ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সমস্যার সমাধান খুঁজুন॥ মুসলিম বিশ্বকে প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৭:৪১, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সমস্যার সমাধান খুঁজুন॥ মুসলিম বিশ্বকে প্রধানমন্ত্রী

বিডিনিউজ ॥ মুসলিম বিশ্বের বিদ্যমান সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের মুসলমানদের মধ্যে বিদ্যমান সমস্যা দ্বিপাক্ষিক কিংবা আঞ্চলিক সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করা উচিত। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সদর দফতরে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন নিয়ে ওআইসি কনটাক্ট গ্রæপের বৈঠকে একথা বলেন তিনি। এই অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি থেকে মুসলমানদের উত্তরণে মুসলিম বিশ্বের জোট ওআইসিকে আরও কার্যকর ভ‚মিকার রাখার আহবান জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সারাবিশ্বে কেন মুসলমানরা দমন-পীড়ন, নির্যাতন ও নির্বাসনের শিকার হচ্ছে তা ওআইসিভুক্ত দেশগুলোকেই খুঁজে বের করতে হবে। কেন মুসলমানরা একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে? বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন। রোহিঙ্গাদের তাদের আবাসভ‚মিতে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করতে মুসলিম বিশ্বকে কার্যকর ভ‚মিকা রাখার আহŸান জানান তিনি। যত দ্রæত সম্ভব এই সমস্যা সমাধানে জোরও দেন তিনি। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিপীড়ন চলে আসছে কয়েক দশক ধরে। বিভিন্ন সময়ে সহিংসতার মুখে সেখান থেকে পালিয়ে এসে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। তাদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বার বার আহবান জানানো হলেও মিয়ানমার তাতে সাড়া দেয়নি। ’১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর নির্যাতনের মুখে আরও ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা গণহত্যার শিকার হয়ে তাদের শতাব্দী পুরনো আবাসভ‚মি ছেড়ে সীমান্ত অতিক্রম করতে শুরু করে। একে মানব ইতিহাসের বৃহত্তম বাস্তুচ্যুতির ঘটনাগুলোর একটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা জোরপূর্বক নির্বাসিত রোহিঙ্গাদের দুর্দশা উপেক্ষা করতে পারি না। শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে বলেন, এই রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধে যৌথ দায়িত্ব ও জবাবদিহিতা এবং মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান মিয়ানমারে নিহিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুতরাং মিয়ানমারকেই এর সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। রোহিঙ্গা সঙ্কটের কারণে ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশের নাগরিকদেরও দুর্ভোগ পোহানোর কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী। মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে দিয়েছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের এই মানবিক আচরণের সুযোগ নেয়া ঠিক হবে না। বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘ উপস্থিতি আমাদের অর্থনীতি, পরিবেশ ও নিরাপত্তার গুরুতর চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। দায়িত্বশীল প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ শুরু থেকেই এ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজে আসছে বলে জানান তিনি। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের কথা উল্লেখ করে তা কার্যকরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি। আন্তর্জাতিক চাপই কেবল এই জাতি ধ্বংসের মিয়ানমারের সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক অবস্থান থেকে সরাতে পারে। বৈঠকে ওআইসির মহাসচিব ইউসেফ আল ওসমীন উপস্থিত ছিলেন।
×