ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় ঐক্যের আন্দোলনে সামনে থাকবে বিএনপি ॥ নজরুল

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২ অক্টোবর ২০১৮

জাতীয় ঐক্যের আন্দোলনে সামনে থাকবে বিএনপি ॥ নজরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় ঐক্যের আন্দোলনে বিএনপি সামনের কাতারে থাকবে বলে জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্মিলিত ছাত্র ফোরাম আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। নজরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ২০১৬ সালে সকল রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে বৃহত্তর ঐক্যের ডাক দেন। তখন তিনি যে পয়েন্টগুলো দিয়েছিলেন এখন দেখছি আমাদের বাম রাজনৈতিক দল, যুক্তফ্রন্ট ও ড. কামাল হোসেনের ঐক্য প্রক্রিয়া সেই একই দাবি করেছে। নজরুল বলেন, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে, সংসদ বাতিল করতে হবে, ইভিএম করা যাবে না, নির্বাচনের আগে ও পরে সেনা মোতায়েন করতে হবে এই দাবিগুলো খালেদা জিয়া বৃহত্তর ঐক্যের ডাকে বলেছিলেন। আর যাদের সঙ্গে আমাদের দাবি এক তাদের সঙ্গে মিলে লড়াই আমরা অবশ্যই করতে পারব। বিএনপির পক্ষ থেকে বলেছি- আমরা শুধু বৃহত্তর ঐক্যে রাজি নই, বৃহত্তর ঐক্যের আন্দোলনে আমরা সামনের কাতারে থাকব। বিএনপির জনসভা দেখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের হতাশ হওয়া প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম বলেন, তিনি হতাশ হয়েছেন, কারণ তারা চিন্তাও করতে পারেনি এতো অল্প সময়ের মিটিংয়ে এতো মানুষ হবে, তাই হতাশ হওয়ারই কথা। আওয়ামী লীগের সমাবেশ নিয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, সাত দিন ধরে তারা প্রস্তুতি নেয় এবং বিশাল সাইজের প্যান্ডেল করে। ওপরে ত্রিপল, নিচে কার্পেট, সামনে সোফা, পিছনে চেয়ার। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, মসজিদের ইমাম ও সরকারী কর্মচারীদের নিয়ে আসেন। এতকিছু করার পর যেই মানুষ হয়, আর আমাদের মাত্র ২৪ ঘণ্টার নোটিসে যে পরিমাণ মানুষ হয় তা দেখে হতাশ হওয়াই স্বাভাবিক। ওবায়দুল কাদেরের হতাশার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক নাহিদুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ প্রমুখ। সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে ৪ হাজার নেতাকর্মী গ্রেফতার- রিজভী ॥ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে দলের ৪ হাজার নেতাকর্মী গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সমাবেশে অনেক লোক দেখে সরকারের কাঁপুনি ধরে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। সোমবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। বিএনপির সমাবেশে লোকজনের উপস্থিতি প্রমাণ করে দলটির জনপ্রিয়তা কমেছে বলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের উত্তরে নীরব হাসি ছাড়া আর কিইবা বলতে পারি। আসলে তারা রাষ্ট্রীয় কোষাগারের টাকা, বিপুল পরিমাণ চাঁদাবাজির টাকা খরচ করেও সমাবেশে মানুষ আনতে পারেন না, আবার কিছু লোক এলেও ধরে রাখতে পারেন না ক্ষমতাসীন নেতারা। কিন্তু পথে পথে সরকারী আক্রমণ আর বাধার মুখেও এত বিপুল মানুষের বিএনপির সমাবেশ দেখে তারা হতাশ হয়ে মনের বিকারে প্রলাপ বকছেন। রিজভী বলেন, একতরফাভাবে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে আওয়ামী লীগ নেতারা কত তামাশা দেখাচ্ছেন, আর কত যে উদ্ভট কথা বলছেন তার শেষ নেই। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের এখন দেউলিয়াগ্রস্ত রাজনীতি। সেজন্যই খাপছাড়া কথা বলছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। রিজভী বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির জনসভা ঘিরে ঢাকার ভেতরে ও আশেপাশের বিভিন্ন পয়েন্টে গণপরিবহন বন্ধ করে দেয় ক্ষমতাসীন দলের সশস্ত্র নেতাকর্মীরা। বিএনপি নেতাকর্মীদের সন্দেহ করে পথে পথে বাধা দিয়েছে তারা। মারধরের ঘটনাও ঘটেছে বিভিন্ন স্থানে। সকাল থেকেই ঢাকা মহানগরীর প্রবেশ পথ আগলে রাখে পুলিশের পাশাপাশি আওয়ামী ক্যাডাররা। শনিবার রাত থেকেই ঢাকা মহানগরীসহ আশেপাশের জেলাগুলোতে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় চলে পুলিশী তল্লাশি। রবিার ভোরেই আওয়ামী লীগ ক্যাডাররা বাস কাউন্টার থেকে কর্মচারী ও গাড়ি সরিয়ে দিয়ে সারাদিন বাস সার্ভিস বন্ধ রাখে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহ-দফতর সম্পাদক মুহাম্মদ মুনির হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ।
×