ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় কৃষি খাতের অবদান

প্রকাশিত: ০৭:২৩, ২ অক্টোবর ২০১৮

উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় কৃষি খাতের অবদান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। মোট দেশজ উৎপাদন তথা জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ১৪.১১ শতাংশ। বর্তমান সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কৃষিখাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করে কৃষির উন্নয়ন ও কৃষকের কল্যাণকে সর্বোচ্চ বিবেচনায় নিয়ে রূপকল্প ২০২১ এবং রূপকল্প ২০৪১ এর আলোকে জাতীয় কৃষিনীতি, ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট, ডেল্টাপ্ল্যান-২১০০ এবং অন্যান্য পরিকল্পনা দলিলের আলোকে সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৃষিক্ষেত্রে সময়োপযোগী পদক্ষেপ এবং কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর সঠিক দিকনির্দেশনায় খোরপোষের কৃষি আজ বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরিত হয়েছে। ফলে দেশে কর্মসংস্থান সম্প্রসারিত হয়েছে। খাদ্যশস্য উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের স্থান দশম। অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। জানা যায়, বিজ্ঞানীদের প্রচেষ্টায় এক ও দুই ফসলি জমি অঞ্চল বিশেষে প্রায় চার ফসলি জমিতে পরিণত করা হয়েছে এবং দেশে বর্তমানে ফসলের নিবিড়তা ১৯৪ শতাংশ। ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দানাদার খাদ্যশস্যের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০৭.১৪ লাখ মেট্রিক টন, উৎপাদন হয়েছে ৪১৩.২৪৯ লাখ মেট্রিক টন, যার ফলে দেশ আজ দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কৃষিক্ষেত্রে অসামান্য সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার নিয়মিত প্রদানের মাধ্যমে কৃষি ও কৃষি সংশ্লিষ্টদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। দক্ষিণ অঞ্চলে ভাসমান বেডে চাষাবাদ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সবজি উৎপাদন করা হচ্ছে। ভাসমান বেডে সবজি উৎপাদনের পদ্ধতিটিকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা ২০১৫ সালে কৃষিতে বাংলাদেশের বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে। শেখ হাসিনার সরকার সার, ডিজেল, বিদ্যুত ইত্যাদি খাতে আর্থিক সহযোগিতার পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছর হতে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত সকল খাতে মোট ৬৫ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকার মধ্যে সারখাতেই ৫৮ হাজার ৯শ’ কোটি টাকা আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার ২০০৮-০৯ অর্থবছর হতে প্রণোদনা বা কৃষি পুনর্বাসন চালু করেছে। এ পর্যন্ত এই কর্মসূচীর মাধ্যমে ৮২৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে, যার মাধ্যমে ৭৪ লাখ ৫৪ হাজার ৩১৩ জন কৃষক উপকৃত হয়েছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া এবং বিভিন্ন ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের কৃষি প্রণোদনা ও পুনর্বাসন বাবদ ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। উৎপাদনমুখী কৃষিবান্ধব সরকার নানাবিধ সহযোগিতা প্রদানের লক্ষ্যে মোট ২ কোটি ৮ লাখ ১৩ হাজার ৪৭৭ জন কৃষককে কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড প্রদান করেছে। শেখ হাসিনার সরকার কৃষককে মাত্র ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ করে দেয়ায় ১ কোটি ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৪৮টি ব্যাংক হিসাব খোলা সম্ভব হয়েছে, যেখানে বর্তমান স্থিতি প্রায় ২৮২ কোটি টাকা।
×