর্ণাক্ষরে লিখিত। এই কলেজ থেকে ১৯৪৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ১৯৫১ সালে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। এরপর আসলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী হিসেবে। বাংলা সাহিত্যের ওপর জ্ঞানচর্চায় নিজেকে সম্পূর্ণ উজাড় করে দিলেন। ১৯৫৩ সালে এমএ ডিগ্রীও অর্জন হলো। ইতোমধ্যে শিক্ষার্থী জীবনে ঘটে যায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাপ্রবাহ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে সাহিত্য পত্রিকাটি বের হতো তার সম্পাদক ছিলেন শঙ্খ ঘোষ। ’৪৭-এর দেশ বিভাগের উত্তাল সময়ের রেশ না কাটতেই শুরু হলো ’৫২ সালে বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন। এখনও মনে আছে সেই আন্দোলনের সঙ্গে কিভাবে নিজেকে একীভূত করতে পেরেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য পত্রিকার এই ভাষা সংগ্রামের ওপর অনেক প্রবন্ধও ছাপা হতো। তবে শৈল্পিক দ্যোতনায় নিজেকে সমর্পণ করার গল্প তো অনেক আগের। মাত্র ৯ বছর বয়স। বালকোচিত তাড়নায় কিভাবে রবীন্দ্র অনুভবে আপন সত্তাকে বিলীন করা। পিতা মণীন্দ্র ঘোষ ছিলেন রবীন্দ্রভক্ত এক সাহিত্যানুরাগী। রবীন্দ্রনাথের কবিতা, গল্প, নাটক নিয়ে বাবার নাট্য নির্দেশনায় মঞ্চস্থ হতো বিভিন্ন নাটক। ৯ বছরের বালক শঙ্খ ঘোষও বাবার নির্দেশনায় পরিচালিত ‘মুক্তধারা’ নাটকে অভিনয় করেন। রবীন্দ্রনাথের আলোকিত জগতে সেই যে প্রবেশ করা আজও সেই আলোর বিকিরণে নিজেকে পূর্ণ আর তৃপ্ত করছেন। এই ‘মুক্তধারা’ নাটকটি প্রদর্শিত হয়েছিল মূলত রবীন্দ্রনাথের ৮০ বছর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে। ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বললেন, সেটাই ছিল কবির অন্তিম জন্মবর্ষ। স্মৃতিতে আছে রবীন্দ্রপ্রয়াণের সর্বশেষ যাত্রার বেদনাদায়ক অনুভব। রবীন্দ্রনাথকে জানা আর বুঝতে চাওয়ার আগ্রহ ক্রমশ বেড়েই চলে। ফলে পড়ে ফেলেন মাত্র ১২ বছর বয়সে বিখ্যাত রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ প্রমথ নাথ বিশীর ‘শান্তিনিকেতন’ বইটি। সঙ্গে সঙ্গে কাব্যিক অনুভবে নিজের শিল্পীসত্তাও অনুরণিত হতে থাকে। স্মৃতির মিনারে আজও উজ্জ্বল হয়ে আছে ১২ বছর বয়সে লেখা কবিতা। শুধু তাই নয় ১৫ বছর পর্যন্ত যে ছন্দোবদ্ধ আবেগে পদ্য নির্মাণ করলেন সেগুলোকে কখনও তার কবিতা মনে হয়নি। কবি শঙ্খ ঘোষ কথাটি বলে মুচকি হাসলেন। কারণ তিনি তো আসলে কবি হিসেবেই বেশি পরিচিত। প্রাবন্ধিক হিসেবেও তার নান্দনিক দ্যোতনা কোন অংশে কম নয়। শব্দ চয়ন, বাক্যের কায়দা কানুন, শৈল্পিক সুষমা তার সঙ্গে ব্যাপ্তি আর গভীরতা একীভূতর যে মাত্রায় তাঁকে নিয়ে যায় সেখানে তিনি নিজেই তাঁর তুলনা। