ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নেইমারের হ্যাটট্রিক, পিএসজির প্রথম জয়

প্রকাশিত: ০৭:০৩, ৫ অক্টোবর ২০১৮

নেইমারের হ্যাটট্রিক, পিএসজির প্রথম জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অনেকদিন পর নিজের চেনা ছন্দে ফিরেছেন নেইমার। ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলে বুধবার রাতে দুর্দান্ত রেকর্ডগড়া হ্যাটট্রিক করেছেন। প্যারিসে ‘সি’ গ্রুপের ম্যাচে সার্বিয়ার ক্লাব রেড স্টার বেলগ্রেডের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করেন সাবেক বার্সিলোনা তারকা। আর তাতে পিএসজি ৬-১ গোলের বিশাল জয় পেয়েছে। এবারের মৌসুমে ফরাসী জায়ান্টদের চ্যাম্পিয়ন্স লীগে এটি প্রথম জয়। গ্রুপের আরেক ম্যাচে শেষ মিনিটের গোলে নেপোলির কাছে ১-০ ব্যবধানে হেরেছে লিভারপুল। প্যারিসের পার্ক দ্য প্রিন্সেস স্টেডিয়ামে রেকর্ডগড়া হ্যাটট্রিকের পথে নেইমার দু’টি গোল করেন দৃষ্টিনন্দন ফ্রিকিক থেকে। ২০০৯ সালে ফ্রিকিক থেকে দুই গোল করেছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। এরপর চ্যাম্পিয়ন্স লীগে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে এক ম্যাচে ফ্রিকিক থেকে সরাসরি দুটি গোল করেছেন নেইমার। আর ইউরোপ সেরার আসরে ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়দের মধ্যে সর্বোচ্চ গোলদাতার (৩০) তালিকায় নেইমার স্পর্শ করেছেন সাবেক তারকা মিডফিল্ডার কাকাকে। লিভারপুলের কাছে হার দিয়ে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লীগ শুরু করতে হয় পিএসজিকে। তাই রেড স্টার বেলগ্রেডের বিপক্ষে জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছিল না তারা। তবে ম্যাচের আগে দলের সেরা তারকা নেইমার পুরোপুরিভাবে ফিট ছিলেন না। পায়ের ইনজুরিতে ভুগছেন তিনি। অথচ মাঠে নেমেই নিজের সেরাটা দিয়েছেন বিশ্বের সবচেয়ে দামী ফুটবলার। ২২ মিনিটের মধ্যে প্রতিপক্ষের জালে দু’গোল দেন নেইমার। ২০ মিনিটে নেইমারকে ডি বক্সের বাইরে ফাউল করেন রেড স্টার বেলগ্রেডের সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার ভুজাদিন সাবিচ। ফলে ২২ গজ দূর থেকে ফ্রিকিক পায় পিএসজি। সেই ফ্রি কিক থেকে গোল করেন নেইমার। প্রতিপক্ষের মানব দেয়ালের ওপর থেকে গোল করে নিজের পারদর্শিতা আবার দেখিয়েছেন তিনি। প্রথম গোলের রেশ কাটতে না কাটতে দ্রুতই পিএসজিকে আরেক গোল উপহার দেন নেইমার। ২২ মিনিটে ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপেকে পাস দিয়ে অন্যপ্রান্ত দিয়ে রেড স্টার বেলগ্রেডের ডি বক্সে ঢুকে যান নেইমার। তাকে দেখে বল এগিয়ে দেন এমবাপে। বল পেয়ে ডান পায়ের শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ব্রাজিলিয়ান অধিনায়ক। এরপর প্রথমার্ধে আরও দু’গোল করেছে পিএসজি। তবে এই গোল দু’টি ছিল উরুগুয়ের স্ট্রাইকার এডিনসন কাভানি ও আর্জেন্টিনার এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার। ৩৭ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে ফ্রিকিক নিয়েছিলেন নেইমার। এবার আর গোল করতে পারেননি তিনি। তবে ডি বক্সের ভেতর বল পেলে গোলমুখে শট নেন কাভানি। তার শট প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের পা’য়ে লেগে জালে প্রবেশ করে। ফলে ৩-০ গোলে লিড নেয় পিএসজি। বিরতির আগে ব্যবধান ৪-০ করেন ডি মারিয়া। বেলজিয়ামের রাইটব্যাক থমাস মিউনিরের যোগান দেয়া বল থেকে গোল করেন ডি মারিয়া। বিরতির পর গোলের জন্য মরিয়া ছিল পিএসজি ও রেড স্টার বেলগ্রেড দু’দলই। কিন্তু গোলের দেখা পেতে ম্যাচের ৭০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে পিএসজিকে। কাভানির কাছ থেকে বল পেয়ে ম্যাচে প্রথম গোলের স্বাদ নেন এমবাপে। এই গোলের কিছুক্ষণ পর পিএসজির জালে প্রথমবারের মতো বল পাঠায় রেড স্টার বেলগ্রেড। গোলটি করেন বসনিয়া এ্যান্ড হার্জেগোভিনার এ্যাটাকিং মিডফিল্ডার মার্কো মারিন। এতে ম্যাচের স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৫-১। ৮১ মিনিটে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন নেইমার। এবারও ফ্রিকিক থেকে গোল করেন তিনি। নেইমারের হ্যাটট্রিকে উচ্ছ্বসিত পিএসজির কোচ থমাস টাচেল বলেন, দলের পারফর্মেন্সে আমি অনেক বেশি খুশি। কিন্তু নেইমারের পারফর্মেন্স রোমাঞ্চকর। আপনি যদি প্রতি ম্যাচে ক্ষুধার্ত অনুভব করেন, তবে আপনাকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বল দখলে রাখতে হবে এবং হৃদয় দিয়ে খেলতে হবে। ইউরোপে সেরা খেলোয়াড়দের মধ্যে একজন হলো নেইমার এবং আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর দলের জয়ে ভূমিকা রাখতে পেরে নিজেকে সুখী মনে করছেন নেইমার। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, আমার আসল লক্ষ্য থাকে দলের জয় নিশ্চিত করা। কিন্তু যখন আমি গোল করি তখন নিজেকে অনেক বেশি সুখী মনে করি।
×