ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সবচেয়ে বড় বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা

২শ’ বিলিয়ন ডলার চীনা পণ্যের ওপর মার্কিন শুল্ক

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

২শ’ বিলিয়ন ডলার চীনা পণ্যের ওপর মার্কিন শুল্ক

চীন থেকে আমদানি করা অর্ধেক পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক সোমবার থেকে কার্যকর হয়েছে। এর ফলে বিশ্বের দুই প্রধান অর্থনৈতিক শক্তির মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের ঝুঁকি আরও বেড়ে গেল। চীনের অন্যায্য বাণিজ্যিক কর্মকা-ের জবাবে এটি করা হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে। এর আগে জুলাইতে চীনা পণ্যের ওপর একদফা শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। বিবিসি। ২শ’ বিলিয়ন (২০ হাজার কোটি) ডলার মূল্যমানের চীনা পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক আরোপের কারণ হিসেবে চীনের অন্যায্য বাণিজ্য নীতিকে দায়ী করা হয়েছে। জুলাইতে ৩৪ বিলিয়ন ডলারের চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের জবাবে চীন ৬০ বিলিয়ন ডলার মূল্যমানের মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করে। চীনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বড় বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করেছে। ওয়াশিংটন সব মিলিয়ে ২৫০ বিলিয়ন ডলারের চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে। যেসব চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, কোন মার্কিন প্রতিষ্ঠান সেসব পণ্য আমদানি করতে চাইলে ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক দিতে হবে। ৬ হাজার চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব পণ্যের মধ্যে চামড়ার তৈরি হ্যান্ডব্যাগ, চাল ও বস্ত্র অন্যতম। তবে স্মার্ট হাতঘড়ি ও চেয়ার শুল্কের আওতায় আসবে না। দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা না হলে আগামী বছর এই শুল্কের হার ২৫ শতাংশে উন্নীত হবে। ছোট আকৃতির মার্কিন বিমান, কম্পিউটার ও টেক্সটাইল পণ্যের ওপর ৫ শতাংশ অতিরিক্ত হারে শুল্ক আরোপ করেছে চীন। রাসায়নিক দ্রব্য, মাংস, গম ও মদের ওপর ১০ শাতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। চীন যেসব পণ্যের ওপর শুল্ক বসিয়েছে তার ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন খামারিরা, যাদের একটি বড় অংশ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থক। এদিকে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি চীনে মার্কিন প্রযুক্তি ও মেধা সম্পদের অন্যায্য হস্তান্তর বন্ধ করতে এবং নিজ দেশে কর্মসংস্থান সংরক্ষণের উদ্দেশে শুল্ক আরোপ করছেন। অর্থনীতির নিয়ম অনুযায়ী, আমদানি শুল্ক আরোপ করার ফলে মার্কিন ক্রেতারা এবার আমদানিকৃত চীনা পণ্যের চেয়ে মার্কিন পণ্য কম মূল্যে কিনতে পারবে। ট্রাম্প প্রশাসন এভাবে বিষয়টি তুলে ধরছে যে এর ফলে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির প্রসার ঘটাবে। তবে ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত মার্কিনীরা বলছেন এটি ব্যবসার ওপর প্রতিকূল প্রভাব ফেলছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই ট্রাম্প সংরক্ষণবাদী নীতি অনুসরণ করেছেন। বিশেষ করে তিনি যেভাবে চীনা পণ্যের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন তাতে এমন ধারণা হওয়া স্বাভাবিক সব চীনা পণ্যই হয়তো এক সময় শুল্কের আওতায় আসবে। বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, চীন সেদেশে অবস্থিত মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কড়াকড়ি আরোপ, রফতানি বাড়িয়ে কমিয়ে বা মুদ্রামান কমিয়ে বাড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা চাপ প্রয়োগ করতে পারে।
×