ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু সেতুর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের শিল্পায়নে এলএনজি সরবরাহ করা হবে

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ১ অক্টোবর ২০১৮

 বঙ্গবন্ধু সেতুর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের শিল্পায়নে এলএনজি সরবরাহ করা হবে

সমুদ্র হক ॥ বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপ্রান্ত উত্তরÑপশ্চিমাঞ্চলের শিল্পায়নে গ্যাসের চাহিদা পূরণে লিক্যুফায়িড নেচারাল গ্যাসের (এলএনজি) ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ জন্য সিরাজগঞ্জ বগুড়া রংপুর সৈয়দপুর হয়ে দিনাজপুর এবং রাজশাহী পর্যন্ত এলএনজি সরবরাহ লাইন তৈরি করা হবে। একই সঙ্গে উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র বাড়ানো হবে। শনিবার সকালে বগুড়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জ্বালানি ও খনিজ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিম উন্নয়ন বিষয়ক মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন। বগুড়ায় শিল্পায়নের অগ্রযাত্রায় গ্যাস মিলছে না, যে কারণে শিল্প উদ্যোক্তারা হতাশ হয়ে পড়ছেন- বগুড়া চেম্বারের একজন কর্মকর্তার এই প্রশ্নের উত্তরে সচিব বলেন, বর্তমানে যে প্রাকৃতিক গ্যাস আছে তা নির্ধারিত মাত্রার চাপে পূর্বাঞ্চল থেকে উত্তরাঞ্চলে সরবরাহ করতে অনেক জটিলতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। সাভার গাজীপুর পর্যন্ত এসে আর এগিয়ে যেতে পারছে না। ৃসরবরাহ বাড়িয়ে স্বাভাবিক বিতরণ ঠিক রাখতে এলেঙ্গায় একটি ডিস্ট্রিবিউশন পয়েন্ট বানানোর পরও তা নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। যে কারণে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের গ্যাসের চাহিদা মিটিয়ে শিল্পায়নকে এগিয়ে নিতে এলএনজি আমদানি করা হবে। এলএনজি আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশ প্রাকৃতিক গ্যাসের সরাসরি ব্যবহার না করে এলএনজি ব্যবহার শুরু করেছে। এতে বাইপাস না করলে গ্যাসের অপচয় রোধ হয়। গ্যাসের স্বাভাবিক সরবরাহে কোন বিঘœ ঘটে না। বাংলাদেশেও এলএনজি সরবরাহ ও বিতরণ করা হবে। এলএনজি আসার পর উত্তরাঞ্চলের শিল্পায়নে আর কোন বাধা থাকবে না। একদার শিল্পনগরী বগুড়া তার হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে। পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলের রংপুর সৈয়দপুর দিনাজপুর পর্যন্ত এলএনজি পৌঁছানো হবে। যাতে উত্তরাঞ্চলের প্রতিটি এলাকার উদ্যোক্তরা গ্যাস ব্যবহারে শিল্প স্থাপন করতে পারে। এ সময় একজন প্রশ্নকর্তা জানতে চান, এলএনজি এলে কি লিক্যুফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে! এর উত্তরে তিনি জানান, এলপিজি বন্ধ হবে না। কারন পেট্রোলিয়াম জাতীয় পন্যের রিসিডিও রিফাইনারীতে নিয়ে এলপিজি উৎপাদন করে সিলিন্ডারে ভরানো হয়। এলএনজির পাশাপশি এলপিজিও থাকবে। সচিব জানান বর্তমান অবস্থায় দেশের সার্বিক উন্নয়নে নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত এলএনজির বিকল্প নেই। উন্নয়নের চলমান প্রক্রিয়ায় এখন এলএনজি বেশি প্রয়োজন। এলএনজির জন্য আপাতত ভাসমান টার্মিনাল তৈরি করা হবে। আশা করা হচ্ছে আগামী জুল জুলাইয়ের মধ্যে এলএনজি সরবরাহ ও বিতরণ শুরু করা যাবে। এলএনজি বিতরণ শুরু হলে চাহিদার চাপ যাতে না বেড়ে যায় এ জন্য বিশেষ ট্রান্সমিশন লাইনের ব্যবস্থা করা হবে। এলএনজি প্রসঙ্গে তিনি বলেন বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে এই এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। এই গ্যাসের অপচয় রোধে তিনি সকলকে সচেতন হওয়ার আহŸান জানান। তিনি জানান, বর্তমানে যে প্রাকৃতিক গ্যাসের সঞ্চালন আছে তাতে ডোমেস্টিক সংযোগ (বাসাবাড়িতে সংযোগ) আর দেয়া হয়তো সম্ভব হবে না। নতুন সংযোগে আগামীতে বাসাবাড়িতেও এলএনজি সরবরাহ দেয়া হবে। তিনি মনে করেন দেশের উন্নয়নের ধারায় দিনে দিনে গ্যাসের চাহিদা বাড়বে। এলএনজিরও ব্যবহারও বাড়বে।
×