ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। সোমবার বিকেল ৩টা থেকে এ নৌরুটে ফেরি সার্ভিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়ে। এতে ঘাটে আটকা পড়েছে কয়েক শতাধিক বিভিন্ন প্রকার যানবাহন। যানজটে আটকা পড়ে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ চ্যানেলের মুখ হতে পলি অপসারণ করে চ্যানেলে ফেরি চলাচলের উপযোগী না করলে ফেরি পুনরায় চালু করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বিআইডব্লিউটিসির এজিএম সৈয়দ শাহ বরকতউল্লাহ জানিয়েছেন, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌপথে লৌহজং চ্যানেলে নাব্য সঙ্কটের কারণে বেশ কিছু দিন ধরে ফেরি চলাচলে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছিল। ডুবোচরে দফায় দফায় আটকা পড়ছে বড় ও ছোট ফেরি। হাফ লোড নিয়ে ফেরিগুলো চলাচল করলেও খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে নদীপথ পাড়ি দিতে হচ্ছে। এতে ১ থেকে দেড় ঘণ্টা সময় বেশি লাগছিল। গত রোববার সকাল ১১টায় কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে ছোট-বড় ১৭টি যানবাহন ও ৩ শতাধিক যাত্রী নিয়ে ১টি কেটাইপ ফেরি শিমুলিয়া ঘাটের উদ্দেশে রওনা করে। ফেরিটি লৌহজং চ্যানেলের মাঝে গিয়ে ডুবোচরে আটকা পড়ে। ফেরিটি ২ ঘণ্টা আটকে থাকার পর দুপুর দেড়টায় জোয়ারের পানিতে উদ্ধার হয়ে শিমুলিয়া ঘাটে যায়। অপর দিকে শিমুলিয়া ঘাট থেকে ছোট-বড় ২৩টি যানবাহন ও ৪ শতাধিক যাত্রী নিয়ে বেলা ২টায় ১টি ডাম্ব ফেরি কাঁঠালবাড়ি ঘাটের উদ্দেশে রওনা করে। ফেরিটি লৌহজং চ্যানেলের কাছে এসে পৌঁছালে ডুবোচরে আটকা পড়ে। প্রায় ৩ ঘণ্টা আটকে থাকার পর ফেরিটি আইটির মাধ্যমে উদ্ধার করে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে নিয়ে আসা হয়। পদ্মায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ও উজানে ব্যাপকভাবে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করায় স্র্রোতে পলি এসে চ্যানেলের তলদেশে ভরাট হয়ে অসংখ্য ডুবোচরের সৃষ্টি হচ্ছে। চ্যানেলে নাব্য সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করায় প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য ৫টি ডাম্ব ফেরি বন্ধ রাখা হচ্ছে। রাতে কেটাইপ ও রো রো ফেরি চলাচলে মারাত্মক বিঘœ সৃষ্টি হওয়ায় শত শত পণ্যবাহী ট্রাক ঘাট এলাকায় পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। গতকাল নাব্য সঙ্কট বৃদ্ধি আরও বৃদ্ধি পায়। এতে ফেরিগুলো চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে চ্যানেলের মুখে ড্রেজার বসানোর ফলে সরুপথ দিয়ে ফেরি চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। চালকরা ফেরির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছে সরু এই চ্যানেলের মুখে। ফলে বাধ্য হয়ে কর্তৃপক্ষ গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। কবে নাগাদ ফেরি চালু হবে তা জানাতে পারেনি বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। এদিকে ফেরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উভয় ঘাটে আটকা পড়েছে কয়েক শতাধিক বিভিন্ন প্রকার যানবাহন। পণ্যবাহী ট্রাকগুলো বেশ কিছুদিন আগে থেকেই আটকা পড়ে ধীরে ধীরে পার হচ্ছিল। কিন্তু গতকাল ফেরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগ এখন চরমে পৌঁছেছে। আর যাত্রীদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। বিশেষ করে মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধ যাত্রীদের দুর্ভোগ ছিল চোখে পড়ার মতো। বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী (ড্রেজিং) আ.ফ.ম. মাশরিকুল আরেফিন জানিয়েছেন, চ্যানেলের মুখে ড্রেজার বসালেও ফেরি চলাচলের জন্য প্রায় ২ শত ফিট জায়গা রেখে ড্রেজার বসানো হয়েছে। সেখান দিয়ে ফেরি চলাচল করিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষও করা হয়েছে। ইচ্ছে করলে ফেরি সার্ভিস কর্তৃপক্ষ একটু সাবধানতার সঙ্গে ফেরি চালালে ফেরি সচল রাখা সম্ভব।
×