ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নুরল আমিন

মশক নিধন

প্রকাশিত: ০৪:৪৫, ৪ অক্টোবর ২০১৮

মশক নিধন

সাধারণত বর্ষাকালে এ রোগ দেখা যায়। কিন্তু এ বছর বর্ষা শেষে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দেখা যায়। তাই ধারণা করা হয় ডেঙ্গু বহনকারী মশার উৎপাত বাড়লে যে কোন সময় ডেঙ্গু রোগ হতে পারে। এজন্য আমাদের রোগটি সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে এবং প্রতিকার ও প্রতিরোধ জানতে হবে। উপসর্গ সম্পর্কে ধারণা থাকলে ডেঙ্গু রোগ শনাক্ত করা ও চিকিৎসা করা সহজ হয়। ডেঙ্গু রোগীর গায়ে খুব জ্বর থাকে। তাপমাত্রা ১০৪ক্ক থেকে ১০৫ক্ক পর্যন্ত হয়। রোগী তীব্র প্রদাহ ও অস্থিরতা বোধ করে। শরীরের বিভিন্ন অংশে যেমন- হাড়, কোমর, পিঠ, মাংসপেশি, অস্থিসন্ধি, মাথা ও চোখে প্রচ- ব্যথা থাকে। চোখ লাল হয়ে যায়। চোখ দিয়ে পানি পড়তে পারে। বমি বা বমির ভাব হতে পারে। পানিশূন্যতা হতে পারে। রোগাক্রান্ত হওয়ার তিন চার দিনের মাথায় গায়ে ঘামাচি বা হাম কিংবা এলার্জির মতো লালচে দানা দেখা যায়। চুলকানি হতে পারে। খুব ক্লান্তিবোধ খাবারে অরুচি দেখা যায়। ক্লাসিক্যাল ও হেমোরেজিক এ দুই প্রকার ডেঙ্গু রোগ হয়। হেমোরেজিক ডেঙ্গু রোগীর দাঁতের মাড়ির গোড়া, চোখ, নাক, দিয়ে রক্ত ক্ষরণ হতে পারে। গায়ে রক্ত জমে ছিটা ছিটা দাগ হতে পারে। মল, কফ ও বমির সঙ্গে রক্ত যেতে পারে। মস্তিস্ক ও হার্টে রক্তক্ষরণ হতে পারে। রোগীর শক হতে পারে। রক্তকণিকা কমে যেতে পারে। সঠিক সময়ে সঠিকভাবে রোগ নির্র্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা করা না গেলে রোগীর মৃত্যুর কারণ হতে পারে। রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানো উত্তম কাজ। ক্লাসিক্যাল বা সাধারণ ডেঙ্গু তেমন কোন সমস্যা বা জটিল নয়। তবে হেমোরেজিক বা রক্তক্ষরণজনিত ডেঙ্গু আশঙ্কাজনক। জ্বর হওয়ার চার পাঁচ দিন পর ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্লাড সিবিসি ও প্লাটিলেট টেস্ট করে দেখতে হবে। প্লাটিলেট কাউন্ট বা রক্তকণিকা এক লাখের কম হলে ডেঙ্গু ভাইরাসের কথা মাথায় রেখে পদক্ষেপ নিতে হবে। ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হলে প্রাথমিক পরিচর্যা অনেক উপকার এবং এতেই ভাল হবার আশা করা যায়। জ্বর কমানোর জন্য মাথায় পানি এবং কপালে জলপট্টি দিতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে ঘন ঘন রোগীর শরীর মুছে দিতে হবে। বেশি বেশি পানি পান করাতে হবে। তরল ও স্বাভাবিক খাবার জুস, স্যালাইন, শরবত খেতে দিবে। প্রয়োজনে শিরাপথে স্যালাইন দিবে। বিশ্রাম নিতে হবে। জ্বর ও ব্যথা কমানোর জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খাওয়ানো যায়। রোগীকে মশারীর ভেতর রাখতে হবে, যাতে অন্য মশা কামড়াতে না পারে। সাধারণত এক সপ্তাহ বা ১০ দিনের মধ্যে রোগ সেরে যায়। ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধের জন্য এডিস মশার বংশ বিস্তার বন্ধ করতে হবে। এডিস মশা সাধারণত স্বচ্ছ ও পরিষ্কার জমা পানিতে ডিম পাড়ে। তাই বাড়িতে ঘরে ও এলাকায় কোথাও যাতে কোন পাত্রে বা গর্তে পরিষ্কার পানি চার পাঁচ দিনের বেশি জমা থাকতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ফুলদানি, ডাব নারকেলের খোলা ও খোসা, পরিত্যক্ত টায়ার ও কৌটা বা অন্য কোন পাত্র থাকলে সরিয়ে ফেলতে হবে। কারণ, এগুলোর ভেতর পরিষ্কার জমা পানি এডিস মশার ডিম পাড়ার উপযোগী। এছাড়া এয়ারকন্ডিশনার ও ফ্রিজের নিচে যাতে পানি জমতে না পারে। ঘরে ও বাথরুমে বালতি মগ বদনায় যেন জমা পানি না থাকে। আশপাশের জলাবদ্ধতা, জলাশয়, গর্ত, ঝোপঝাড় জঙ্গল ও ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করে দিতে হবে। লালমোহন, ভোলা থেকে
×