ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সম্পাদকম-লীর সভা শেষে কাদের

পাল্টা কর্মসূচী নেই, তবে দেশজুড়ে নেতাকর্মীরা সতর্ক থাকবে

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

পাল্টা কর্মসূচী নেই, তবে দেশজুড়ে নেতাকর্মীরা সতর্ক থাকবে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজপথে না থাকলেও দেশজুড়ে দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমাদের কোন উদ্বেগ নেই, তবে সতর্কতা আছে। আমরা সতর্ক আছি। বিএনপি সমাবেশ ডেকেছে, এখন আমাদের পাল্টা কর্মসূচী নেই। তবে সারাদেশে আমাদের নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থায় থাকবে এটাই আমাদের নির্দেশ। দেশের শহর, থানা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থানে থাকবেন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সম্পাদকম-লীর সঙ্গে সহযোগী ও ভাতৃপ্রতীম সংগঠনের জরুরী সভা শেষে ব্রিফিংকালে তিনি এমন নির্দেশনা দেন। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আন্দোলনের নামে সভা-সমাবেশে যদি নৈরাজ্য, নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়, তাহলে আমরা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করব। আর সহিংসতা ও নাশকতার ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যথাযথ জবাব দেবে। আমরা সবদিক থেকে প্রস্তুত আছি। অশান্তিপূর্ণ সমাবেশ হলে আমরা রাজনৈতিকভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মোকাবেলা করব। আর সহিংসতা ও নাশকতার দিকে যদি বিএনপি তার দোসরদের নিয়ে পা বাড়ায় তাহলে তার দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবে জনগণ। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির সভাটা কবে হবে, এটাত এখনও ঠিক হয়নি। বিএনপি জোর করে ২৯ তারিখে করবে? কেন এই জেদাজেদি? অনুমোদন ছাড়া আপনি সভা করবেন, এত লাফালাফি কেন? ১০ বছরের ১০ মিনিটও রাস্তায় নামতে পারেন নাই। এখন আপনি হঠাৎ করে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে খুশি করে ব্যর্থতা ঢাকার জন্য লাফালাফি করছেন। এত লাফালাফির পরিণাম শুভ হবে না। হুমকি ধমকি দিয়ে আন্দোলন করবেন, আমরা ঘরে বসে ডুগডুগি বাজাব তা হবে না? তিনি বলেন, আমরা সরকারী দল, আমাদের ভরা কলসি, ভরা কলসি নড়ে না। যাদের শূন্য কলসি, তারাই ফাঁকা আওয়াজ করে। আমাদের উত্তেজিত হওয়ার প্রয়োজন নাই। আমরা কারও উস্কানির ফাঁদে পা দেব না। দেশের মানুষ খুশি নির্বাচন হবে। পরিবেশটা শান্তিপূর্ণ থাকবে এটাই আমরা চাই। আমরা নির্বাচনের জন্য সুশৃঙ্খলভাবে সংগঠিত হচ্ছি। দেশের অর্ধেক অংশে আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এ সময়ে কেন আমরা সংঘাত করব, আমরাত ক্ষমতায় আছি। আমরা পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী করব না। তিনি বলেন, বিএনপি সমাবেশ ডেকেছে, এখন আমাদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী নেই। আমাদের নেত্রী পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন, আমাদের কর্মসূচী আমরা দেব কিন্তু কারও কোন পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী আমরা দেব না। তারা সভা করবে আমরা পাল্টা করব দেশের মানুষকে আতঙ্কে রেখে এ ধরনের রাজনীতি আমাদের প্রয়োজন নাই। নির্বাচন পর্যন্ত পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে হবে। এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন বলেন, আমরা সতর্ক আছি। সারাদেশে আমাদের নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থায় থাকবে এটাই আমাদের নির্দেশ। বিএনপি সমাবেশ করবে আমরা পাল্টাপাল্টি কিছু করব না। আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এবং তাদের দোসররা নাশকতা ও সহিংসতার ছক আঁটছে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশের রাজনীতি অঙ্গনে অশুভ শক্তির পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছি। আন্দোলনে ব্যর্থ বিএনপিসহ তাদের সাম্প্রদায়িক দোসররা সহিংসতার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে। এটাই আমাদের কাছে মেসেজ, ইনফরমেশন। তারা যেভাবে হাঁকডাক হুমকি-ধমকি শুরু করেছে, তাতে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির পাঁয়তারা হচ্ছে বলে আমরা মনে করছি। ১৪ দলীয় জোটের ২৯ তারিখের নাগরিক সভায় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৪ দল পেশাজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে, নিজেরা বসেছে। এখন তারা মহানগর নাট্যমঞ্চে আরও একটু বড় পরিসরে নেতাকর্মীদের নিয়ে সমাবেশ করবে, এটা বিএনপির সঙ্গে কোন পাল্টাপাল্টি নয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণ ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই। আগামী নির্বাচনে তারা আবারও নৌকায় ভোট দেবে। আর জাতীয় ঐক্যের কথা বলছে। দেশের ৬৬ শতাংশ মানুষ যে দল ও নেত্রীকে সমর্থন করে, এই সিংহভাগকে বাদ দিয়ে কীভাবে জাতীয় ঐক্য হয়? এটা তো জাতীয়তাবাদী সাম্প্রদায়িক ঐক্য। জনতা নয়, নেতায়-নেতায় ঐক্য। এই পাঁচমিশালী জগাখিচুড়ি ঐক্যের কোন ভবিষ্যত আছে বলে আমরা মনে করি না। দেশের মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের রাজনীতি ও দূরদর্শী নেতৃত্বেও প্রতি আস্থাশীল এবং বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। অক্টোবর থেকে দেশব্যাপী গণসংযোগে নামবে আ’লীগ ॥ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী কর্মকা-ের কথা জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, অক্টোবরের পহেলা তারিখ থেকে সপ্তাহব্যাপী রাজধানীসহ দেশব্যাপী গণসংযোগ করব। আমরা ভোটারদের কাছে যাব, বাড়িতে বাড়িতে যাব গণসংযোগ করব। আমরা রাস্তায় অবরোধ করে মানুষের জন্য দুর্ভোগ হবে এমন কোন সভা-সমাবেশ করব না। আর রাস্তা অবরোধ/বন্ধ করে কাউকে সভা-সমাবেশ করতে দেয়া হবে না। আমরা নিজেরাই নিয়ম মেনে চলছি। অন্য কেউ নিয়মভঙ্গ করে রাস্তায়, প্রেসক্লাবের সামনে, পল্টনের রাস্তায় সভা-সমাবেশ করবে সেটা এ্যালাউ করা হবে না, জনগণের দুর্ভোগ কিছুতেই হতে দেব না। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আখতার, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মোঃ আবু কাওছার।
×