ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সুমন্ত গুপ্ত

স্মলফুট

প্রকাশিত: ০৭:১১, ৪ অক্টোবর ২০১৮

স্মলফুট

এই ছোট্ট ছোট্ট পায়ে চলতে চলতে ঠিক পৌঁছে যাব... ছোট্ট পায়ের ছাপ দেখেই অনুমান করা হয়েছিল পৃথিবীতে মানুষের অস্তিত্ব। এবং বরফের উপর প্রথম যে পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছিল, যে ছবি আমরা ইতিহাস বইতে দেখি তা কিন্তু আদিম গুহামানবের। সোজা বাংলায় যাদের ইয়েতি বলা হয়। এখনও পৃথিবীর নানা প্রান্তে ইয়েতির দেখা মেলে। ‘স্মলফুট’—এ এক ছোট্ট ইয়েতির গল্প। যে তার ছোট্ট গ্রামের বাইরে বেরিয়ে বিশ্বকে দেখতে চায় এবং তার সঙ্গীদের দেখাতে চায় এই পৃথিবীতে এখনও মানুষ অবশিষ্ট রয়েছেন। মিগো। আর দশটা ইয়েতির মতোই খুব সাধারণ এক ইয়েতি। ছোটবেলা থেকে স্মলফুট নামের দানবের কথা শুনে বড় হয়েছে সে। তবে মিগোর শোনা এই পৌরাণিক কাহিনীই একদিন সত্যি হয়ে গেল। আকাশ থেকে উড়ে আসা এক দানবের মাঝে স্মলফুটকে আবিষ্কার করল মিগো। একটা সময় বিশ্বাস করতে শুরু করল যে, মানুষ বলতে কিছু একটা সত্যিই আছে। যাদের পা ইয়েতির থেকে ছোট। যাদের মিগোরা চেনে স্মলফুট নামে। বিখ্যাত লেখক সেরেজিও পাবলোর ইয়েতি ট্রেকস গল্প থেকে এই ছবির অনুপ্রেরণা। স্মলফুট ইয়েতিদের জগতটাকে ঘুরে দেখাতে চায়। ইয়েতিদের নিয়ে অনেক মিথ প্রচলিত রয়েছে। সবার ধারণা একমাত্র বরফে ঢাকা হিমালয়ের চুড়াতেই ইয়েতিরা থাকে। যে তার বাবা ডরগেলের পাদাঙ্ক অনুসরণ করতে পেরে খুশি। এরকমই একদিন ঘুরতে ফিরতে হঠাৎ করে সে ছোট্ট একটি পায়ের ছাপ আবিষ্কার করে। এবং ঘটনাচক্রে সেটি একটি মানুষের পায়ের ছাপ। যার নাম প্র্যাসি। সেই তথ্য সে তাদের দলনেতা স্টোনকিপারকে জানায়। এদিকে মানুষের সঙ্গে সখ্য স্থাপন করতে চায় মিগো, এ রকম একটা আভাস পেয়েই তাকে গ্রাম ছাড়া করেছিল স্টোনকিপার। পার্সি প্যাটারসন। টেলিভিশনে কর্মরত পার্সি পাহাড়ে গিয়েছিল নিজের কাজ করতে। কিন্তু মাঝপথে যে কোন ইয়েতির সঙ্গে দেখা হয়ে যাবে, সেটা কে জানত! মিগো আর পার্সি-দুজনেই অবাক হয় একে অপরকে দেখে। পার্সি পায় ভয়, আর মিগোর মনে জেগে ওঠে স্মলফুটদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার আগ্রহ। পার্সি পালিয়ে আসে ইয়েতিদের হাত থেকে। কিন্তু মিগো কি এত সহজে পার্সির পিছু ছাড়বে? প্রশ্নই ওঠে না। স্মলফুটদের নিয়ে অসম্ভব আগ্রহ মিগোর। বাকি ইয়েতিরা যখন স্মলফুট ব্যাপারটিকে গল্প বলে উড়িয়ে দিল, তখন ঠিক করল মিগো-সত্যিটা সবার সামনে আনবে সে। লোকালয়ে চলে এল সে পার্সির পেছন পেছন। কথা বলার চেষ্টা করল। কিন্তু মানুষ তার কথা বুঝলে তো! এই এ্যানিমেশন ফিল্মটি শিশুদের জন্য বেশ উপভোগ্য। এছাড়াও বাচ্চাদের জন্য একটি ভাল বার্তাও দেয়। ‘যদি তুমি কোন কাজ করবে বলে মনস্থির কর, তাহলে পথে যত বাধা আসুক না কেন সব অতিক্রম করে তুমি তোমার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে।’ এই সিনেমার গানগুলোও খুব উপভোগ্য। বেশকিছু মজার মুহূর্ত রয়েছে। তবে স্ক্রিপ্ট আর একটু ছোট হলে বোধহয় ভাল হতো। এটি ছোটদের উপযুক্ত করেই বানানো। সার্গিও পাবলোসের ‘ইয়েতি ট্র্যাক’ বইটির ওপর নির্ভর করে তৈরি হয়েছে স্মলফুট। চ্যানিং টটাম, জেমস করডন, জেনডায়া, কমন, লেব্রোন জেমসসহ আরও অনেকের কণ্ঠ শোনা যাবে এই সিনেমায়। ওয়ার্নার এ্যানিমেশন গ্রুপের সঙ্গে চলচ্চিত্রটির পেছনে আরও আছে সনি পিকচার্স ইমেজ ওয়ার্কস।
×