ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাধারণ পরিষদের বার্ষিক সম্মেলনে সবার নজর থাকবে ট্রাম্পের দিকে

প্রাধান্য পাবে উত্তর কোরিয়া, ইরান

প্রকাশিত: ০৪:২২, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

প্রাধান্য পাবে উত্তর কোরিয়া, ইরান

চলতি সপ্তাহে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সমাবেশে উত্তর কোরিয়া এবং ইরান প্রাধান্য পাবে। এছাড়া বিশেষ করে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কূটনীতির অঙ্গনে তিনি কিছুটা পিছিয়ে পড়েছেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে। এএফপি। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে সম্পর্কে উষ্ণ করা এবং ইরানের সঙ্গে সম্পাদিত ছয় জাতি পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর মঙ্গলবার সাধারণ পরিষদে ভাষণ দিতে যাচ্ছেন ট্রাম্প। বুধবার পরমাণু ও ব্যাপক ধ্বংসাত্মক অস্ত্রের বিস্তার রোধ সম্পর্কিত নিরাপত্তা পরিষদের একটি অধিবেশনে তিনি প্রথমবারের মতো সভাপতিত্ব করবেন। স্পষ্টত এ অধিবেশনে মূল টার্গেট থাকবে ইরান। এতে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর সঙ্গে ট্রাম্পের বিরোধ বেধে যেতে পারে। জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি আশা করছেন এটি হবে নিরাপত্তা পরিষদের এ যাবতকালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক, যার প্রতি সবার দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকবে। উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়া এবং উত্তর কোরিয়ার দিক থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু হামলার ঝুঁকি দূর হওয়ার পর এবার সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনটি হচ্ছে। এক বছর আগেও এই অধিবেশন থেকে উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ভয়াবহ বাগযুদ্ধ লক্ষ্য করা গেছে। গত বছর অধিবেশনে ভাষণ দেয়ার সময় ট্রাম্প উত্তর কোরিয়াকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করার পাশাপাশি দেশটির নেতা কিম জং উনকে ‘সুইসাইড মিশনে থাকা রকেট মানব’ বলে অভিহিত করেন। জবাবে উন ট্রাম্পকে ‘মানসিক বিকারগ্রস্ত মার্কিন বুড়ো’ বলেছিলেন। তাই ট্রাম্পের এবারের ভাষণটি গত বছরের তুলনায় উত্তর কোরিয়ার বিষয়ে পুরোপুরি বিপরীত হবে বলে ধরে নেয়া যায়। কার্নেগি এনডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের উত্তর কোরিয়া ও ইরান বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সুজান ডিমাগিও বলছেন, ট্রাম্প যদি তার পরিকল্পনা মতো বলতে চান উত্তর কোরিয়া এর কোন পরমাণু হুমকি নয় তবে তাকে অন্তত দুবার ভাবতে হবে। এ বছর জুনে সিঙ্গাপুরে ট্রাম্প ও উনের মধ্যে বৈঠক হওয়া সত্ত্বেও পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের ক্ষেত্রে খুব সামান্যই অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পের অনুরোধক্রমে তার উত্তর কোরীয় প্রতিপক্ষ রি ইয়ং হো মূল অধিবেশনের পার্শ্ব আয়োজনে তার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। আগামী শনিবার হো তার নির্ধারিত ভাষণ দেবেন। উত্তর কোরিয়ার বিষয়ে কি দৃষ্টিভঙ্গিতে এগোবেন এ বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের কাছ থেকে ট্রাম্প বিপরীতমুখী বার্তা পাবেন বলে আশা করা যায়। ট্রাম্প যেন সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে অগ্রসর হন সেটি চাইবেন মুন জায়ে ইন। অন্যদিকে শিনজো আবে চেষ্টা করবেন ওয়াশিংটন যেন পিয়ংইয়ংয়ের ওপর চাপ বজায় রাখে। মঙ্গলবার ভাষণ দিয়ে ট্রাম্প বক্তৃতা মঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর সেখানে গিয়ে উপস্থিত হবেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। সাধারণ পরিষদে না হলেও নিরাপত্তা পরিষদে ইরানকে নিয়ে পরিষদের অন্য দেশগুলোর আপত্তির মুখে পড়তে পারেন ট্রাম্প। বিরোধ দেখা দিতে জাতিসংঘের সঙ্গেও। কারণ ট্রাম্প নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি মতো বিশ্ব সংস্থাটিকে দেয় অর্থের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে সিরিয়া, লিবিয়া ও ইয়েমেনে জাতিসংঘের শান্তি মিশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ছয়দিনের দীর্ঘ অধিবেশনে ১৩০ সরকার প্রধান বা তাদের প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন। রাশিয়া ও চীন কেবল পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের পাঠিয়েছে।
×