ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

১ রানের আফসোস, সেঞ্চুরি বঞ্চিত মুশফিক

প্রকাশিত: ০৭:০৬, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

১ রানের আফসোস, সেঞ্চুরি বঞ্চিত মুশফিক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বুধবার এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ‘অঘোষিত’ সেমিফাইনাল হয়ে ওঠা সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে ৪৮.৫ ওভারে ২৩৯ রানে অলআউট হয়ে গেছে বাংলাদেশ। মাত্র ১ রানের জন্য সেঞ্চুরিবঞ্চিত মুশফিক আউট হয়েছেন ৯৯ রান করে! আবুধাবীতে টস হেসেছিল টাইগারদের হয়ে, কিন্তু হাসেনি ওপেনারদের ব্যাট। ষষ্ঠ ওভারেই ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। নামতে না নামতেই সাজঘরে ফেরেন দুই ওপেনার সৌম্য সরকার (০), লিটন কুমার দাস (৬) আর মুমিনুল হক (৫)। কঠিন এই অবস্থাতেই তরুণ মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে হাল ধরেন বহু যুদ্ধের পোড় খাওয়া সৈনিক মুশফিকুর রহীম। পাকিদের সকল পরিকল্পনা এলোমেলো করে দিয়ে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১৪৪ রানের মহামূল্যবান জুটি গড়েন দু-জনে। ৮৪ বলে ৪ চারের সাহায্যে ৬০ রান করে হাসান আলির শিকারে পরিণত হন মিঠুন। ব্যক্তিগত ৯ রান করে ইমরুল কায়েস ফিরলে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে নিজস্ব ঢংয়ে খেলছিলেন মুশফিক। দুর্ভাগ্য, মাত্র ১ রানের জন্য ক্যারিয়ারের সপ্তম ওয়ানডে সেঞ্চুরিটি পাননি ফর্মের তুঙ্গে থাকা এ টাইগার ব্যাটসম্যান। ১১৬ বলে ৯ চারের সাহায্যে ৯৯ রান করে পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে উইকেটের পেছনে সরফরাজ আহমেদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মুশি। মেহেদী হাসান মিরাজ ১২ রান করে আউট হন। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ২৫ ও অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা আউট হন ১৩ রান করে। পাকিস্তানের হয়ে জুনায়েদ খান ৪, শাহিন শাহ ও হাসান আলি নেন দুটি করে উইকেট। ষষ্ঠ ওভারে ১২ রানের মধ্যে টপঅর্ডারের ৩ ব্যাটসম্যানকে হারানোর পর বাংলাদেশে ইনিংসের কৃতিত্ব মুশফিকের। আর দলকে উদ্ধারের এই অভিযানে এদিনও তিনি সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন সেই মিঠুনকে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে ঠিক একই রকম ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দাঁড়িয়ে যাকে নিয়ে গড়েছিলেন ১৩২ রানের অসাধারণ এক জুটি। যে জুটির কল্যাণে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ পেয়েছিল ২৬১ রানের নিরাপদ পুঁজি। এবং শেষ পর্যন্ত ১৩৭ রানের বিশাল জয়। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটিতে ১ রানের মধ্যেই ২ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ। এরপর দলীয় ২ রানের মাথায় আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন তামিম ইকবাল। কার্যত তখন বাংলাদেশ ৩ উইকেটে ২ রানের দল। কঠিন সেই পরিস্থিতি থেকে দলকে টেনে তুলেছিলেন মুশফিক-মিঠুন। মিঠুন সেদিন ৬৩ রান করে আউট হলেও মুশফিক করেছিলেন ক্যারিয়ারসেরা ১৪৪ রান। এ দিন ম্যাচ শুরুর আগেই বড় এক ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। বলা যায় হঠাৎই মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে! ম্যাচ শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে জানা যায়, চোটের কারণে মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে খেলতে পারেননি সাকিব আল হাসান। প্রত্যাশার বেলুন ফুলিয়ে আরব আমিরাতে যাওয়া সৌম্য ৫ বলে ব্যক্তিগত শূন্য রানে আউট। সাকিবের চোটের কারণে সুযোগ পাওয়া মুমিনুল হক ফেরেন ৫ রান করে। লিটন দাসই বা ব্যর্থতার ষোলোকলা পূরণ করতে বাকি থাকবেন কেন! পরের ওভারে তাই তিনিও আউট। আগের ৪ ম্যাচে ০, ৬, ৭ ও ৪১ রান করা লিটন এদিন ৬ রানে আউট। শুরুতেই বাংলাদেশকে এই ধ্বংসস্তূপ বানানোর নায়ক জুনাইদ খান। যিনি ম্যাচটা খেলতে নেমেছেন খারাপ সময়ের ভেতর দিয়ে যাওয়া মোহাম্মদ আমিরের পরিবর্তে। সৌম্য ও লিটন, বাংলাদেশের দুই ওপেনারকেই ফিরিয়েছেন তিনি। মুমিনুল হককে প্যাভিলিয়নে পাঠান শাহীন শাহ আফ্রিদি। শ্রীলঙ্কার ওই ম্যাচের পরের ৩ ম্যাচেই ব্যাট হাতে ব্যর্থ মিঠুন। পরের ৩ ম্যাচে করেন ২, ৯ ও ১ রান! মুশফিকও ওই ম্যাচের পর তেমন সফল ছিলেন না। আফগানিস্তানের বিপক্ষে পরের ম্যাচটা পাঁজরের চোটের কারণে খেলেননি। তবে সুপার ফোরে ভারত ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দুটিতে করেছেন ২১ ও ৩৩ রান। পাকিস্তানের বিপক্ষে অঘোষিত সেমিফাইনাল হয়ে ওঠা এই ম্যাচে মাত্র ১ রানের জন্য সেঞ্চুরি পাননি, তবে দলের ত্রাতা তিনিই।
×