ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

তিন গোল করালেন রোনাল্ডো

প্রকাশিত: ০৭:২৬, ১ অক্টোবর ২০১৮

 তিন গোল করালেন রোনাল্ডো

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গোল করাটাকে রীতিমতো এক শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন ক্যারিয়ারজুড়ে। ইউরোপের যেখানেই গেছেন, গোল করেছেন মুড়ি-মুড়কির মতো। গোলের অতিমানবীয় পরিসংখ্যানের কারণেই ক্যারিয়ারে কখনই গোল করানো নিয়ে তেমন প্রশংসিত ছিলেন না ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। বয়সটা ত্রিশের কোঠায় পৌঁছালেও নেপোলির মতো দলগুলোর বিপক্ষে বড় ম্যাচে গোল করার জন্যই তাকে দলে ভিড়িয়েছিল জুভেন্টাস। কিন্তু শনিবার গোল করতে পারেননি সি আর সেভেন। তবে ‘তুরিনের বুড়ি’দের তিনটি গোলই এসেছে তার পাস থেকেই। রোনাল্ডোর ‘পার্শ্ব অভিনেতা’ হয়ে উঠার দিনে নেপোলির বিপক্ষে জুভেন্টাসের নায়ক মারিও মানজুকিচ। ক্রোয়েশিয়ান স্ট্রাইকারের জোড়া গোলে পিছিয়ে পড়েও নেপোলিকে ৩-১ গোল হারিয়ে ৬ পয়েন্টের লিড নিয়ে ২০১৮-১৯ সিরি’এ টেবিলের শীর্ষস্থানটা আরও সুসংহত করলেন ম্যাসিমিলিয়ানো এ্যালেগ্রির দল। জুভেন্টাস স্টেডিয়ামে ৪-৩-৩ এর বদলে ৪-৩-১-২ ফর্মেশনে দল সাজিয়েছিলেন কোচ ম্যাসিমিলিয়ানো এ্যালেগ্রি। ডগলাস কস্তার বহিষ্কারাদেশের কারণে মূল একাদশে ফিরেছিলেন পাওলো দিবালা। উইং নির্ভর খেলার চেয়ে মাঝমাঠ থেকে আক্রমণ গড়তেই দিবালাকে ‘ফ্রি রোল’-এ খেলিয়েছেন এ্যালেগ্রি। আর রোনাল্ডো খেলেছেন কিছুটা ‘সেকেন্ড স্ট্রাইকার’ হিসেবে। উইং দিয়ে জুভেন্টাসের সব আক্রমণের মূলে ছিলেন তিনিই। ম্যাচে প্রথম সুযোগটা পেয়েছিলেন রোনাল্ডোই। ৮ মিনিটে প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে ‘সিআরসেভেনে’র শট ফিরিয়ে দেন নাপোলি গোলরক্ষক ডেভিড ওসপিনা। তবে এর মিনিট দুয়েক পর লিডটা নেয় নাপোলিই। এ্যালানের লম্বা পাস প্রথম টাচেই ক্রস করেন হোসে মারিয়া কায়েহন। গোলের মাত্র গজ দুয়েক দূর থেকে শেজনিকে পরাস্ত করতে ভুল করেননি দ্রিস মার্টেন্স। শুরুতেই গোল হজম করা জুভেন্টাস আক্রমণে ছিল একেবারেই সাধারণ গোছের। নেপোলিও থেমে থাকেনি। একের পর এক আক্রমণে কিয়েলিনিদের রীতিমতো নাকানি-চুবানি খাওয়াচ্ছিলেন মার্টেন্সরা। ১৭ মিনিটে আরেকটু হলেই লিডটা দ্বিগুণ করত নেপোলি। কিন্তু কায়েহনের জোরাল শট দুর্দান্তভাবে ফিরিয়ে দেন শেজনি। গোলরক্ষকের এমন দক্ষতায় জেগে ওঠে জুভেন্টাস। রোনাল্ডে, দিবালারা ফিরতে থাকেন স্বরূপে। সমতায় ফিরতেও খুব একটা সময় নেয়নি তারা। ২৬ মিনিটে বাঁপ্রান্ত থেকে রোনাল্ডোর নিখুঁত ক্রসে হেড করে দলকে সমতায় ফেরান মানজুকিচ। সমতায় ফেরার পর থেকে ম্যাচে কর্তৃত্বের ছড়ি চলে যায় জুভেন্টাসের হাতে। এতক্ষণ কিছুটা ঘুমিয়েই কাটানো কুলিবালি-আলবিওলদের মুহুর্মুহু পরীক্ষায় ফেলতে থাকেন রোনাল্ডোরা। তবে প্রতিপক্ষে শেজনির মতোই দক্ষ হাতে জুভেন্টাসকে হতাশ করেছেন সাবেক আর্সেনাল গোলরক্ষক ওসপিনা। প্রথমার্ধের শুরুটা দুর্বল হলেও দারুণভাবে ম্যাচে ফিরেছিল জুভেন্টাস। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দলকে এগিয়ে নেন মানজুকিচই। এবারও গোলে হাত রোনাল্ডোর। দিবালার পাস থেকে গোলের প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে নেয়া শট প্রতিহত হয় বারপোস্টে। কিন্তু ফিরতি বল ফাঁকা জালে ঠেলে দিতে ভুল করেননি ক্রোয়েশিয়ার স্ট্রাইকার। পিছিয়ে পড়ার পর ডাগআউটে কোচ কার্লো আনচেলত্তির হতাশা ছিল সুস্পষ্ট। মাঠে অধিনায়ক মারেক হামসিকের শূন্যদৃষ্টি যেন জানান দিচ্ছিল; হয়তো তিনিও জানেন, আর ফেরা হচ্ছে না ম্যাচে। হামসিকের এমন আশঙ্কা সত্যি হয় ৬০ মিনিটে। মাথা গরম করা এক ট্যাকেলের পর তর্কে জড়ানোর কারণে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন নেপোলি লেফটব্যাক মারিও রুই। দশজনের দলে পরিণত হওয়া নেপোলি সমর্থকরা তখন যেন বাড়ি ফেরার অপেক্ষায়। কিন্তু নেপোলি হাল ছাড়তে নারাজ। একজন কম নিয়েও জুভেন্টাসকে টেক্কা দিয়ে গেছে সমানে সমান। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে ৭২ মিনিটেই সমতায় ফিরতে পারত তারা। কিন্তু কায়েহনকে আবারও খালি হাতে ফিরিয়েছেন শেজনি।
×