ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

লঙ্কান ক্রিকেটে তোলপাড়

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

লঙ্কান ক্রিকেটে তোলপাড়

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ এশিয়া কাপে দুই হারে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছেন টুর্নামেন্টের অন্যতম সফল দল শ্রীলঙ্কা। প্রতিক্রিয়া যে হবে সেটা অনুমিই ছিল। কিন্তু এতটা? যে এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসকে অনেকটা অনুরোধ করে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। সেই তাকে সরে যেতে বাধ্য করা হলো! এখানেই শেষ নয়। নেতৃত্ব হারানোর পর তাকে বলিরপাঁঠা বানানো হয়েছে মর্মে বোর্ড (এসএলসি) প্রেসিডেন্টের বরাবার চিঠি লিখেছেন সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় এ অলরাউন্ডার। সব মিলিয়ে এশিয়া কাপে ভরাডুবিকে কেন্দ্র করে বেসমাল শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট। ভক্ত-সাধারণ সর্বত্র থেকে ভেসে আসছে সমালোচনার তীর। কিছুদিন আগে ঘরের মাটিতে জিম্বাবুইয়ের কাছে সিরিজ হারের দায় মাথায় নিয়ে ম্যাথুস যখন স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়িয়েছিলেন তখনও এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। শ্রীলঙ্কার ওয়ানডে ও টি২০র অধিনায়ক করা হয়েছে আগে থেকেই টেস্টের দায়িত্বে থাকা চান্দিমালকে। অর্থাৎ তিন ভার্সনেই এখন দায়িত্বটা তার কাঁধে। তবে ম্যাথুসকে একেবারে দল থেকে বাদ হয়েছে কি না, খবরে সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। দায়িত্ব ফিরে পাওয়ার ১০ মাস পর আবারও ম্যাথুসকে নেতৃত্বের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিল শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড (এসএলসি)। এশিয়া কাপের গ্রুপপর্বে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের কাছে অত্যন্ত বাজেভাবে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ে এই আসরের চারবারের চ্যাম্পিয়নরা। অভিজ্ঞ দুই তারকা কুমার সাঙ্গাকারা ও মাহেলা জয়াবর্ধনের অবসরের পর শ্রীলঙ্কা দলে অস্থিরতা চলছে। বিশেষ করে ওয়ানডে ফরম্যাটে গত ১৮ মাসে শ্রীলঙ্কা দলের অধিনায়ক হিসেবে উপুল থারাঙ্গা, লাসিথ মালিঙ্গা, চামারা কাপুগেদারা ও থিসারা পেরেরাকে দায়িত্বে দেখা গেছে। সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা নিজেদের শেষ ৪০ ম্যাচের ৩০টিতেই হেরেছে। এসএলসি এক বার্তায় জানিয়েছে, ‘নির্বাচকরা আসন্ন ইংল্যান্ড সিরিজে ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে দিনেশ চান্দিমালকে নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সাম্প্রতিক পারফর্মেন্সের প্রভাবে তারা এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসকে ওয়ানডে ও টি২০র দায়িত্ব ছাড়তে অনুরোধ করেছেন।’ বিষয়টি ঠিক মেনে নিতে পারছেন না এই অলরাউন্ডার। বলছেন, এশিয়া কাপে দলের ব্যর্থতার জন্য তাকে ‘বলিরপাঁঠা’ বানানো হয়েছে। ২০১৩ থেকে ২০১৭ টানা চার বছরের বেশি সময় অধিনায়ক থাকার পর গত বছর নিজ থেকেই দায়িত্ব ছেড়েছিলেন ম্যাথুস। হাথুরু প্রধান কোচ হওয়ার পর চলতি বছরের শুরুতে তাকে আবার দায়িত্বে ফেরানো হয়। কিন্তু দশ মাস পরই এশিয়া কাপের ব্যর্থতায় নেতৃত্ব হারালেন ৩১ বছর বয়সী অলরাউন্ডার। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাজে পারফর্মেন্সে পর নিজেদের আট ম্যাচের ৬টিতে হার ও ২টিতে জিতেছে তারা। এর মধ্যে দুটি হার জিম্বাবুইয়ে ও আফগানিস্তানের কাছে। বোর্ডের এমন সিদ্ধান্ত মানতে পারছেন না ম্যাথুস। এসএলসির প্রধান নির্বাহী এ্যাশলে ডি সিলভার কাছে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘আমি খুবই অবাক হয়েছি এমন সিদ্ধান্তে। বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার বাজে পারফর্মেন্সের খেসারত হিসেবে আমাকে বলিরপাঁঠা বানানো হয়েছে।’ পুরো দলের ব্যর্থতার দায়ভার শুধু নিজের কাঁধে নিতে নারাজ ম্যাথুস, ‘আমি দায় নিতে প্রস্তুত, তবে শুধু আমার ওপর দায় চাপালে সেটি বিশ্বাসঘাতকতা এবং আমাকে সরানোর চেষ্টা বলেই মনে হয়। আপনি জানেন, নির্বাচকম লী এবং প্রধান কোচের সঙ্গে পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতেই সব ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তাই হারের পর শুধু অধিনায়ককে দায়ী করাটা উচিত নয়। তবে বোর্ড যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটা মাথা পেতে নিচ্ছি।’ ক্ষুব্ধ ম্যাথুস আরও বলেন, ‘নির্বাচকম লী এবং প্রধান কোচ যদি মনে করেন আমি ওয়ানডে ও টি২০ খেলার মতো ফিট নই এবং দলে জায়গা পাওয়ার মতো যোগ্য নই, তাহলে ওয়ানডে ও টি২০ থেকে অবসর নিয়ে নেব। কারণ আমি দলের জন্য বোঝা হয়ে থাকতে চাই না।’
×