ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের প্রশংসায় অরুণ জেটলি

একটা দেশ যখন উন্নত হতে থাকে তখন ক্রীড়াঙ্গনও এগোয়

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২ অক্টোবর ২০১৮

একটা দেশ যখন উন্নত হতে থাকে তখন ক্রীড়াঙ্গনও এগোয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আর্থসামাজিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ভারতের অর্থ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলি। সোমবার দুপুরে ভারত সফররত পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ মুস্তফা কামাল নয়াদিল্লীতে ভারতের অর্থ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলির কার্যালয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাতকালে এই প্রশংসা করেন। ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পযন্ত ৪ দিনব্যাপী মহাত্মা গান্ধী আন্তর্জাতিক স্যানিটেশন কনভেনশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে ভারত সফরে যান পরিকল্পনামন্ত্রী। বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে যে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে যে বিষয়েও প্রসংশা করেন অরুণ জেটলি। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭.৮ অর্জন, গড়আয়ু ৭২ বছরে উত্তীর্ণসহ বাংলাদেশের বেশকিছু দ্রুত অগ্রগতিশীল খাতের কথা তিনি উল্লেখ করেছেন। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানিয়েছে, সাক্ষাতকালে অরুন জেটলি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সাম্প্রতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিশেষ করে রেল ও সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নের বিষয়টি তুলে ধরেন। বাংলাদেশর ক্রিকেটের উন্নয়নের বিষটিতেও তিনি আলোকপাত করে বলেন, একটি দেশের ক্রীড়াঙ্গন তখনই উন্নত হতে থাকে যখন সেই দেশ উন্নয়নের দিকে ধাবিত হতে থাকে। তিরি আরও বলেন, বাংলাদেশকে এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে অবশ্যই যোগাযোগ ব্যবস্থা ও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের দিকে আরো বেশি জোর দিতে হবে। সাক্ষাতকালে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ভারতের সঙ্গে বহুবিধ সম্পর্ক গড়ে তুলতে প্রকৃতপক্ষে ভাল সম্পর্ক, বিশ্বাস, পারস্পারিক স্বার্থ ও সম্মানের ভিত্তিতে নীতি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, তৃতীয় লাইন অফ ক্রেডিটের আওতায় ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণে ভারতের সঙ্গে বিদ্যুত, রেলপথ, সড়ক, জাহাজ চলাচল, বন্দরসহ অবকাঠামো খাতে ১৭টি অগ্রাধিকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ। প্রথম দুই লাইন অফ ক্রেডিটের আওতাধীন প্রকল্পগুলোর বিষয়ও উল্লেখ করে তিনি প্রকল্পগুলো অনুমোদনের জন্য অরুন জেটলিকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের অর্থনীতি ওতোপ্রতোভাবে জড়িত এমনকি যদি ভারতে মূল্যস্ফীতি হ্রাস পায় বাংলাদেশে তা হ্রাস পায়। ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রেল ও সড়কের মাধ্যমে অত্যন্ত সুন্দর ও সুদৃঢ়ভাবে যোগাযোগ স্থাপিত, এই ব্যবস্থার সুফল মিলবে তখনই যখন দু’দেশের মানুষই আর্থিকভাবে লাভবান হবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সীমানাও ভারতের মাধ্যমে সুরক্ষিত এবং যেখানে কোন ঝুঁকি নেই। মাননীয় পরিকল্পনামন্ত্রী এই বিষয়ে একমত পোষণ করেন এবং পাশাপাশি রোহিঙ্গা সমস্যাটি নিয়ে আলোচনা করে বলেন, ভারত এই দীর্ঘমেয়াদী রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থেকে সহযোগিতা করবে এবং এই সমস্যা সমাধান করতে মায়ানমারের প্রতি কার্যকরী চাপ প্রয়োগ করে দ্রুত শর্তহীন প্রত্যাবর্তন নিশ্চিতের আশা প্রকাশ। এছাড়াও পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বাংলাদেশের ডেল্টা প্ল্যান- ২১০০ বিষয়েও অরুন জেটলির সঙ্গে আলোচনা করেন। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান- ২১০০ গ্রহণ করেছে, ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ এর মাধ্যমে আগামী ১০০ বছরে বাংলাদেশ কোন পর্যায়ে যাবে সেই পরিকল্পনা চলছে। ব-দ্বীপকে জলবায়ু পরিবর্তনসহ অন্যান্য অভিঘাত থেকে বাঁচাতে এ প্ল্যান। ব-দ্বীপ পরিকল্পনায় বন্যা, নদীভাঙ্গন, নদীশাসন, নদী ব্যবস্থাপনা, নগর ও গ্রামে পানি সরবরাহ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নগর বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘমেয়াদী কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় নদী নিয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের নিজেদের মধ্যকার সীমান্ত নদীগুলোর বিভিন্ন পরিকল্পনার মাধ্যমে এই খাতকে অত্যন্ত সমৃদ্ধ করে সুফল ভোগ করছে। বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে অসংখ্য সীমান্ত নদী রয়েছে। বন্ধু প্রতিম এই দুই দেশ এই খাতে সফলতা অর্জন করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন। মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ অতি দ্রুতই তার বেশিরভাগ নদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিং শুরু করবে। এক্ষেত্রে ভারত আর্থিকভাবে সহযোগিতাসহ ভারতীয় অংশে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি নদীগুলোর ভারতীয় অংশে ক্যাপিটাল ড্রেজিংসহ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার জলখাতকে আরও সমৃদ্ধকরণসহ রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে থাকার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন।
×