ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ইউএস ওপেনের চ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে প্যানপ্যাসিফিক ওপেনের শিরোপা জিতলেন চেক তারকা

ওসাকাকে থামালেন পিসকোভা

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 ওসাকাকে থামালেন পিসকোভা

জিএম মোস্তফা ॥ অবশেষে হেরে গেলেন নাওমি ওসাকা। টানা ১০ ম্যাচ জয়ের পর রবিবার প্যানপ্যাসিফিক ওপেনের ফাইনালে হেরে যান তিনি। জাপানের নাওমি ওসাকাকে হারিয়ে প্যানপ্যাসিফিক ওপেনের চ্যাম্পিয়ন হলেন ক্যারোলিন পিসকোভা। বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সাবেক নাম্বার ওয়ান পিসকোভা এদিন কঠিন লড়াইয়ের পর ৬-৪ এবং ৬-৪ গেমে পরাজিত করেন সদ্য সমাপ্ত ইউএস ওপেনের চ্যাম্পিয়ন নাওমি ওসাকাকে। সেই সঙ্গে ক্যারিয়ারের ১১তম শিরোপা জয়ের স্বাদ পান চেক প্রজাতন্ত্রের ক্যারোলিনা পিসকোভা। সম্প্রতি ইউএস ওপেনে চ্যাম্পিয়ন হয়েই বাজিমাত করেন নাওমি ওসাকা। ফাইনালে আমেরিকান টেনিসের জীবন্ত কিংবদন্তি সেরেনা উইলিয়ামসকে পরাজিত করে ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট জয়ের স্বাদ পান তিনি। শুধু তাই নয়, জাপানের ইতিহাসেই প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে কোন গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হন নাওমি ওসাকা। ইউএস ওপেন জয়ের পর প্যানপ্যাসিফিক ওপেনেই প্রথমবার খেলতে নামেন জাপানের এই বিশ বছরের তরুণী। শুরু থেকে খেলেনও দুর্দান্ত গতিতে। কিন্তু ফাইনালে এসেই জয়রথ থেমে গেল তার। ৬৩ মিনিট লড়াই করে তাকে হারিয়ে টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হন ক্যারোলিনা পিসকোভা। ম্যাচ শেষে দারুণ খুশি চেক তারকা। তবে সাবেক নাম্বার ওয়ান এই খেলোয়াড় সন্তুষ্ট ম্যাচটা তিন সেটে না গড়ানোয়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি খুব খুশি যে, ম্যাচটা তিন সেটে গড়ায়নি।’ ওসাকা এ সময় আরও বলেন, ‘আমার সার্ভই বড় অস্ত্র। তবে নাওমি সম্ভবত কিছুটা ক্লান্ত ছিল, আপনারাও তা দেখে থাকবেন। তবে তার ভবিষ্যত উজ্জ্বল। তাকে অভিনন্দন জানাই। শেষ কয়েকটা সপ্তাহ দুর্দান্ত কেটেছে তার।’ গত এপ্রিলে সর্বশেষ স্টুটগার্ট টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন ক্যারোলিনা পিসকোভা। এরপর গত গ্রীষ্মে দীর্ঘ সময়ের বয়ফ্রেন্ড মাইকেল হার্দলিকার সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন তিনি। বিয়ের পর এটাই তার প্রথম ট্রফি। ম্যাচের শেষে চেক তারকা কৌতুক করেই বলেন, ‘এ বছরের প্রথম শিরোপা জিতেছিলাম বিয়ের আগে। আমি খুব খুশি যে বিবাহিত মেয়ে হিসেবেও এখন আমার নামের পাশে একটা শিরোপা রয়েছে।’ এ সময় জাপানী তারকা আরও বলেন, ‘ওসাকার বিপক্ষে আমি কখনই ক্ষমতা প্রদর্শন করিনি। কারণ সে আমার চেয়েও বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন। তবে আমি ধৈর্য ধরেছি এবং অপেক্ষায় ছিলাম সুযোগের।’ গত বছরটা দুর্দান্ত কেটেছিল ক্যারোলিনা পিসকোভার। মেজর কোন শিরোপার স্বাদ পাননি তিনি। তারপরও ২০১৭ সালের জুলাইয়ে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর স্থানটি দখল করে নেন চেক প্রজাতন্ত্রের এই প্রতিভাবান খেলোয়াড়। এদিকে মৌসুমের শেষ মেজর টুর্নামেন্ট ইউএস ওপেনে বাজিমাত করে র‌্যাঙ্কিংয়ে অগ্রগতি হয় ওসাকারও। এক লাফে সপ্তম স্থানে উঠে আসেন তিনি। যে কারণেই প্যানপ্যাসিফিক ওপেনে ফেবারিটের তকমাটা গায়ে মাখানো ছিল তার। শুধু তাই নয় দুই বছর আগে এই টুর্নামেন্টের ফাইনালেও খেলেছিলেন তিনি। যে কারণে টেনিসবোদ্ধাদের ধারণা ছিল এবার সাম্প্রতিক পারফর্মেন্স আর অতীত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ঘরের মাঠের সমর্থকদের সামনে প্যানপ্যাসিফিক ওপেনের শিরোপা উঁচিয়ে ধরবেন তিনি। কিন্তু এবারও সেই স্বপ্নভঙ্গের বেদনা নিয়ে কোর্ট ছাড়তে হলো নাওমি ওসাকাকে। তবে ম্যাচের শেষে ওসাকা জানালেন কোর্টে খুব ক্লান্ত ছিলেন তিনি। এতটাই ক্লান্ত ছিলেন যে, ক্যারিয়ারে তেমনটা আর কখনই ছিলেন না তিনি। এ প্রসঙ্গে স্বাগতিক জাপানের এই খেলোয়াড় বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে আমার সমগ্র জীবনে এর আগে কখনই এতটা ক্লান্ত ছিলাম না।’ গত কয়েক বছর ধরেই টেনিস কোর্টে দেখা যাচ্ছে নবীন তারকাদের দাপট। বিশেষ করে পুয়ের্তো রিকোর মনিকা পুইগ, লাটভিয়ার জেলেনা ওস্টাপেঙ্কো, রোমানিয়ার সিমোনা হ্যালেপ, স্পেনের গারবিন মুগুরুজা কিংবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্লোয়ানে স্টিফেন্সের নাম উল্লেখযোগ্য। তবে তাদের পারফর্মেন্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে দেখা যায়নি। ইউএস ওপেনের চ্যাম্পিয়ন নাওমি ওসাকা পারবেন কতটুকু? টেনিসপ্রেমীদের অপেক্ষা এখন সেটাই দেখার।
×