ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আমদানি পণ্যবাহী জাহাজের হার বাড়লেও ব্যবসায়ীরা সুবিধাবঞ্চিত

প্রকাশিত: ০৬:১১, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

আমদানি পণ্যবাহী জাহাজের হার বাড়লেও ব্যবসায়ীরা সুবিধাবঞ্চিত

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোরের নওয়াপাড়া নৌ-বন্দরে কার্গো জাহাজে পণ্য আমদানি বাড়ছে। বর্তমানে বন্দরের ৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ড্রেজিংয়ের কাজ চলছে। এটি শেষ হলে জাহাজ চলাচল আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন কর্তৃপক্ষ। বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে নওয়াপাড়া নৌ-বন্দরে এক হাজার ৪৫০টি জাহাজে পণ্য আমদানি করা হয়েছে ৭ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে এক হাজার ৪৫৮টি জাহাজে আমদানি হয়েছে ৭ লাখ ২৯ হাজার মেট্রিক টন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এক হাজার ৪৬৪টি জাহাজে আমদানি পণ্য এসেছে ৭ লাখ ৩২ মেট্রিক টন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এক হাজার ৪৭০টি জাহাজে ৭ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়েছে এবং সর্বশেষ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এক হাজার ৪৬৮টি জাহাজে আমদানি পণ্য এসেছে ৭ লাখ ৮৪ হাজার মেট্রিক টন। এই বন্দর দিয়ে মূলত সার, সিমেন্ট, কয়লা, গমসহ বিভিন্ন পণ্য এসে থাকে। গেল ২০১৭-১৮ অর্থবছরে নওয়াপাড়া বন্দর দিয়ে সার এসেছে ২ লাখ ২৬ হাজার মেট্রিক টন, কয়লা এক লাখ ৯৫ হাজার মেট্রিক টন, গম এক লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন, সিমেন্ট এক লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন এবং অন্যান্য পণ্য আমদানি করা হয়েছে ৫৪ হাজার মেট্রিক টন। জানা গেছে, ২০০৪ সালের এপ্রিলে ঘোষণা দেয়া হয় যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ায় নদীবন্দর স্থাপনের। ২০০৭ সালের মে মাসে শুরু হয় এর কার্যক্রম। ভৈরব নদের চেঙ্গুটিয়া থেকে ভাটপাড়া ফেরিঘাট পর্যন্ত প্রায় সাড়ে বারো কিলোমিটার দীর্ঘ সীমানা নির্ধারণ করা হয় নদীবন্দরটির। স্থাপন করা হয় ছয়টি পন্টুন। আয় হতে থাকে রাজস্ব। সময়ের সঙ্গে বেড়েছে রাজস্ব আয়। কিন্তু এতটুকুও বাড়েনি নদীবন্দরের উন্নয়ন কাজ। বরং কাজের অংশীদারিত্ব নিয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং নওয়াপাড়া পৌরসভার মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে এডিবি’র (এশিয়ান উন্নয়ন বাংক) দুই শ’ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প। এসব জটিলতা নিয়ে নওয়াপাড়া নদীবন্দরটি একটি পরিপূর্ণ বন্দর হিসেবে গড়ে উঠতে পারছে না। আর এ কারণে কাক্সিক্ষত সুবিধা পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। নওয়াপাড়ার কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, সড়ক, রেল ও নদীপথে ভাল যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের শুরুতে নওয়াপাড়ায় ব্যাপক প্রসার ঘটে সার, খাদ্যশস্য ও সিমেন্ট ব্যবসার। নওয়াপাড়া পরিণত হয় দেশের অন্যতম বড় বিপণন কেন্দ্রে। আমদানি করা সার ও খাদ্যশস্য চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে বড় জাহাজ থেকে খালাসের পর তা ছোট বার্জ ও কার্গোতে করে নদীপথে নওয়াপাড়া বন্দরে আনা হয়। ভৈরব নদে প্রতিদিন অর্ধশতাধিক বার্জ ও কার্গো থেকে পণ্য উঠানো-নামানো হয়। এ ছাড়া, ভারত থেকে স্থলপথে যে সব পণ্য আমদানি করা হয় তার বেশিরভাগ রেলের ওয়াগনে করে দর্শনা স্থলবন্দর হয়ে নওয়াপাড়ায় আনা হয়। এ সব পণ্য সড়ক ও নদী পথে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, প্রয়োজনীয় স্থাপনা নির্মাণ, নৌপথ ড্রেজিং, ওয়ার হাউজের সুবিধাদি বৃদ্ধি, নদী ভাঙ্গনরোধে কী-ওয়াল নির্মাণ, মালামাল ওঠানামার জন্য আরসিসি সিঁড়ি নির্মাণ এবং মালবাহী ট্রাকের জন্য পার্কিং ইয়ার্ড নির্মাণ করেনি বন্দর কর্তৃপক্ষ।
×