ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে জানালেন দুদক চেয়ারম্যান

সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার তদন্ত করবে দুদক

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ৪ অক্টোবর ২০১৮

সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার তদন্ত করবে দুদক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার দায়ের করা মামলার তদন্ত করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার সকালে আদালতের মাধ্যমে মামলার এফআইআর কপি দুদকে পৌঁছেছে বলে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। একইসঙ্গে অনন্ত কুমার সিনহার বিরুদ্ধেও এস কে সিনহার এ্যাকাউন্টে ৪ কোটি টাকা জমারও তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে জানান। রাজধানীর সেগুণবাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আদালতের মধ্যমে মামলাটি পেয়েছি। তদন্ত করা হবে। মামলাটি তদন্তের জন্য দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া সংস্থাটির মহাপরিচালক খান মোঃ নূরুল আমিনকে তদারককারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছি। তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। তারা বিচার বিশ্লেষণ করবেন। আইনের বাইরে যাওয়া যাবে না। তদন্ত কর্মকর্তা কী করবেন তা আমি বলতে পারব না। আমি তো অভিযোগ বিচার বিশ্লেষণ এখনও করতে পারিনি। নাজমুল হুদার কাছে এস কে সিনহা ঘুষ চেয়েছেন কিন্তু সেই ঘুষের কোনও লেনদেন হয়নি, তাহলে আইনে তা তদন্তের এখতিয়ার দুদকের আছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে ইকবাল মাহমুদ বলেন,আদালত থেকে এফআইআর কপি আমরা পেয়েছি। তদন্ত আমাদের করতে হবে। আইনে কিছু না থাকলে এটি আসত না। দুদক সূত্র জানায়, মামলাটি ‘দুদক আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ’ মনে করায় তা দুদকে পাঠিয়ে দেয় শাহবাগ থানা পুলিশ। এস কে সিনহা দেশের বাইরে আছেন, এমতাবস্থায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হলে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের দেশে সব ব্যবস্থা আইনে রয়েছে। আমার জানা মতে জিজ্ঞাসাবাদ করা অনেক পরের বিষয়। তদন্ত কর্মকর্তা যদি মনে করেন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন, তাহলে তাকে যথারীতি জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। সেটা কীভাবে করবেন তদন্ত কর্মকর্তারা তা নির্ধারণ করবেন। তবে জিজ্ঞাসাবাদ করা ম্যান্ডেটরি না। সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে দেশে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করার সুযোগ রয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের দেশের আইনে সব ব্যবস্থা রয়েছে। আনার প্রক্রিয়া ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশনে আছে। তবে এটা অনেক পরের বিষয়। একইসঙ্গে, ফারমার্স ব্যাংক থেকে নেয়া দুই ব্যবসায়ীর ঋণের চার কোটি টাকা এস কে সিনহার ব্যাংক হিসাবে জমা হওয়া সংক্রান্ত অভিযোগের অনুসন্ধান শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, এ অনুসন্ধানে যার নাম আসুক, বা যেই জড়িত হোক, আমরা আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেব। আর এস কে সিনহার ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আপনাদের (গণমাধ্যম) কাছ থেকে যতটুকু তথ্য পাওয়া গেছে, সেখানে দেখা যায় দুই লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলারে একটি বাড়ি ক্রয় করা হয়েছে। আমরা যতটুকু বুঝেছি, দুই বছর আগে যখন কোন ব্যক্তি কোন দেশে যান, তাহলে তার পক্ষে নাগরিক হওয়া সম্ভব না। যেহেতু তিনি নাগরিক হতে পারেননি, সেহেতু তার অবৈধ সম্পদ দেখার বিষয়টি আমাদের দায়িত্ব। সেই কারণে অনন্ত কুমার সিনহার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছি। উল্লেখ্য, গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর শাহবাগ থানায় সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে একটি মামলা করেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, এস কে সিনহার বিরুদ্ধে উৎকোচ (ঘুষ) গ্রহণের উদ্যোগ নেয়ার অভিযোগ এনেছেন নাজমুল হুদা। মামলায় এস কে সিনহার গ্রামের বাড়ির ঠিকানা দেয়া হয়েছে। অভিযোগের ঘটনাস্থল দেখানো হয়েছে সুপ্রীমকোর্টের খাস কামরা, (বাবুপুরা পুলিশ ফাঁড়ি, ওয়ার্ড নম্বর ২০ (নতুন), পুরাতন ৬৩, শাহবাগ থানা)। এতে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের ২০ জুলাই নাজমুল হুদার কাছ থেকে তিন কোটি ২৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছেন সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। দুই মামলায় একটিতে দুই কোটি এবং অন্যটিতে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করার অভিযোগ আনা হয়।
×