ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পঞ্চগড়ে মাঠ তরুণ সম্ভাব্য প্রার্থীদের দখলে

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

পঞ্চগড়ে মাঠ তরুণ সম্ভাব্য প্রার্থীদের দখলে

স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড় ॥ জাতীয় নির্বাচনের এখনও তফসিল ঘোষণা হয়নি। এরপরও জেলার সর্বত্রই জোরেশোরে শুরু হয়েছে নির্বাচনী ডামাডোল। গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারের হোটেল-রেস্তরাঁ আর ছোটছোট চা দোকানগুলোতে চলছে আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা। সাধারণ ভোটারদের নিজেদের মধ্যে আলোচনায় প্রাধান্য পাচ্ছে, বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় ঐক্যজোট নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না ২০০৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মতো এবারও নির্বাচন বানচাল করতে দেশব্যাপী নাশকতামূলক কর্মকা- ঘটিয়ে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে। তবে, সম্ভাব্যপ্রার্থীদের সংসদীয় এলাকায় পদচারণা জেলার সর্বত্রই মুখরিত হয়ে উঠেছে। প্রবীণদের চেয়ে এবার নবীনদেরই দাপট বেশি দেখা যাচ্ছে জেলার দুটি আসনেই। নবীন-প্রবীণদের বাইরেও তরুণরাও নির্বাচনী প্রচার আর মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা ইতোমধ্যেই কয়েক দফা নিজ নির্বাচনী এলাকায় সফর করে পরিচিতি সভা, সমাবেশ ও উঠান বৈঠক করেছেন। প্রবীণরাও এলাকায় গণসংযোগ ও ভোটারদের কাছে দোয়া-আশীর্বাদ চাইছেন। দেশের সর্ব উত্তরের তিনদিকে ভারত সীমান্তঘেঁষা জেলা পঞ্চগড়ে দুটি সংসদীয় আসনের মধ্যে পঞ্চগড়-১ আসনে (সদর, তেঁতুলিয়া ও আটোয়ারী উপজেলা) জাসদ (আম্বিয়া-প্রধান) গ্রুপের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল হক প্রধান এবং পঞ্চগড়-২ আসনে (বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলা) জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সুপ্রীমকোর্ট বার কাউন্সিলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম বর্তমান সংসদ সদস্য। এ দুই জন ছাড়াও আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি (এরশাদ), সিপিবি, জাসদ, জাগপা, ইসলামীক দল, জাকের পার্টি, স্বতন্ত্র হিসেবে আসন দুটিতে এক ডজনেরও বেশি সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। বৃহৎ দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থীকে গণসংযোগ করতে দেখা গেছে। আবার জোট, মহাজোটের শরিক দলগুলোরও অনেকে জোট-মহাজোটের ব্যানারে মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। সবকিছু মিলে পঞ্চগড়ের দুটি আসনেই নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। পঞ্চগড় শহরসহ গ্রামগঞ্জে এখন প্রতিদিনই মোটরসাইকেলের শোভাযাত্রা নিয়ে ভোটারদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা জানান দিচ্ছেন। প্রচারে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এরমধ্যে তরুণরাই বেশি। পঞ্চগড়-১ আসনে তরুণ প্রার্থীদের মধ্যে যারা গণসংযোগের দৌড়ে এগিয়ে আছেন তারা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট, প্রধানমন্ত্রী দফতরের এটুআই প্রকল্পের সাবেক জনপ্রেক্ষিত কর্মকর্তা নাঈমুজ্জামান মুক্তা, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি জাগপার কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান, বিএনপির স্থায়ী পরিষদের সদস্য ও সাবেক স্পীকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারের ছেলে কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, জাতীয় পার্টির (এরশাদ) আবু সালেক। প্রবীণদের মধ্যে পঞ্চগড়-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় জাসদের (আম্বিয়া-প্রধান) সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল হক প্রধান, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মজাহারুল হক প্রধান, পঞ্চগড় পৌর বিএনপির সভাপতি ও পঞ্চগড় পৌর মেয়র তৌহিদুল ইসলাম, সাবেক স্পীকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির ও সাবেক সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল খালেক। সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাটের কর্মীরা প্রতিদিনই নির্বাচনী এলাকার কোথাও না কোথাও মোটরসাইকেল শোডাউন, পথযাত্রা, নির্বাচনী সভা-সমাবেশ করে চলেছে। তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতে গভীররাত পর্যন্ত গ্রামেগঞ্জে বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড তুলে ধরে আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আবারও শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী করতে ভোটারদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছেন। জেলার সর্বকনিষ্ঠ ও তরুণ উদীয়মান নেতা হিসেবে বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রাকে আরও গতিশীল করার প্রয়াসে সাধারণ ভোটারদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে সুন্দরভাবে তুলে ধরছেন। এতে করে সাধারণ মানুষের কাছে বর্তমান সরকারের প্রতি আস্থা বাড়ছে। এই আসনের আরেক তরুণ সম্ভাব্য প্রার্থী নাঈমুজ্জামান মুক্তা। তিনিও আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে লবিং চালাচ্ছেন। তার সমর্থিত নেতাকর্মী ও সমর্থকরা প্রতিদিনই পঞ্চগড় শহরসহ নির্বাচনী এলাকায় মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে মুক্তার পক্ষে প্রচার চালাচ্ছে। নাঈমুজ্জামান মুক্তাও নির্বাচনী এলাকায় এসে বিভিন্নস্থানে জনসভা-পথসভা করেছেন এবং ভোটারদের বাড়ি-বাড়ি ঘুরেছেন। জাগাপার ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান, জাতীয় পার্টির (এরশাদ) আবু সালেকওবসে নেই। তারাও মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
×