ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ডিমলায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর অফিসে হামলা, গুলি

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

  ডিমলায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর অফিসে হামলা, গুলি

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী ১ (ডোমার-ডিমলা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সরকার ফারহানা আক্তার সুমীর ডিমলা উপজেলা শহরের রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলা হয়েছে। এ সময় হামলাকারীরা ওই কার্যালয়ে থাকা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি, চেয়ার টেবিল আলমিরা, সুমীর সমর্থকদের দুইটি মোটরসাইকেল ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলাকারীদের বাধা দিতে গেলে হামলাকারীদের আঘাতে সুমীর ১২ জন সমর্থক আহত হয়। হামলা ঘটনার চিত্রধারণ করার সময় বাংলা টিভির জেলা প্রতিনিধি আলফাজ আল মামুনকে মারধর ও তার ভিডিও ক্যামেরা, মাথায় থাকা হেলমেট ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা হতে এই হামলার ঘটনাটি রাত ৯টা পর্যন্ত চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ডিমলা থানা পুলিশ শর্টগানের তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। এ সময় এলাকার মানুষজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে ডিমলা জুড়ে থমথমে ভাব বিরাজ করছে। মনোনয়ন প্রত্যাশী সুমীর সমর্থকদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই কার্যালয়ে কয়েকজন সমর্থক বসে কথাবার্তা বলছিলেন। এ সময় সংসদ সদস্য ও ডিমলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব উদ্দিন সরকারের কিছু সমর্থক তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তারা কার্যালয়ে প্রবেশ করে বিভিন্ন আসবাবপত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুর করে। হামলায় সাত জন আহত হয়। তাদের মধ্যে উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহআলম (৩৮), বালাপাড়া ইউনিয়নের আট নম্বর ওয়ার্ডের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ ফিরোজ আহমেদকে (২৮) ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ডিমলা ইসলামিয়া কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আব্দুল গফুরকে (২২) ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে সেখান থেকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে পুলিশ এসে ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে ওই ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে শুক্রবার বেলা ১১টায় জেলা শহরের একটি হোটেলের সম্মেলন কক্ষে ডোমার উপজেলা চিলাহাটির মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানীর মেয়ে কেন্দ্রীয় যুবমহিলা লীগের সহশিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কমিটির সাধারণ সম্পাদক (কল্যাণ ও পুনর্বাসন) সরকার ফারহানা আক্তার সুমী সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে সুমী বলেন আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নীলফামারী ১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। নির্বাচনী এলাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের তৃণমূলসহ দলের ছাত্রলীগ, যুবলীগ, যুবমহিলা লীগ ও সাধারণ মানুষজনের ব্যাপক জনসমর্থন সৃষ্টি হয়েছে। দিন দিন তার জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছে ডোমার ও ডিমলা উপজেলায়। এ জন্য তিনি দুই উপজেলা শহরে তার জনসংযোগ ও প্রচারণার জন্য রাজনৈতিক কার্যালয় খোলেন। রাজনৈতিক কার্যালয়ে তার সমর্থকরা প্রতিদিন ভিড় করে। এ ছাড়া তিনি গ্রামে গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় সুমী অভিযোগ তুলে বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নীলফামারী ১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও ডিমলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব উদ্দিন সরকার তার পরিবারের ভাতিজা পারভেজ, রিপন, সায়েম, কানন ও ফিরোজের নেতৃত্বে তাদের আগুন খাওয়া সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে আমার ডিমলা অফিসে হামলা চালায়। বাধা দিতে গেলে হামলাকারীদের আঘাতে আমার সমর্থক ছাত্রলীগ যুবলীগের নেতা ও কর্মী শাহ আলম, আব্দুল গফুর, স্বপন, ফিরোজ ইসলাম, আব্দুল বারী সুর্য্য, আরিফুর ইসলাম ডালিমসহ ৭ জন আহত হয়। এ সময় হামলাকারীরা আমার রাজনৈতিক কার্যালয়ের টেবিল চেয়ার আলমিরা ও দুটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। সুমী দুঃখ প্রকাশ করে জানায়, হামলাকারীরা আমার রাজনৈতিক কার্যালয়ে থাকা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি ও আমার বিভিন্ন স্থানে থাকা ব্যানার ফেস্টুন ভাংচুর করে ছিঁড়ে ফেলে। সুমী এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে সাংবাদিকদের মাধ্যমে বলেন ডোমার ও ডিমলাবাসী আজ একটি পরিবারের পোষ্য আগুন খাওয়া বাহিনীর অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তি চায়। তাই সুমী মনে করেন দলের হাইকমান্ড থেকে এহেন দুর্বৃত্তায়ন হামলা ভাংচুরের বিরুদ্ধে দলীয় সিদ্ধান্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সুমী জানায় এ ঘটনায় ডিমলা থানায় মামলা দায়েরের জন্য লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে মুঠোফোনে কথা বলা হলে সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার সাংবাদিকদের বলেন, মনোনয়ন প্রত্যাশী সরকার ফারহানা আক্তার সুমীর কোনো কার্যালয় ভাংচুরের ঘটনা ঘটেনি। ছাত্রলীগের দুইটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে বলে শুনেছি। তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমি ডোমার উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নে এক কর্মিসভায় ছিলাম।
×