ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন

প্রকাশিত: ০৮:০৩, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

জিয়া চ্যারিটেবল  ট্রাস্ট মামলার  কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে  আবেদন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারকাজ চলমান রাখার নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করা হয়েছে। আবেদনে বিশেষ জজ আদালতের আদেশ বাতিলের পাশাপাশি মামলার কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ভুয়া জন্মদিন পালন ও মুক্তিযুদ্ধকে ‘কলঙ্কিত’ করার অভিযোগে মানহানির দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আগামী ২৪ অক্টোবর দিন ধার্য করেছে আদালত। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারকাজ চলমান রাখার নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন দাখিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ক্রিমিনাল ল এ্যামেন্ডমেন্ট এ্যাক্টের ১০(১) ধারায় এ আবেদন করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিচারিক আদালতের আদেশ আইনবহির্ভূত। এর আগে মামলাটিতে যুক্তিতর্ক শেষ করে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হবে কিনা- এ বিষয়ে আদেশের জন্য ৩০ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছে আদালত। বুধবার পুরান কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান আদেশের দিন ধার্য করেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজা হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর থেকে গত ৫ সেপ্টেম্বর ছাড়া আর একবারও আদালতে হাজির হননি বেগম জিয়া। আইনজীবী কায়সার কামাল সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম জিয়া শারীরিকভাবে অনেক অসুস্থ। সেই অসুস্থতার কারণ এবং অবাঞ্ছিত একটি কারাগারে আদালত স্থাপন করায় এ আবেদন করা হয়েছে। বেগম জিয়া অসুস্থ, যে কারণে তিনি আদালতে হাজির হননি। কিন্তু গত ২০ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ পরিচালনার জন্য আদেশ দেয়া হয়। সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে তার সুস্থতা সবার আগে দেখা উচিত। তাছাড়া ফৌজদারি আইন অনুযায়ী কোন অসুস্থ ব্যক্তিকে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যাবে না। উল্লেখ্য, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চার জনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মানহানির দুই মামলার অভিযোগ গঠন ২৪ অক্টোবর \ ভুয়া জন্মদিন পালন ও মুক্তিযুদ্ধকে ‘কলঙ্কিত’ করার অভিযোগে মানহানির দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন শুনানির জন্য আগামী ২৪ অক্টোবর দিন ধার্য করেছে আদালত। বৃহস্পতিবার দুই মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। আসামিপক্ষের সময়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অবস্থিত ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নুর এ দিন ধার্য করেন। এর আগে ৩১ জুলাই এই দুই মামলায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েস খালেদার জামিন মঞ্জুর করেন। মুক্তিযুদ্ধকে ‘কলঙ্কিত’ করার অভিযোগে করা মামলায় বলা হয়, ‘২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের সঙ্গে জোট করে নির্বাচিত হয়ে সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন বিএনপি চেয়ারপার্সন। তিনি (খালেদা জিয়া) রাজাকার-আলবদর নেতাকর্মীদের মন্ত্রী-এমপি বানিয়ে তাদের বাড়ি ও গাড়িতে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র ও জাতীয় পতাকা তুলে দেন। ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম ভুয়া জন্মদিনের মামলা দায়ের করেন। পরে ওই বছর ২৭ নবেম্বর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। মামলায় বলা হয়, বিভিন্ন মাধ্যমে খালেদা জিয়ার পাঁচটি জন্মদিন পাওয়া গেলেও কোথাও ১৫ আগস্ট জন্মদিন পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় তিনি পাঁচটি জন্মদিনের একটিও পালন না করে ’৯৬ সাল থেকে ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকীর জাতীয় শোক দিবসে আনন্দ উৎসব করে জন্মদিন পালন করে আসছেন। শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সুনাম ক্ষুণœ করার জন্য তিনি ওদিন জন্মদিন পালন করেন। অন্যদিকে যুদ্ধাপরাধীদের মদদের মামলাটি ’১৬ সালের ৩ নবেম্বর জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী দায়ের করেন। ’১৭ সালের ২৫ ফেব্রæয়ারি তেজগাঁও থানার ওসি (তদন্ত ) এবিএম মশিউর রহমান খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। সে বছর ১২ অক্টোবর সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
×