ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শেখ হাসিনাকে আরও পাঁচ বছর ক্ষমতায় রাখতে সবাইকে কাজ করতে হবে

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

শেখ হাসিনাকে আরও পাঁচ বছর ক্ষমতায় রাখতে সবাইকে কাজ করতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের ভরসার প্রতীক শেখ হাসিনা। দারিদ্র্য বিমোচন, মানবকল্যাণ ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশ্বের রোল মডেলে পরিণত হয়েছেন তিনি। জঙ্গীবাদ দমনে রেখে চলেছেন অনন্য ভূমিকা। তার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলেছে উন্নয়নের কাক্সিক্ষত সোপানে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়নে নিরবচ্ছিন্ন কাজ করে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। তার নেয়া দশটি মেগা প্রকল্পের পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন হলে বদলে যাবে দেশের চেহারা। এ কারণেই আগামী পাঁচ বছরের জন্য শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় রাখতে সবাইকে কাজ করতে হবে ঐক্যবদ্ধভাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে তাঁকে নিয়ে রচিত দুটি গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে এসব কথা বলেন বিশিষ্টজনরা। বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে দুটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ‘সতীর্থ-স্বজন’। বই দুটি হচ্ছে দেশের বিশিষ্টজনদের লেখা সম্মাননা গ্রন্থ ‘তিমির হননের নেত্রী’ এবং মিসরীয় লেখক মুহসিন আল আরিশির আরবি ভাষায় লেখা ‘হাসিনা হাকাইক ও আসাতির’ বইয়ের অনুবাদগ্রন্থ ‘শেখ হাসিনা : উপাখ্যান ও বাস্তবতা’। বইটি অনুবাদ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ড. মোহাম্মদ আবদুর রশীদ। বই দুটির প্রকাশক সুবর্ণ প্রকাশনী। জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. আতিউর রহমান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, লোক গবেষক ড. শামসুজ্জামান খান, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, ওয়ার ক্রাইম ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির আহ্বায়ক ড. এম এ হাসান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডাঃ কনক কান্তি বড়ুয়া, সাবেক রাষ্ট্রদূত একেএম আতিকুর রহমান, জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি শফিকুর রহমান, মিসরীয় সাংবাদিক ও লেখক মুহসিন আল আরিশি ও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। এছাড়াও শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেন মামুন আল মাহতাব, রাশেদ রহমান, সাইদুর রহমান প্যাটেল প্রমুখ। আয়োজক সংগঠনের পক্ষে স্বাগত বক্তব্য দেন মেজর জেনারেল (অব.) একে মোহাম্মদ আলী শিকদার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিক্ষক জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, ১৯৬৭ সালে ছাত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর তাঁকে দেখলাম রাজনীতিবিদ হিসেবে। বর্তমানে সফলভাবে পালন করছেন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব। শেখ হাসিনা উপযুক্ত পিতার উপযুক্ত কন্যা। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সে। আসুন আমরা সবাই তার হাতকে শক্তিশালী করতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি। আতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশের ভরসার প্রতীক শেখ হাসিনা। উন্নত বাংলাদেশের যে স্বপ্ন দেখি সেই স্বপ্নের প্রতীক তিনি। বদলে যাওয়া বাংলাদেশের প্রতীকও তিনি। তার সময় মাথাপিছু আয়, প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। বেড়েছে বিদ্যুত উৎপাদন, রফতানি আয়, রেমিটেন্স, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। তার সময়ে দশটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বদলে যাবে বাংলাদেশ। