ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সপ্তাহে ক্ষতি ৫শ’ মিলিয়ন পাউন্ড

ব্রেক্সিটের মাশুল দিচ্ছে ব্রিটেন

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১ অক্টোবর ২০১৮

 ব্রেক্সিটের মাশুল  দিচ্ছে ব্রিটেন

ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার জন্য ব্রিটিশ সরকারের প্রতি সপ্তাহে ৫শ’ মিলিয়ন পাউন্ড মাশুল গুণতে হচ্ছে এবং এই ব্যয় ধীরে ধীরে বাড়ছে, এ বিষয়ে এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। ব্রেক্সিটের পক্ষে থাকা আন্দোলনকারীরা যেমন ৩৫০ মিলিয়ন পাউন্ড ‘ডিভিডেন্ড’ প্রত্যাশা করেছিলেন, এই হিসাব স্পষ্টই তার বিপরীত। গার্ডিয়ান। সেন্টার ফর ইউরোপিয়ান রিফর্মসের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সরকারের ব্যয় সঙ্কোচন নীতির ফলে শেষ পর্যন্ত ব্রিটেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার পথ সুগম করে দিতে পারে। দেখা গেছে, ব্রেক্সিট বিষয়ে গণভোটে ইইউর সঙ্গে থাকার পক্ষে ভোট পড়লে যা হতো ইইউ ছাড়ার পক্ষে ভোট পড়ায় দেশটির অর্থনীতির আকার ২.৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। বার্ষিক সরকারী খরচ ২৬ বিলিয়ন পাউন্ড কমাতে হচ্ছে। প্রতি সপ্তাহে পরিমাণটি দাঁড়াচ্ছে ৫শ’ মিলিয়ন পাউন্ডে। এই পরিমাণটি বেড়েই চলেছে। বার্মিংহামে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে এ তথ্য প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে’র সরকারের জন্য বিব্রতকর। তার প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে। ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া নিয়ে ইইউর সঙ্গে সৃষ্ট অচলাবস্থা নিরসনের জন্য তিনি তার মন্ত্রীসভার সদস্যদের কাছ থেকে এখন বিপরীতমুখী পরামর্শ পাচ্ছেন। সম্প্রতি অস্ট্রিয়ার সালজবার্গে ইইউ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মে’র এ বিষয়ে আলোচনা কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়। একই সময় যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ব্যক্তিগত জেটে করে ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে দেখা করতে যান। ধারণা করা হচ্ছে ব্রেক্সিটের পর তিনি ব্যবসা ব্রিটেন থেকে গুটিয়ে ফ্রান্সে নিয়ে যাবেন। কনফেডারেশন অব ব্রিটিশ ইন্ডাস্ট্রি’র ডিরেক্টর জেনারেল ক্যারোলিন ফেয়াববেইর্ন বলেছেন, ভুল ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার ফলে ব্রিটেন যে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এটি তারই একটি উদাহরণ। মে’র মন্ত্রীসভায় এখন দাবি উঠেছে, কানাডা স্টাইলের নমনীয় একটি চুক্তি করার। মন্ত্রীসভায়ও এর পক্ষে মত জোরাল হচ্ছে। অনেক মন্ত্রী ও এমপি বলছেন, কোন চুক্তি ছাড়া ইইউ থেকে বেরিয়ে আসার চেয়ে একটি চুক্তি করা বরং ভাল। মে’র প্রস্তাবে সীমান্তে বাধা না থাকার কথা বলা হয়েছে। তবে এই ধারণা কানাডা স্টাইল চুক্তির সঙ্গে মেলে না। কারণ সেখানে সীমান্তের বিষয়টি রয়েছে। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীরা আশঙ্কা করছেন, কোন চুক্তি ছাড়া ইইউ থেকে বেরিয়ে আসার আশঙ্কাই এখন বাড়ছে। এর ফলে সীমান্ত ইস্যুতে ঝুঁকি বাড়ছে। এ কারণে তারা নিজেদের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত। ব্রিটেন আগামী বছর ২৯ মার্চ ইইউ ত্যাগ করবে। এটি এখনও পর্যন্ত চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত। মে জুলাইতে নতুন ব্রেক্সিট পরিকল্পনা প্রকাশের পর থেকে বাধার মুখে আছেন। ব্রেক্সিট বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসার যে নতুন নীল নক্সা তিনি তৈরি করেছেন তার প্রতি দল ও ব্যবসায়ীদের সমর্থন আদায় করতে তিনি ব্যর্থ হন। এদিকে ব্রিটেনে ব্রেক্সিট নিয়ে দ্বিতীয় ভোটের দাবি উঠছে। জনমত জরিপে দেখা গেছে, প্রতি তিন জনে দুইজন আরেকটি গণভোট চাইছেন। মে যদি শেষ পর্যন্ত পার্লামেন্টে তার পরিকল্পনা পাস করাতে ব্যর্থ হন তবে ফের গণভোটে যেতে চায় লেবার পার্টি। ইইউ থেকে ব্রিটেনের বের হয়ে যাওয়া সম্পর্কে লেবার মুখপাত্র কেইর স্টারমের দলের বার্ষিক সম্মেলনে ইউরোপীয় ইউনিয়নে থেকে যাওয়ার বিকল্প প্রস্তাব ও ব্যালট পেপারে থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন।
×