ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পাটের পলিথিন তৈরিতে যুক্তরাজ্যের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি

প্রকাশিত: ০৬:৪৬, ৩ অক্টোবর ২০১৮

পাটের পলিথিন তৈরিতে যুক্তরাজ্যের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সোনালি আঁশ পাট থেকে বাণিজ্যিকভাবে পরিবেশবান্ধব পলিথিন তৈরিতে যুক্তরাজ্যের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশন (বিজেএমসি)। চুক্তি অনুযায়ী পলিথিনের বিকল্প সোনালি ব্যাগ উৎপাদনে সব ধরনের মেশিনারিজ ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দেবে প্রতিষ্ঠানটি। মঙ্গলবার সচিবালয়ে বিজেএমসির সচিব এ কে এম তারেক ও যুক্তরাজ্যের ফুটামুরা কেমিক্যাল কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার গ্রিমি কোলহার্ড এ সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। এ সময় বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এবং মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী বাংলাদেশী বিজ্ঞানী আবিষ্কৃত পলিথিনের বিকল্প সোনালি ব্যাগ উৎপাদনে যুক্তরাজ্যের প্রতিষ্ঠান সব ধরনের মেশিনারিজ ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দেবে। আগামী ৬ থেকে ৯ মাসের মাধ্যমে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাবে বিজেএমসি। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পলিথিনের বিকল্প সোনালি ব্যাগ দেখতে প্রচলিত পলিথিনের মতোই। পাটের সূক্ষ্ম সেলুলোজকে প্রক্রিয়াজাত করে অন্যান্য পরিবেশবান্ধব দ্রব্যাদির মাধ্যমে কম্পোজিট করে সোনালি ব্যাগ তৈরি করা হয়। এটি পচনশীল, মাটির সঙ্গে মিশে যায়। আণবিক শক্তি কমিশনের সাবেক মহাপরিচালক মোবারক আহম্মেদ খান পাট থেকে পলিথিনের এ বিকল্প তৈরি করেন। পরে তাকে বিজেএমসির বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাট থেকে আমরা অনেক কিছু উদ্ভাবন করেছি। পাট থেকে বিমানের ইন্টেরিয়র তৈরি হয়। আমরা যখন দায়িত্বে আসি তখন পাটের বহুমুখী পণ্যের সংখ্যা ছিল ৩৫, সেখানে এখন পণ্যের সংখ্যা ২৮৫টি। কারণ বহুমুখী পাট পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ ইনসেনটিভ দিয়েছি। আজ বুধবার প্রথম মন্ত্রিসভা বৈঠকে মন্ত্রীরা যে ব্রিফকেস বহন করবেন, আমরা সেখানে পাটের তৈরি ব্রিফকেস গিফট করেছি। মন্ত্রীরা সেই পাটের ব্রিফকেসটি বহন করবেন। তিনি বলেন, পলিথিন আমাদের ধ্বংস করে দিচ্ছে। নদী-নালা, খাল-বিল বন্ধ করে দিচ্ছে, জমির উর্বরতা নষ্ট করছে। পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন হওয়ার ফলে আমরা মোট উৎপাদিত কাঁচাপাটের প্রায় ৪০ শতাংশ স্থানীয়ভাবে ব্যবহার করছি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, মোবারক হোসেন সাহেবের চেষ্টা সফলতার দ্বারপ্রান্তে এসেছে। লতিফ বাওয়ানী জুট মিলে ম্যানুয়ালি এটা তৈরি করছি। গত ২ বছর ধরে প্রতিদিন সর্বোচ্চ চার হাজার পিস এ পলিথিন তৈরি হচ্ছে। এ অবস্থায় এটা বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করা সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রীর পাটের তৈরি এ ব্যাগের নাম দিয়েছেন ‘সোনালি ব্যাগ’ জানিয়ে মির্জা আজম বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে আমরা খোঁজাখুঁজি করেছি এর মেশিন কে সরবরাহ করতে পারে। পরে ফুটামুরাকে কোম্পানিকে পাওয়া যায়। তারা কাঠের সেলুলোজ থেকে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে থাকে। পাট থেকে কখনও হয়নি, আমরা তাদের পাট দিয়েছি। সেটা তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন। তিনি আরও বলেন, তারা ৬ থেকে ৯ মাসের মধ্যে মেশিনারিজ ডিজাইন করবেন এবং তৈরি করবেন। বাংলাদেশে এসে সেটা প্রতিস্থাপন করবেন। বাণিজ্যিক উৎপাদন পর্যন্ত তারা দায়িত্ব নিতে চাচ্ছেন। তারা বিনিয়োগ করতেও রাজি। বাণিজ্যিক উৎপাদন হবে বিজেএমসির নিয়ন্ত্রণে। কারখানাটি হবে ডেমরার লতিফ বাওয়ামী জুট মিলে নিজস্ব জায়গায়। পাট প্রতিমন্ত্রী বলেন, পলিথিনের বিকল্পের চাহিদা সারা বিশ্বব্যাপী।
×