ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হোতাসহ ৮ জন গ্রেফতার

সেনাবাহিনীতে চাকরি দেয়ার নামে বেকার ছাত্রদের সঙ্গে প্রতারণা

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সেনাবাহিনীতে চাকরি দেয়ার নামে বেকার ছাত্রদের সঙ্গে প্রতারণা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ওরা সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সেই বাহিনীতে চাকরি দেয়ার নামে বেকার ছাত্রদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিত। এ রকমই একটি প্রতারক চক্রের হোতাসহ ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে মূলহোতা সৈকত এ নীলয় (২৬), মোঃ জামাল (২৬), সাজ্জাদ হক সৌরভ (২৪), নাজমুল আলম ভূঁইয়া (২৯), মাসুদ মুন্সি (৩৫), শামীম আহম্মেদ (২৮), মাসুদ রানা (২৩) ও শাকিল আহম্মেদকে (২৭)। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুই সেট সেনাবাহিনীর পোশাক, ১১টি মোবাইল, ১৫টি সিমকার্ড, সাড়ে ১১ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আনোয়ার উজজামান বলেন, সেনাবাহিনী উর্ধতন কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে একাধিক প্রতারণার অভিযোগ ও তথ্য সংগ্রহের পর র‌্যাব-২ এর একটি দল তদন্তে নামে। তদন্তে উঠে আসা তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার রাতে শেরেবাংলা নগরে বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের সামনে অবস্থান নেন র‌্যাব সদস্যরা। সেখান থেকে প্রথমে ভুয়া মেজর সৈকত এ নীলয়কে আটক করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার সাত সহযোগীকে আটক করা হয়। র‌্যাব-২ অধিনায়ক জানান, আটককৃতরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র। তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেয়ার নাম করে প্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিত। সৈকত এ নীলয় এই চক্রের প্রধান হোতা, সে এই চক্রটি নিয়ন্ত্রণ করত। সে নিজেকে সেনাবাহিনীর কর্মরত একজন মেজর হিসেবে পরিচয় দিত। বিভিন্ন মানুষের কাছে সেনাবাহিনীর পোশাক পরা অবস্থায় নিজের ছবি দেখাত। তার অভিনয়ের মাধ্যমে মানুষ বিশ্বাস করত যে সে সেনাবাহিনীতে একজন কর্মরত মেজর। নীলয় প্রাথমিকভাবে প্রার্থীদের সেনাবাহিনীতে চাকরি দিতে পারবে বলে জানাত। রাজি হলে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করত। টাকা পরিশোধ হলে পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর ভুয়া নিয়োগপত্রে নিজের স্বাক্ষর বসিয়ে কুরিয়ারের মাধ্যমে চাকরিপ্রত্যাশী ব্যক্তির কাছে নিয়োগপত্র পাঠিয়ে দিত। র‌্যাব-২ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এএসপি মোহাম্মদ সাইফুল মালিক বলেন, গ্রেফতারকৃত সাজ্জাদ হক সৌরভ নিজেকে ডিজিএফআইর অফিসারের পরিচয় দিত। তিনি চাকরিপ্রত্যাশী ব্যক্তিদের কাছ থেকে ভাল ভেরিফিকেশনের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিত। জামাল পেশায় ড্রাইভার। গাড়ি চালানোর পাশাপাশি এই চক্রের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়ে সে। তার কাজ ছিল সাধারণ মানুষের ফাঁদে ফেলে, সেনাবাহিনীর বড় কর্মকর্তা তার আত্মীয় ও আকর্ষণীয় বেতনের কথা বলে লোভে ফেলা। কখনও কখনও গাড়ি চালানোর পাশাপাশি খোসগল্পের মাধ্যমে ফাঁদে ফেলত। তার মূল কাজ ছিল সাধারণ ছাত্র, বেকার যুবক, দরিদ্র ছাত্রদের ভুয়া মেজরের (সৈকত এ নীলয়) সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়া। নাজমুল আলম ভূঁইয়া নিজেকে মেজরের পিএস হিসেবে পরিচয় দিত। সে চাকরিতে নিয়োগপ্রত্যাশী ব্যক্তিদের কাছ থেকে টাকা বিকাশে, কুরিয়ারের মাধ্যমে লেনদেন করত। বেশি অঙ্কের টাকা হলে অপর আটক মাসুদ, শামীম, মাসুদ রানা ও শাকিলকে সঙ্গে নিয়ে যেত। তাদের গার্ড হিসেবে ব্যবহার করা হতো। তারা সবাই সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্রের সক্রিয় সদস্য। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে থানা মামলা হয়েছে।
×