ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রধানমন্ত্রীর ফিরতি ফ্লাইটে বিমানের সব স্টাফের ডোপ টেস্ট করা হবে

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

প্রধানমন্ত্রীর ফিরতি ফ্লাইটে বিমানের সব স্টাফের ডোপ টেস্ট করা হবে

আজাদ সুলায়মান ॥ প্রধানমন্ত্রীর ফ্লাইটের দায়িত্বে নিয়োজিত বিমানের সকল শ্রেণীর কর্মকর্তা কর্মচারীর ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এখন থেকে শুধু ঢাকা থেকে রওনা হওয়ার পাশাপাশি ফিরতি ফ্লাইটের স্টাফদেরও একই পদ্ধতিতে ডোপ টেস্ট করা সিদ্বান্ত নেয়া হয়েছে। গত শুক্রবার লন্ডন যাওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রীর ফ্লাইট থেকে মদ্যপ অবস্থায় কেবিন ক্রু মাসুদা মুফতিকে অফলোড করার ঘটনায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এদিকে তোলপাড় করা এ ঘটনার তদন্তে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে মাসুদা মুফতিকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমান। কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য মঙ্গলবার দিনভর বিমানের এডমিন বিল্ডিংয়ে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যাপক খোঁজ খবর নিয়েছে। শুক্রবার কেন কোন পরিস্থিতিতে মাসুদা মুফতি মদ্যপ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর ফ্লাইটে ডিউটি করার সাহস দেখাল গোয়েন্দাদের এই প্রশ্নের জবাবে যৌক্তিক ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। মূলত এ ঘটনার আলোকেই গোয়েন্দাদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ফিরতি ফ্লাইটেও বিমানের যেসব স্টাফ ডিডটি করবেন তাদের সবার ডোপ টেস্ট করার পরামর্শ দেয়া হয়। এ জন্য সুনির্দিষ্ট গাইড লাইনও করে দেয়া হয়। বিমানের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে নিরাপত্তা কর্মীদের সহযোগিতায় ঢাকা থেকে লন্ডন গিয়ে ফিরতি ফ্লাইটের ডিউটিরতদের ডোপ টেস্টের প্রস্তাব দেয়া হলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন এম মোসাদ্দিক আহমেদ তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন। কিন্তু তাতে দ্বিমত প্রকাশ করেন বিতর্কিত ডিএফও ক্যাপ্টেন ফরহাত জামিল প্রস্তাব রাখেন- প্রধানমন্ত্রীর ফ্লাইটের স্টাফদের ডোপ টেস্ট করার জন্য ঢাকা থেকে কোন টিম যেতে হবে না। লন্ডনের কোন মেডিক্যাল টিম দ্বারা করালেই চলবে বলে তিনি মতামত দেন। এতে গোয়েন্দারা অবাক হয়ে যান। উল্লেখ্য এর আগে ঢাকা থেকে বুদাপেস্ট যাবার পথে যান্ত্রিক ত্রুটির কবলে পড়া ফ্লাইটেও এই ক্যাপ্টেন ফারহাত জামিলের ভূমিকা নিয়ে তখন গোয়েন্দারা প্রশ্ন তুলেছিল। এদিকে কেবিন ক্রু মাসুদা মুফতি কোথায় কি ধরনের মাদক গ্রহণ করেছেন তারও অনুসন্ধান চলছে। এ সম্পর্কে বিমান প্রশাসন শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, সাধারণত ডোপ টেস্টে ২৪ ঘণ্টা আগে মাদক সেবনের বিষয়টি শনাক্ত করা যায়। সে হিসেবে শুক্রবার সকালে বিমানের ব্রিফিং রুমে র‌্যান্ডম ডোপ টেস্ট করার সময় ১৮ জন কেবিন ক্রুর মধ্যে সবারটা নেগেটিভ হলেও শুধু মাসুদা মুফতির শরীরেই পজেটিভ সাইন ধরা পড়ে। অর্থাৎ তিনি মাদক সেবন করেছেন চব্বিশ ঘণ্টা আগে। তারপর সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তাকে অফলোড করার। বিষয়টি তার বিভাগীয় প্রধান রনজুকে জানানো হলে তিনি বিষয়টি তাৎক্ষণিক এয়ারপোর্ট জিএম নুরুল ইসলাম হাওলাদারকে অবহিত করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর ফ্লাইটে ডিউটিতে চলে যান। কিন্তু তার একদিন পরই আবারও মুফতিকে সিঙ্গাপুর ফ্লাইটে ডিউটি দেয়া হয়। গোয়েন্দারা এ সংবাদ পেয়ে বিস্মিত হন। এ সম্পর্কে তারই এক সহকর্মী জনকণ্ঠকে জানান, বৃহস্পতিবার রাতে বারিধারায় তারই এক বন্ধুর বাসায় প্রথমে ইয়াবা পরে মাসুদা মুফতি স্মিরনফ ভদকা পান করেন। ওই পার্টিতে আরও ক’জন কেবিন ক্রু একইভাবে মদপান করেন। এর মধ্যে শুধু তারই ডিউটি ছিল প্রধানমন্ত্রীর ফ্লাইটে।
×