ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

মানহানির দুই মামলায় আপীল বিভাগে খালেদার জামিন বহাল

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ২ অক্টোবর ২০১৮

মানহানির দুই মামলায় আপীল বিভাগে খালেদার জামিন বহাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগে ঢাকা ও নড়াইলে দায়ের করা মানহানির দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রেখেছে সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ। অন্যদিকে ঢাকা ও চট্টগ্রামের দুই মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর আগাম জামিন বহাল রেখেছে আপীল বিভাগ। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নাশকতা, উস্কানি ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে পৃথক এ মামলা করা হয়। এদিকে দুদকে তলবের নোটিসের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর রিট খারিজ করে দেয়া হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে করা আবেদনটি কার্য তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে আপীল বিভাগ। পাশাপাশি মামলা সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ হাতে পাওয়ার পর তাকে লিভ টু আপীল (আপীলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলেছে আদালত। সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপীল বেঞ্চ এ আদেশগুলো প্রদান করেছে। এদিকে মানহানির দুই মামলায় জামিন হলেও কুমিল্লার নাশকতার দুই মামলায় জামিন না পেলে আপাতত খালেদার মুক্তি মিলছে না। হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন শুনানি নিয়ে সোমবার তা খারিজ করে দেয় আপীল বিভাগ। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন ও কায়সার কামাল। আদেশের পর এ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, আপীল বিভাগের এই আদেশের ফলে খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল থাকল। তবে, কুমিল্লার দুই মামলায় জামিন পেলে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিতে আর কোন বাধা থাকবে না। তিনি বলেন, এগুলো জামিনযোগ্য মামলা। বিচারিক আদালত জামিন না দেয়ায় আমাদের হাইকোর্টে আসতে হয়েছিল। হাইকোর্ট জামিনও দিয়েছিল। কিন্তু সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশে খালেদা জিয়াকে আটকে রাখার জন্য তার জামিনের বিরুদ্ধে আবেদন করেছিল। দু’টি মামলাই জামিনযোগ্য, বরং জামিন না দেয়াই একটা অপরাধ। নড়াইলের আদালতে করা মানহানির মামলায় খালেদা জিয়াকে গত ১৩ আগস্ট ছয় মাসের জামিন দেয় হাইকোর্ট। আর ঢাকার মামলায় খালেদা জিয়া ছয় মাসের জামিন পান গত ১৪ আগস্ট। ওই দুই আবেদনের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে চেম্বার আদালতে আবেদন করেছিল রাষ্ট্রপক্ষ। চেম্বার আদালত আবেদন দু’টি শুনানির জন্য আপীল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয়। সোমবার সেই শুনানি শেষে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজার রায়ের পর গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ওই মামলায় তিনি জামিন পেলেও আরও কয়েকটি মামলার কারণে তার মুক্তি হচ্ছে না। আমীর খসরুর জামিন বহাল ॥ ঢাকা ও চট্টগ্রামের দুই মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর আগাম জামিন বহাল রেখেছে সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নাশকতা, উস্কানি ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে পৃথক এ মামলা করা হয়। জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা পৃথক দুটি আবেদন খারিজ করে সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপীল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জয়নুল আবেদিন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। এর আগে ৪ আগস্ট চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় নাশকতায় উস্কানি ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা হয়। চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করেন নগর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর । মামলার এজাহারে বলা হয়, বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছিলেন। ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে রাষ্ট্রে নৈরাজ্য সৃষ্টির উদ্দেশে তিনি উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এছাড়া ৫ আগস্ট পুলিশ বাদী হয়ে একই অভিযোগে ঢাকার আদালতে একটি মামলা করে। এ মামলা দুটিতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানালে গত ২৭ আগস্ট হাইকোর্ট চট্টগ্রামের মামলায় ৬ সপ্তাহ এবং ঢাকার মামলায় ৭ সপ্তাহের আগাম জামিন দেয়। ওই জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপীল বিভাগে পৃথক দুটি আবেদন জানায়। সোমবার আবেদন দুটি খারিজ করে আপীল বিভাগ।
×