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনেও কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকতার পেশায় নিজেকে সম্পৃক্ত করে বাংলা সাহিত্যের পর্যায়ক্রমিক ধারাকে শুদ্ধতার আবহে চর্চাই শুধু করেননি অসংখ্য ছাত্রছাত্রীর মাঝে তা ছড়িয়ে দেয়ারও চেষ্টা করেছেন। রবীন্দ্রভক্ত এই খ্যাতমান কবি আলাপচারিতার মাঝে বলে ফেলেন- ৩০ এর দশকের কল্লোল যুগের কবিদের রবীন্দ্রনাথকে পাশ কাটানোর কথা, প্রশ্নটা আমার তরফ থেকেও ছিল। সাবলীলভাবে উত্তর দিলেন তারা সবাই রবীন্দ্র অনুরাগী ছিলেন। হাসতে হাসতে স্মরণ করলেন কবি বুদ্ধদেব গুহ নাকি এক রাত পুরো রবীন্দ্রনাথের ‘পুরবী কাব্যগ্রন্থটি পড়ে তার পরের দিন নিমগ্ন হলেন আর পরের দিন আবারও সেই কবির বলয় থেকে বের হওয়ার চেষ্টায়। শ্রদ্ধাভরে জীবনানন্দ দাশ, কাজী নজরুল ইসলাম, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, অমিয় চক্রবর্তী সবার কথা বলতে লাগলেন। বাংলা সাহিত্যের ক্রমবিবর্তনের ধারায় কল্লোল যুগের কবিরা নিজেদের প্রতিভাদীপ্ত মননশৌর্যের অনন্য সৃজনব্যক্তিত্ব যারা এই সমৃদ্ধ আঙিনাকে নানা মাত্রিকে ভরিয়ে তুলেছেন। বাংলাদেশের কবিদের কথা বলতে গিয়ে মোহাম্মদ রফিক, শামসুর রাহমান, সৈয়দ সামসুল হক, আবদুল মান্নান সৈয়দ এবং আল মাহমুদের কথা বললেন। তবে আল মাহমুদের আদর্শিক চেতনা এবং কাব্যজগতে পরিবর্তনের মোড় ঘোরানোকে তিনি পছন্দ করেননি কবিতার জগতে অত্যন্ত সফলভাবে নিজেকে নিবেদন করার পুরস্কারও পেয়েছেন। এর মধ্যে বিশ্বভারতীর দেশিকোত্তম পুরস্কার, ভারত সরকারের পদ্মভূষণ পুরস্কার এবং ২০১৬ সালে পান জ্ঞানপীঠ পুরস্কার। শ্রেষ্ঠত্বের বিচারে তার কাব্যগ্রন্থের জন্য পাওয়া এসব সম্মাননায় খুশি হলেও মূল লক্ষ্য ছিল সাহিত্য সাধনায় শৈল্পিকসত্তাকে বিকাশ করে নিজের আনন্দে শুধুই লিখে যাওয়াÑ আর কিছু নয়, অন্য কিছু নয়। সেভাবে এখনও লিখে চলেছেন। সময়ের দাবি মেটানো, আধুনিকতার জগতে নিজেকে সম্পৃক্ত করাই নয় বর্তমান প্রজন্মকে উজ্জীবিত করতে তাদেরও অনেক দায়বদ্ধতা আছে বলে তিনি মনে করেন। নতুন প্রজন্ম থেকে তৈরি হওয়া অসংখ্য উদীয়মান কবি-সাহিত্যিকের প্রতি শঙ্খ ঘোষের আর্শীবচন, অভিবাদন, তিনি মনে করেন এসব সম্ভাবনাময় শিল্পী-সাহিত্যিক বাংলা সাহিত্যের সমৃদ্ধ ধারা ও চেতনাকে লালন করে আরও উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে যাবে। বাংলা ভাষা অত্যন্ত সমৃদ্ধ এবং ঐতিহ্যিক। এই ক্রমবর্ধমান কৃষ্টি সংস্কৃতিকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে নিজস্ব সৃজন ক্ষমতাকে বেগবান করতে হবে। ব্যক্তিক প্রতিভা শুধু নিজেকেই পূর্ণ করে না চারপাশের প্রতিবেশও ভরিয়ে তোলে। এই সময়ের সৃষ্টিশীল মানুষরা সেটাই করবে এই প্রত্যাশা আর আকাক্সক্ষায় তিনি বাংলা সাহিত্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচনেও প্রত্যয়ী। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে ভগিনী নিবেদিতার যে আলাপচারিতা, যোগাযোগ, দর্শন এবং চিঠিপত্র আদান প্রদান এসব নিয়েও কথা বলেন শঙ্খ ঘোষ। রবীন্দ্রভক্ত এই বিদেশিনী কবির সৃজনশীলতায় মুগ্ধ-বিমোহিত। শুধু তাই নয় অনেক পরামর্শ, সুচিন্তিত অভিমত এবং গঠনমূলক পর্যালোচনায় কবিকে বিশেষভাবে উৎসাহিতও করতে পারতেন। শঙ্খ ঘোষ উল্লেখ করলেন ‘গোরা’ উপন্যাসের সুচরিতা এবং গোরার সম্পর্ক নিয়ে কবি যখন চিন্তিত বিশেষ করে গোরা নিজের পরিচয় জানার পর। তখন নাকি নিবেদিতার পরামর্শে কবি গোরা-সুচরিতার সম্পর্কের সুনির্দিষ্ট গন্তব্য নির্ধারণ করেন। কোন এক সময় আমার প্রশ্নও তাঁর সুচিন্তিত অভিব্যক্তিতে স্পষ্ট হয়। বেগম রোকেয়ার জন্ম ১৮৮০ সালেÑ মৃত্যু ১৯৩২ সালে। এই সময়টুকু রবীন্দ্র বলয়ের এক বিকাশমান