ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সুমন্ত গুপ্ত

জমে উঠেছে পূজার বাজার

প্রকাশিত: ০৭:০৯, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

জমে উঠেছে পূজার বাজার

শারদীয় দুর্গাপূজায় নতুন পোশাকের সঙ্গে উৎসবের রঙে নিজেদের রাঙাতে পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজারে জমে উঠেছে শাঁখা, সিঁদুর ও আলতার বেচাকেনা। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন শাঁখার কারিগররা। সাজানো হবে মা দুর্গাকেও। তাই প্রতিমার নতুন পোশাক ও মুকুটের সঙ্গে দেবীকে অঞ্জলি দেয়ার থালা, প্রদীপসহ পূজার নানা সরঞ্জামের বিক্রিও জমজমাট। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার কড়া নাড়ছে দ্বারে। তাই শাঁখারীবাজারে এখন সাজ সাজ রব। সড়কের ওপর বাঁশ-কাঠ দিয়ে অস্থায়ী মণ্ডপ নির্মাণ করা হচ্ছে। সড়কের দুই পাশের ছোট ছোট দোকানে দেদার বিক্রি হচ্ছে পূজার প্রয়োজনীয় সাজসরঞ্জাম। শারদীয় দুর্গা উৎসব উপলক্ষে সর্বত্রই এখন উৎসবের আমেজ। মা দর্শনে সবাই সাজবে নতুন সাজে। তাই নতুন পোশাকের সঙ্গে দেবী দুর্গাকে বরণে নতুন শাঁখা, সিঁদুর ও আলতার জন্য পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজার এখন হিন্দু রমণীদের পদচারণায় মুখর। বিশেষ করে দশমীতে মার সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে সিঁদুর খেলায় মাতবেন ভক্তরা। দেব-দেবীর পোশাক ও অলঙ্কারের বেশিরভাগই ভারত থেকে আমদানি করা। এমনকি পার্শ্ববর্তী এই দেশটি থেকে প্রচুর পরিমাণে শাঁখা আসছে। চীন থেকেও আসে দেব-দেবীর মূর্তিসহ বিভিন্ন সামগ্রী। আর দেশে তৈরি হচ্ছে শোলার মুকুট ও কিছু সরঞ্জাম এবং কাঁসা-পিতলের প্রদীপ, কলস, ঘটি-বাটি ইত্যাদি। রাধা-কৃষ্ণ, গণেশসহ বিভিন্ন মূর্তি এবং কাঁসা-পিতলের প্রদীপ, কলস, থালা-বাসন ইত্যাদি পাওয়া যায় ‘ধামরাই বাসনালয়’ নামের দোকানে। ‘কাঁসা-পিতলের ব্যবহার আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। তবে দুর্গাপূজার আগে বেচাবিক্রি ভালোই হয়।’পূজার দশমীতে সিঁদুর উপহার দেওয়ার নিয়ম আছে। যার ফলে অনেকেই নতুন করে সিঁদুর আর সিঁদুরের কৌটা কেনেন। বাজারে মহাতীর্থ, বিন্দুসহ বিভিন্ন কোম্পানির সিঁদুর পাবেন ১০ থেকে ১৫ টাকার মধ্যে। অবিবাহিতরাও অনেকে সিঁদুরের মতো করে আবির পরেন। বিভিন্ন রঙের আবিরও পাওয়া যায়। মান ভিত্তিতে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত প্রতি কেজি আবিরের দাম। সিঁদুর রাখার জন্য কৌটাও পাওয়া যায়। সাধারণ মখমল কাপড়ের কৌটার দাম ৪০ টাকা। আছে গাছ কৌটা, দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা। রুপার কৌটার দাম ৩০০ টাকা থেকে শুরু। পূজায় নতুন পোশাকের পাশাপাশি নতুন শাঁখা পরারও নিয়ম। বিভিন্ন মান ও ডিজাইনের শাঁখা পাওয়া যায়। পুঁতি বসানো শাঁখার দাম ৬০০ থেকে ১২০০ টাকা। বিভিন্ন নকশায় খোদাই করা শাঁখার দাম ৩০০ থেকে ৮০০ টাকা। সোনা দিয়ে বাঁধানো শাঁখাও পাওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে সোনার পরিমাণের ওপর নির্ভর করে শাঁখার দাম। অর্ডার করে ডিজাইন দিয়ে বানিয়েও নিতে পারেন। সাদা ও লাল দুই রঙের পলা রয়েছে। তবে লাল পলাই বেশি বিক্রি হয়। বিভিন্ন কাটিং, পুঁতি বসানো ও সিটি গোল্ড বসানো পলা একটু মোটা ধরনের হয়। দাম ২০০ থেকে ৫০০ টাকা। বেশ স্টাইলিশ ফেন্সি পলা রয়েছে, যার দাম ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা। গোল্ড প্লেটে বাঁধানো পলার ফ্রেম পাবেন ২০০ টাকায়। এটা কিনে পরে আলাদাভাবে সোনার দোকান থেকে বাঁধিয়ে নিতে পারবেন পলাটি। মঙ্গলসূত্র কিনে থাকেন অনেকেই। সাধারণ মঙ্গলসূত্রের দাম ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা। সিটি গোল্ডের মঙ্গলসূত্রের দাম ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা। সিঁদুরের সঙ্গে মিলিয়ে অনেকে কপালে লাল টিপ দেন। গোল, লম্বাটেসহ বিভিন্ন ধরন ও রঙের টিপ রয়েছে। দাম ৫ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত প্রতি পাতা।
×