ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফের সার্র্জিক্যাল স্ট্রাইক!

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ফের সার্র্জিক্যাল স্ট্রাইক!

ভারতীয় বাহিনী সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তান ভূখণ্ডে ফের হামলা চালিয়েছে। শুক্রবার দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং এ বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে তাদের বাহিনী ঠিক কী করেছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি। তিনি জানিয়েছেন বিনা উস্কানিতে বিএসএফ জওয়ান হত্যার বদলা নিতে এটি করা হয়েছে। এদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশী বলেছেন, ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ কোন বিকল্প নয়। -টাইমস অব ইন্ডিয়া। পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীরে লাইন অব কন্ট্রোল বরাবর ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানোর দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির সময় ফের হামলার ইঙ্গিত দিল ভারত। শুক্রবার মুজাফফর নগরে এক সমাবেশে বক্তৃতাকালে রাজনাথ সিং বলেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বড় একটা কিছু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার উপর আস্থা রাখুন। দু-তিন দিন আগেই বড় একটা কিছু ঘটেছে। এখন বলব না। ভবিষ্যতে আরও কি হয় লক্ষ্য রাখুন।’ কাশ্মীরের সাম্বা জেলার আন্তর্জাতিক সীমান্তে বিএসএফ জওয়ান নরেন্দর সিং হত্যার কথা উল্লেখ করে রাজনাথ বলেন, ‘আমাদের সৈন্য হত্যার বদলা নিতে লাইন অব কন্ট্রোল বরাবর আমরা যথেষ্ট কিছু করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তান আমাদের প্রতিবেশী। তবে তারা হামলা করলে আমরা চুপ করে বসে থাকতে পারি না। সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে ভারতে নতুন একটা কিছু করার জন্য সরকারের ওপর চাপ ছিল। তার এই বক্তব্যের পর শনিবার ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের ডিরেক্টর জেনারেল কে কে শর্মাও একই কথা বলেছেন যে, যথেষ্ট ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ভারতের পাল্টা আঘাতে বহু পাকসেনা হতাহত হয়েছে বলে সূত্র জানায়। অভিযোগ রয়েছে, ১৮ সেপ্টেম্বর রামগড় সেক্টরের সীমান্তে বনজঙ্গল পরিষ্কার করার সময় পাকিস্তানের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা গুলি চালিয়ে বিএসএফ জওয়ান নরেন্দর সিংকে হত্যা করে। এরপর ওই জওয়ানের দেহ টেনে নিয়ে চলে যায় পাকসেনারা। পরদিন তার গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তার দেহে একাধিক গুলির ক্ষত ছিল। এই ঘটনায় ক্রুব্ধ হয় বিএসএফ। ভারতের সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত অবশ্য কয়দিন আগে প্রকাশ্যেই হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, আরেকটি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করার সময় আসন্ন। মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে পাকিস্তান ও কাশ্মীর প্রসঙ্গে নানা প্রশ্নের জবাব দেন বিপিন রাওয়াত। তিনি বলেন, ‘চলতি বছরের মে মাসে সীমান্তে অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছিল পাকিস্তান। আমরা সেটা মেনে নিয়েছিলাম। সহিংসতা অব্যাহত থাকলে পাকিস্তানীরাই বেশি ঝুঁকিতে পড়ত। কারণ সীমান্তের কাছে তাদের অনেকে থাকে। রাওয়াতের মতে, পাকিস্তানের এমন পদক্ষেপ নেয়া উচিত যাতে বোঝা যায় সন্ত্রাস দমনে তারা আন্তরিক। কিন্তু তাদের তরফে এখনও তেমন কোন ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। এদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ কোন বিকল্প বা সমাধান নয়। এক্ষেত্রে আলোচনাই সম্পর্ক উন্নয়নে প্রধান ভূমিকা রাখতে পারে বলে তিনি মনে করেন। আলজাজিরা টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানের নতুন সরকার ভারতসহ যুক্তরাস্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায়। পাকিস্তানে নির্বাচনের পরদিন ২৬ জুলাই প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ভারতের শান্তি প্রস্তাব দেন। ওই কথা উল্লেখ করে কোরেশী বলেন, ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনায় বসার উদ্যোগকে তাদের সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নীতি। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক সম্মেলনে এবার অবশ্য পাকিস্তানের প্রত্যাশা মতো কোরেশীর সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের মধ্যে কোন বৈঠক হয়নি।
×