ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বিআইবিএমের গবেষণা প্রতিবেদনে তথ্য;###;কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানো প্রতিবেদনের সঙ্গে বাস্তবতার কোন মিল নেই ॥ ব্যাংকের কমপ্ল্যায়েন্স পরিপালনের চাপ ও ব্যয় উভয়ই বাড়ছে

নিজেদের সুবিধায় তথ্য দেয় ব্যাংক

প্রকাশিত: ০৪:৫৮, ৫ অক্টোবর ২০১৮

নিজেদের সুবিধায় তথ্য দেয় ব্যাংক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী বছরে ২৬৩টি প্রতিবেদন দিতে হয় দেশে কার্যরত সরকারী-বেসরকারী ব্যাংকগুলোকে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানো এ প্রতিবেদনের সঙ্গে বাস্তবতার কোন মিল নেই। ব্যাংক তার সুবিধার্থে অসত্য তথ্য দেয়। ফলে ব্যাংকের কমপ্ল্যায়েন্স পরিপালনের চাপ ও ব্যয় উভয়ই বাড়ছে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রবন্ধে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘কস্টস ফর কমপ্ল্যায়েন্স উইথ রেগুলেশনস ইন ব্যাংকস’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এ গবেষণা সম্পন্ন করেন। গবেষণা দলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক এবং বিআইবিএমের অনুষদ সদস্য মোঃ আব্দুল কাইউম; বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক অতুল চন্দ্র প-িত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং রেগুলেসন এ্যান্ড পলিসি ডিপার্টমেন্টের উপ-মহাব্যবস্থাপক রুপরতন পাইন। গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক (গবেষণা, উন্নয়ন এবং পরামর্শ) ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী। মূল প্রবন্ধে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী বছরে ২৬৩টি রিপোর্ট দিতে হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানো এ প্রতিবেদনের সঙ্গে বাস্তবতার কোন মিল নেই। ব্যাংক তার সুবিধার্থে অসত্য তথ্য দেয়। এটি পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে রিপোর্টের সংখ্যা কমিয়ে সমন্বয় সাধন করতে হবে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা, বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক এবং পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধূরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি প্রমুখ। বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী বলেন, ব্যাংকে নিয়ম কানুন মেনে ব্যবসা করে আসছে। তবে আগে এটি ভিন্ন নামে কমপ্ল্যায়েন্স। অনেকের কমপ্ল্যায়েন্স নিয়ে বক্তব্য দেয়া যা সঠিক নয়। কমপ্ল্যায়েন্সের ক্ষেত্রে কোন ছাড় দেয়া যাবে না। বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, কমপ্লায়েন্সের খরচ না কমিয়ে যৌক্তিক করতে হবে। কিছু প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ যেগুলো আলাদা করে হিসাব নিকাশ করলে কমপ্ল্যায়েন্সের প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাবে। কমপ্লায়েন্সের কোন বিকল্প নেই। এটি ব্যাংকের কর্র্মীসহ সব পর্যায়ের অংশীজনদের স্বার্থ রক্ষা করে। এজন্য খরচ না কমিয়ে যৌক্তিকিকরণ করতে হবে। পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটেছে এ কারণে ব্যাংকের রিপোটিংয়ে এখন কোন সমস্যা নেই। নন-কমপ্লায়েন্স থাকার সুযোগ নেই। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাত থেকে আটটি বিভাগ একই ধরনের তথ্য চায় এটি সমন্বয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক মোঃ ইয়াছিন আলি বলেন, ব্যাংকগুলোর সুদ কমানোর কারণে কমপ্ল্যায়েন্স মেইনটেইন করা কঠিন বলে অভিযোগ করেছে যা সঠিক নয়। পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা সুদ কমিয়ে ঋণ নিয়েছে। আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক হস্তক্ষেপ করে। সবার আগে জনগণের স্বার্থ তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইন সঠিকভাবে পরিপালন করতে হবে।
×