ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়ার জন্মশতবর্ষ উদ্্যাপন

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২ অক্টোবর ২০১৮

আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়ার জন্মশতবর্ষ উদ্্যাপন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বহুমাত্রিক পরিচয়ের এক বরেণ্য ব্যক্তিত্ব আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া। একাধারে তিনি প্রতœতত্ত্ববিদ, ইতিহাসবিদ, পুঁথিসাহিত্য-বিশারদ ও অনুবাদক। সোমবার ছিল প্রয়াত এই কীর্তিমান মানুষটির জন্মশতবর্ষ। বিশিষ্টজনদের আলাপচারিতায় শততম জন্মবর্ষে স্মরণ করা হলো এই গুণীজনকে। তাদের আলোচনার পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের স্মৃতিচারণে গভীর ভালবাসায় উঠে আসে আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়ার পারিবারিক জীবন। জন্মদিনের বিকেলে আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়ার জন্মশতবর্ষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকার স্থাপত্য বিষয়ক গ্রন্থ প্রণয়ন কমিটি। আলাপচারিতামূলক আয়োজনে ঐতিহ্যবাহী যোগীর গান পরিবেশন করে নাটোরের তাছের ম-ল ও তার দল। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকার স্থাপত্য বিষয়ক গ্রন্থ প্রণয়ন কমিটির চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়ার জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন সাংবাদিক মোজাম্মেল হাসান মঞ্জু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক শামীমা বানু ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সাবেক সচিব কাজী আনিসুর রহমান। পরিবারের পক্ষে স্মৃতিচারণ করেন দুই মেয়ে জাকিয়া মাহফুজ ও সুফিয়া আতিয়া যাকারিয়া। আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া সত্যিকার অর্থেই একজন প-িত ব্যক্তি ছিলেন। বিনয়ী এই মানুষটি ছিলেন বিরল গুণের অধিকারী। নানা আয়োজনে আসতেন প্রাণবন্ত এই মানুষটি। তার কথায়, চলনে শারীরিক অসুস্থতার কোন চিহ্ন বোঝা যেতে না। তিনি স্বপ্ন নিয়ে সামনের দিকগুলো দেখছেন। বর্তমানের পৃথিবী যখন ধর্মীয়, গোষ্ঠীগত ও রাজনৈতিকভাবে সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে, তখন তার মতো একজন উদার নৈতিক মানুষের বড় দরকার ছিল। মোজাম্মেল হাসান মঞ্জু বলেন, তার সৃষ্টিসম্ভার আমাদের পরম সম্পদ। তার গবেষণালব্ধ উপাত্ত একালের গবেষকদের নানাভাবে তথ্য জোগাবে। প্রতœসম্পদের প্রতি অনুরাগ জন্মাতে তার সৃষ্টিগুলো রক্ষা করা জরুরী। সুফিয়া আতিয়া জাকারিয়া বলেন, আমার বাবা ছিলেন বহুমাত্রিক এক ব্যক্তিত্ব। শুধু সাহিত্যের ছাত্রই ছিলেন না তিনি, নানা বিষয়ের প্রতি তার ছিল প্রচ- আগ্রহ। বাবা ছিলেন চলন্ত এক এনসাইক্লোপিডিয়া। জাকিয়া মাহফুজ বাবাকে নিয়ে নিজের লেখা একটি কবিতা আবৃত্তির পাশাপাশি একটি রবীন্দ্র সঙ্গীত গেয়ে শোনান। এর আগে কমিটির সদস্যরা গেয়ে শোনান ‘প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে’ ও ‘বিশ্বসাথে যোগে যে পায়’ শিরোনামের দুটি । প্রাচ্যকলা বিভাগের বার্ষিক শিল্পকলা প্রদর্শনী ॥ বৃক্ষতলে গালে হাত দিয়ে বসে আছে এক নববধূ। উল্টোদিকে পাশের একটি কলাগাছের পাতায় বিশ্রাম নিচ্ছে একটি। আবহমান গ্রাম এমন সৌন্দর্যময়তার দৃশ্যকাব্য তুলে ধরা চিত্রকর্মটি এখন শোভা পাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে। গ্রামীণ জীবন থেকে নগরের ব্যস্ততা, যাপিত জীবনের বহুবিধ বিষয় উদ্ভাসিত হয়েছে বিভিন্ন চিত্রকর্মে। একইভাবে মূর্ত ছবির সঙ্গী হয়েছে কিছু সংখ্যক বিমূর্ত ছবি। চারুকলা অনুষদের প্রাচ্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী শিল্পীদের সৃজিত এসব ছবি নিয়ে চলছে বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী। সোমবার থেকে সূচনা হওয়া প্রদর্শনীতে প্রাচ্যচিত্রকলার মূলনীতি বজায় রেখে উপস্থাপিত হয়েছে জলরঙ, ক্যালিগ্রাফি ও মিনিয়েচার, পেন্সিল স্কেল, কালি ও তুলি, এ্যাক্রিলিক, ক্যানভাসসহ বিভিন্ন মাধ্যম ও বিষয়ভিত্তিক কাজ। সেসব চিত্রপটে শিক্ষার্থীরা মেলে ধরেছেন প্রকৃতি ও মানুষকে উপজীব্য করে নিজেদের শিল্পচিন্তা। সোমবার দুপুরে চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে বার্ষিক এ প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন ও প্রাচ্যকলা বিভাগের সাম্মানিক অধ্যাপক ড. মোঃ আবদুস সাত্তার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাচ্যকলা বিভাগের প্রধান ড. মিজানুর রহমান ফকির। এবারের আয়োজনে বিভিন্ন মাধ্যমে ছয়জন চারুশিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। নিরীক্ষাধর্মী পুরস্কার পেয়েছেন এমএফএ দ্বিতীয় পর্বের সামিনা জামান, শ্রেষ্ঠ মাধ্যম পুরস্কার পেয়েছেন বিএফএ সম্মান চতুর্থ বর্ষের শৈলী শ্রাবন্তী, শিল্পী শফিকুল আমীন স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছেন এমএফএ প্রথম পর্বের শাহানাজ আক্তার পিংকি, শিল্পী আমিনুল ইসলাম স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছেন এমএফএ দ্বিতীয় পর্বের জয়শ্রী গোস্বামী, শিল্পী রশিদ চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছেন বিএফএ সম্মান চতুর্থ বর্ষের সৌরভ ঘোষ এবং শিল্পী শওকাতুজ্জামান স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছেন বিএফএ সম্মান প্রথম বর্ষের রাইসা মোয়াজ্জেম। প্রদর্শনীতে ৪০ চারুশিক্ষার্থীর ৯৫টি শিল্পকর্ম ঠাঁই পেয়েছে। এছাড়াও প্রাচ্যকলা বিভাগের দশজন শিক্ষকের শিল্পকর্মও রয়েছে প্রদর্শনীতে। ছয় দিনের এ প্রদর্শনীটি চলবে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
×