ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মা সেতুর বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সভা কাল, ১৩ অক্টোবর যাবেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৮:৪৯, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 পদ্মা সেতুর বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সভা কাল, ১৩ অক্টোবর যাবেন প্রধানমন্ত্রী

মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মাওয়া থেকে ফিরে ॥ জাজিরা সার্ভিস এরিয়ায় পদ্মা সেতুর বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সভা বসছে রবিবার। পদ্মা সেতুর বিশেষজ্ঞ প্যানেল প্রধান অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ বিদেশী বিশেষজ্ঞসহ পুরো বিশেষজ্ঞ দলটির অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। সভায় সেতুর চলমান কাজের অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জগুলো সফলভাবে এগিয়ে নেয়া এবং কাজের সঠিক মান নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। তলদেশে নরম মাটির চ্যালেঞ্জটির বিষয়ে যে যে নক্সা হয়েছে, তার সফল বাস্তবায়ন এবং নক্সা অনুযায়ী পাইলের খাঁজকাটা টিউব তৈরির কাজ সরেজমিন পরিদর্শন করবেন। নানা কারণেই প্যানেল অব এক্সপার্টদের সভাটি গুরুত্বপূর্ণ। তিনদিনের সভাটি শেষ হবে ২ অক্টোবর। বিশেষজ্ঞ প্যানেলের নবম সভা এটি। এই সভার ‘মাইলস্টোন মিটিং’ ঘিরে চলছে নানা প্রস্তুতি। বিদেশী তিনজন ইতোমধ্যেই পৌঁছে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৩ অক্টোবর মাওয়ায় আসছেন। পদ্মা সেতুর রেলের কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন তিনি। তার আগমন ঘিরে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। আজ শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সফর প্রস্তুতির বিষয়ে সরেজমিনে আসছেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। সঙ্গে থাকছেন মন্ত্রণালয় ও দফতরের উর্ধতন কর্মকর্তারা। এদিকে একের পর এক পদ্মা সেতুর পাইল স্থাপন চলছে। শুক্রবার পর্যন্ত ১৭৯ পাইল বসেছে। আরও ১৩ পাইলের বটম সেকশন হয়েছে। পদ্মা সেতুর স্প্যানের ওপর পরীক্ষামূলক রেল স্লাব বসানো হয়েছে। মঙ্গলবার সেতুর জাজিরা প্রান্তের স্প্যানে (সুপার স্ট্রাকচার) রেলওয়ে স্লাব বসেছে। ৭এফ স্প্যানের ওপর এরই মধ্যে প্রথম সেকশনে আটটি স্লাব বসিয়ে দেয়া হয়েছে। একেকটি স্প্যানে ৮টি সেকশনে আট করে মোট ৬৪ স্লাব বসবে। সেই সঙ্গে প্রতি জয়েন্টে বসবে আটটি করে স্লাব। প্রতিটি স্প্যানে জয়েন্টস মোট ৭২ রেলওয়ে স্লাব বসবে। ‘৭এফ’ স্প্যানে সেতুর সর্বশেষ প্রান্তের ৪১ ও ৪২ নম্বর খুঁটির স্প্যানের একটি সেকশনে ৮টি স্প্যান বসানো হয়। দায়িত্বশীল প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, ৮ টন ওজনের একেকটি স্লাবের দৈর্ঘ্য ২ মিটার এবং প্রস্থ ৫.১৫ মিটার। পরীক্ষামূলক এই স্লাব বসানো হয়েছে। পরবর্তীতে স্লাবের মধ্যবর্তী স্থানে কংক্রিট ঢালাইয়ের কাজ হবে। স্প্যানের ওপর রাখার আগে লোডটেস্টসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। মাওয়া প্রান্তে সাত শত বেশি স্লাব প্রস্তুত রয়েছে। জাজিরা প্রান্তে এখন যে ছয়টি পিলারে পাঁচটি স্প্যান বসানো তাতে রেলওয়ে স্লাব বসানো হচ্ছে। স্ট্রিংগার বসানো হবে স্লাবের সঙ্গেই। ওপরের তলায় বসানো হবে রোডওয়ে বক্স স্লাব। মাওয়ার কুমারভোগের বিশেষায়িত ওয়ার্কসপে এই স্লাব তৈরি হচ্ছে। সেতুর প্রকৌশলীরা শুক্রবার জনকণ্ঠকে জানান, রোডওয়ে বক্স স্লাব যে সেকশনের স্লাব বসেছে, তা পরীক্ষামূলক। এটি সফল হলেই বাকি সেকশনেও স্লাব বসতে থাকবে। প্রতিদিন স্লাব তৈরি হচ্ছে। এদিকে খাঁজকাটা (ট্যাম) পাইল তৈরির কাজ চলছে পুরোদমে। প্রকৌশলীরা জানান, সেতুর ১১ খুঁটিতে বিশেষ এই পদ্ধতি ব্যবহার হচ্ছে। সেতুর এই ১১ খুঁটির (পিয়ার) ৭৭ টিউব এখন আবার ওয়ার্কসপে নেয়া হয়েছে। সেখানে খাঁজকাটার কাজ চলছে। ৩ মিটার ডায়ার প্রতিটি পাইল টিউবে দশটি করে খাঁজ লাগানো হচ্ছে। এই খাঁজ দিয়েই সিমেন্ট মিশ্রণ চলে যাবে নদীর তলদেশের নরম মাটিতে। বিশেষ সিমেন্ট মিশ্রণ মাটিকে শক্ত ভিতে নিয়ে আসবে। সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিশেষজ্ঞরা এই প্রক্রিয়া প্রয়োগ করছেন। ট্যামগুলোর মুখের অংশ এমন চোখা রাখা হয়েছে, যাতে মাটিতে প্রবেশ সহজ হয়। তবে খাঁজসহ এই পাইল স্থাপনে হ্যামারের শক্তি বেশি ব্যবহার করতে হবে। এই ট্যাম দিয়ে নরম মাটিতে ঢোকানো হবে বিশেষ ধরনের সিমেন্টের মিশ্রণ।
×