যুগ। আর বিংশ শতাব্দীর শুরুতে বেগম রোকেয়াও অবিভক্ত বাংলা তোলপাড় করে দিলেন তাঁর যুগের অগ্রগামী মননশীলতায়। এর আগে কোন মুসলমান নারী এমন সদম্ভে, উদাত্তকণ্ঠে পুরুষ শাসিত সমাজের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াননি। অবরোধ প্রথাকে ভেঙ্গে পেছনে ফেলে যেভাবে জনসমক্ষে বেগম রোকেয়া নিজেকে উন্মোচন করলেন শুধু সৃজনদ্যোতনাই নয় বিভিন্ন নারী প্রগতির কর্মযজ্ঞে নিজের অবিস্মরণীয় অবদান প্রদর্শন করে। সমকালীন আঙিনায় রবীন্দ্রনাথও ছিলেন সৃজন-সম্পদে সমৃদ্ধ এক কালজয়ী মহাপুরুষ। শুধু তাই নয় অসংখ্য কর্মযোগে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানো এক প্রজাহিতৈষী জমিদার। কবি নিজেও তার চারপাশের আধিপত্য আর ঔদ্ধত্যের বেড়াজাল ভেঙ্গে খেটে খাওয়া নি¤œবিত্তের অধিকারহীন মানুষদের পাশে চলে এসেছিলেন। চৈতন্যের এমন সাদৃশ্য থাকা সত্ত্বেও কবিগুরু আর বেগম রোকেয়া কেন একে অপরের কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রাখলেন। শঙ্খ ঘোষ বলছিলেন বেগম রোকেয়া যে মহতী কাজে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন সেখান থেকে অন্য কোন দিকে নজর দেয়ার তাঁর সময়ও ছিল না। বেশি দিন বাঁচেনওনি। মাত্র ৫২ বছর বয়সে চলে যান। তৎকালীন শুধু মুসলিম নয় সিংহভাগ নারী সমাজ যেভাবে অজ্ঞানতার অন্ধকারে ডুবে ছিল সেখান থেকে তাদের আলোর পথে নিয়ে আসতে যে সময়ের দরকার ছিলÑ সেটুকুও বেগম রোকেয়া পাননি। আর কবিগুরু? এক নিবেদিত নারী জাতির অগ্রনায়ককে দূর থেকেই শ্রদ্ধা আর আশীর্বাদ করেছিলেন। হয়তবা সে কারণেই যোগাযোগের কোন প্রশ্ন আসেনি। কবি শঙ্খ ঘোষের এক অনবদ্য রচনাশৈল তাঁর ‘ওকাম্পোর রবীন্দ্রনাথ।’ দক্ষিণ আমেরিকার একটি দেশ আর্জেন্টিনার এক বিখ্যাত লেখিকা এবং রবীন্দ্রভক্ত ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোকে নিয়ে লেখা এই বইটি রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে ভিক্টোরিয়ার নির্মল সম্পর্কের যে গভীর বোধ তাকে অত্যন্ত পরিশীলিতভাবে উপস্থাপন করতে গিয়ে শঙ্খ ঘোষ কবি আর বিদেশিনীর যে চিত্র এঁকেছেন তা যেমন শৈল্পিক শৌর্যে মহীয়ান একইভাবে সম্পর্কের বেড়াজালেরও এক শুদ্ধ আত্মিক মানস চেতনা। এ প্রসঙ্গে গ্রন্থকার নিজেই বলেন, বইটি আসলে অনেক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে লিখতে হয়েছে। কেবল তাই নয় নির্ভরযোগ্য সূত্রের ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দিতে হয়। সমসাময়িক কালের ভিক্টোরিয়াও রবীন্দ্রনাথের চিন্তা-চেতনা, তাদের অবস্থান, দেখা-সাক্ষাত, পত্রালাপ এমনকি রবীন্দ্রনাথের চিত্রশিল্পী হওয়ার সম্ভাবনার প্রতি ভিক্টোরিয়ার নজর সবই অত্যন্ত সুসংবদ্ধভাবে হাজির করতে হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের ওপর ওকাম্পোর অনুভূতিও তুলে আনতে হয়েছে। আঁন্দ্রে জিদের অনুবাদ পড়ার পর ভিক্টোরিয়ার যে আবেগাপ্লুত মনন জগত তাকেও যথার্থভাবে দেখাতে হয়েছে। সত্যের অপলাপ করার চেষ্টা করিনি। নির্মল সম্পর্কের এমন চিরস্থায়ী বোধ অত্যন্ত সযত্বে, পরিশীলিতভাবে পাঠক সমাজকে উপহার দিতে হয়েছে। এমন সাবলীল এবং অকপটে কথাগুলো বলে গেলেন মুগ্ধ বিস্ময়ে অবাক হওয়া ছাড়া আর কিছু ছিল না।
×