ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফুটবলপ্রেমীদের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর সিলেট

প্রকাশিত: ০৭:১৫, ২ অক্টোবর ২০১৮

ফুটবলপ্রেমীদের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর সিলেট

স্পোর্টস রিপোর্টার, সিলেট থেকে ॥ বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবল। আর ফুটবলের প্রাণ কি বলুন তো? দর্শক। একটি খেলা দেখতে গ্যালারিতে দর্শকদের ঢল নামবে, টিকেট কালোবাজারি হবে, লাইন ধরে গ্যালারিতে ঢুকতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কি হবে, হুড়োহুড়ি হবে, চেঁচামেচি হবে, পুলিশ মৃদু লাঠিচার্জ করবে ... তবেই না হবে ফুটবল দেখার আসল মজা। ঢাকার স্টেডিয়ামে দর্শক না হলেও এর বিপরীত চিত্র দেখা যায় ঢাকার বাইরে খেলা হলে। এই যেমন সোমবার সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে দেখা গেল ফুটবলপ্রেমীদের ঢল। উৎসবমুখর পরিবেশে ২০ হাজার দর্শক উপভোগ করলেন ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ’ ফুটবলে বাংলাদেশ বনাম লাওসের ম্যাচটি। যদিও স্টেডিয়ামের গ্যালারির ধারণক্ষমতা ছিল ২৫ হাজার। গ্যালারি পুরোপুরি না ভরলেও এই উপস্থিতি ছিল আশা জাগানিয়া। ২০১৫ সালেও এখানে মোট চারটি ম্যাচ হয়েছিল। তখনও দর্শক জোয়ার দেখা গিয়েছিল। ম্যাচের আগের দিন সকালে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে যাওয়ার জন্য সিএনজি অটোরিক্সায় চেপে বসা। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল নিয়ে এখানে সবার মধ্যে কেমন সাড়া পড়েছে জানতে চাইলে চালক বললেন, ‘প্রচার ভালই। তবে টিকেটের দাম বেশি। স্টেডিয়ামে দর্শক বেশি আসবে কি না সন্দেহ আছে।’ এ পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু চালক মহাশয় যখন জানতে চাইল, ‘এই আসরে কি বিশ^কাপের কোন দল খেলবে? ইতালি খেলবে’ ... তখন থমকে যেতে হলো তার ফুটবলীয়-জ্ঞান দেখে। যাহোক, স্টেডিয়ামে গিয়ে মাঠের অবস্থা দেখে হতাশই হতে হলো। সকালে একদফা বৃষ্টি হয়েছিল। আর তাতেই কিনা মাঠে কাদা হয়ে গেছে। বোঝাই যাচ্ছে মাঠের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা খুব একটা সুবিধার নয়। এখন ভরসা একটাইÑ রোদের আশ্রয় নিয়ে মাঠের দ্রুত শুকিয়ে ওঠা! সোমবার ভরসা সত্যি হয়েছে। কিঞ্চিৎ পিচ্ছিল থাকলেও মাঠ ছিল খেলার উপযোগীই। একটু অবাকই হতে হলো এই মাঠেই কি না আজ থেকে চার বছর আগে (২০১৪ সালের ২৯ আগস্ট) এক বিরল অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। বাংলাদেশ বনাম নেপাল যুব দলের প্রীতি ম্যাচটি প্রায় প- হতে বসেছিল দর্শকদের কারণে। কর্নার নেয়ার, থ্রো করার, লাইন্সম্যানের দাঁড়ানোর, কোচের ডাগ-আউটে এমনকি বলবয়দের দাঁড়ানোর পর্যন্ত এক ইঞ্চি জায়গা ছিল না। শুধু তাই নয়, দু’দলের খেলোয়াড়দের বসার যে দুটি টেন্টÑ সেগুলোও হয়ে গিয়েছিল বেদখল! গ্যালারি তো টুইটুম্বুর আগে থেকেই ছিল। মাঠের দুদিকের গেট ভেঙ্গে সেখান দিয়ে পঙ্গপালের মতো পিলপিল করে ঢুকেছিল দর্শক অবিরামভাবে। এমনকি সাংবাদিকদের প্রেসবক্সের দরজা ভেঙ্গে ঢুকে পড়ার চেষ্টায় তৈরি হয় চরম ভীতিকর পরিবেশের! সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের ধারণসংখ্যা ২৫ হাজার। নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয় সাড়ে তিন শ’। সেদিন তারা কোনভাবেই ঠেকাতে পারেনি বানের স্রোতের মতো ধেয়ে আসা ফুটবলপ্রেমীদের (বেশিরভাগই কিশোর ও তরুণ)। গ্যালারি এবং মাঠে সবমিলিয়ে দর্শক ছিল ৫০ হাজারেরও বেশি! বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে এমন ঘটনা যে বিরল, সেটা বলা যায় নিদির্¦ধায়। সোমবার সেরকম পরিস্থিতি না হলেও মাঠে দর্শক-উপস্থিতি ছিল আশাব্যঞ্জকই।
×