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে অপেক্ষা করতে হবে আরও পাঁচটি বছর। সেজন্যই আগামী পাঁচ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকতে হবে শেখ হাসিনাকে। কারণ তার নেতৃত্বে এশিয়ার সাফল্যময় গল্পের দেশে পরিণত হতে চলেছে বাংলাদেশ। রামেন্দু মজুমদার বলেন, দিন যত গড়াচ্ছে, শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও নেতৃত্বগুণ ততই উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর পরে এই বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালনায় শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। বর্তমানে উন্নয়নমূলক অবস্থান ধরে রাখতে হলে সবাইকে পাশে থাকতে হবে। বিশ্ব নেতৃত্বের প্রথম কাতারেই উচ্চারিত হচ্ছে তার নাম। এ সময় তিনি সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার অবদান ও অনুরাগ তুলে ধরেন। কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, বর্তমান বাংলাদেশে শেখ হাসিনা অদ্বিতীয় নেতা। তিনি শুভ শক্তির প্রতীক। তার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। তাই শেখ হাসিনা থাকলে বাঁচবে বাংলাদেশ। পথ হারাবে না এই দেশ। দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এ সময় তিনি স্বাস্থ্য খাতে শেখ হাসিনার অবদান তুলে ধরে বলেন, তাঁর সময়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন হয়েছে। দেশের প্রান্তিক মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে গেছে। শামসুজ্জামান খান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশ রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। তিনি শান্তির নেত্রী, দূরদৃষ্টির নেত্রী, মানবিকতার নেত্রী। তার দক্ষতা এতই ভাল যে, আমাদের শত্রুপক্ষ পাকিস্তানের বিশিষ্টজনরা তাদের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে বলছেন আমাদের দেশটা যেন বাংলাদেশের মতো হয়। মিসরীয় লেখক মুহসিন আল আরিশি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বই লেখা প্রসঙ্গে বলেন, ১৯৭৫ সালে তাঁর পরিবারকে হত্যার পর শেখ হাসিনাকে নিয়ে বই লিখতে অনুপ্রাণিত হই। আমি অনুধাবন করতে পারি সবাইকে হারানোর পর তিনি কিভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কিন্তু বইটি লেখার পর পক্ষে বিপক্ষে অনেক মতামত পেয়েছি। আরব নেতারা সমালোচনাও করেছে। এতে একদিকে আনন্দিত হয়েছি অন্যদিকে মর্মাহতও হয়েছি। তবে আমার ভাল লেগেছে যে, একটা ট্র্যাজেডি থেকে উঠে এসে সফলভাবে একটা দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এমন ব্যক্তিকে নিয়ে বই লিখতে পেরেছি। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার জন্য লড়াই করলেও ইতিহাস ঘাঁটতে গিয়ে দেখি আরব গণমাধ্যম বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসাবে তাঁকে আখ্যায়িত করেছে, এতে খুবই মর্মাহত হয়েছি। বর্তমানে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দক্ষ নেতৃত্বের কারণে অনুসরণ করছে। অনুষ্ঠানের শুরুতে শেখ হাসিনার বর্ণাঢ্য কর্মজীবন নিয়ে নির্মিত ‘তিনি’ নামে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অভিনয়শিল্পী পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানের সূচনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের দুটি কবিতা আবৃত্তি করেন রুপা চক্রবর্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবাদিক আলী হাবিব সম্পাদিত ‘তিমির হননের নেত্রী’ বইটিতে শেখ হাসিনাকে নিয়ে দেশের বিশিষ্টজন, লেখক, সাংবাদিক ও গবেষকদের অর্ধশতাধিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। বইটিতে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন, কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, কবি নির্মলেন্দু গুণ, সৈয়দ শামসুল হক, শামসুর রহমান, শিল্পী হাশেম খান, বেবী মওদুদ, প্রখ্যাত সাংবাদিক তোয়াব খান, আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী, গোলাম সারওয়ার, আবেদ খান, স্বদেশ রায়, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরসহ বিশিষ্টজনদের লেখায় উঠে এসেছে শেখ হাসিনার জীবনের নানা অংশ। ৫২৪ পৃষ্ঠার বইটির মূল্য ১২০০ টাকা। আর ‘শেখ হাসিনা : উপাখ্যান ও বাস্তবতা’ বইটির দাম ৮০০ টাকা, পৃষ্ঠা ২২০।
×